দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৫: শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু বলেছেন,গণতন্ত্রের নামে যারা পেট্রোলবোমা ছুঁড়ে ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে গণহত্যা চালিয়েছে, একাত্তরের গণহত্যাকারীদের মত তাদেরও বিচার হওয়া উচিত।বাংলাদেশকে নব্য পাকিস্তান বানানোর চক্রান্ত এখনো অব্যাহত রয়েছে, এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে যে অপশক্তি এদেশের উন্নয়নের চাকাকে পেছনের দিকে ঘুরিয়ে দিতে চেয়েছিলো, একই অপশক্তি এখনো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রাণনাশের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ অপশক্তির গণতন্ত্র হচ্ছে পেট্রোলবোমা ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে মানুষ হত্যা করা।
শিল্পমন্ত্রী শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বিজয়ের মাস উপলক্ষে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতি আয়োজিত রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন।আমির হোসেন আমু বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান মৈত্রীর বন্ধন রক্ত¯্রােত ও আত্মাহুতির মধ্য দিয়ে সূচিত হয়েছে। ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ বাঙালি শহীদের পাশাপাশি ১১ হাজার ভারতীয় সৈন্য রক্ত ও জীবন উৎসর্গ করেছিলো। মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকারের অকুণ্ঠ সমর্থন এবং ভারতীয় সেনাদের আত্মত্যাগকে বাংলাদেশের জনগণ চিরকাল গভীর কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ রাখবে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে একাত্তরে বাংলাদেশের হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রীস্টান-উপজাতিসহ সকল ধর্মাবলম্বী জনগণ এবং ভারতীয় সেনাদের সম্মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে।তিনি বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারত সরকার শুধু ১ কোটি শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়নি, পশ্চিমা হানাদার বাহিনীকে বিতাড়নের জন্য অস্ত্র ও প্রশিক্ষণসহ সর্বাত্মক সহায়তা দিয়েছে। এ সময় ভারতের সাধারণ জনগণ শরণার্থী বাঙালিকে নিজেদের অন্ন ভাগ করে খাইয়েছে। তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী দু’বার বিশ্বভ্রমণ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে জনমত সৃষ্টির পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন রক্ষায় কার্যকর অবদান রেখেছিলেন। বাংলাদেশের জনগণের চরম দুঃসময়ে ভারত সরকার ও জনগণ যে বন্ধুত্বের পরিচয় দিয়েছে, তা ইতিহাসের একটি বিরল ঘটনা।
আমির হোসেন আমু বলেন, ৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার মধ্য দিয়ে পরবর্তী সরকারগুলো এদেশের স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেনি বলেই তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকেই শুধু নির্বাসনে পাঠায়নি, ঐতিহাসিক মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি বাস্তবায়ন, সমুদ্রসীমানাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অমীমাংসিত রেখে দেয়।বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ. কে. আজাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মহাসচিব ও সাবেক সচিব বিএমএম মোজহারুল হক, ভারতীয় হাইকমিশনের প্রথম সচিব (রাজনৈতিক ও তথ্য) রাজেশ উইকি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসান উল্লাহ মনি ও মৈত্রী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুবীর কুশারী বক্তৃতা করেন।