DMC

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১০ ডিসেম্বর ২০১৫: রাজধানীর ওয়ারীর একটি মেসে রুমের ভেতর আগুন লাগিয়ে বাইরে থেকে তালা মেরে দৃর্বৃত্তদের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ সুমন মারা গেছেন।বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি মারা যান। তার শরীরের ৮৫ শতাংশই ঝলসে গিয়েছিল। চিকিৎসকরা জানান, তার শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। দগ্ধ অপর দুজনও বর্তমানে বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অগ্নিদগ্ধ তিনজনের সঙ্গে দেখা করেন গোয়েন্দা পুলিশের ওই দল। রোগীদের সাথে কথা বলেন তারা। এ ছাড়া রাজধানীর ওয়ারীর ওই মেসটি পরিদর্শন করে অপরাধ বিভাগের ওই দল। ঘটনার পর থেকে ওই মেসের বাসিন্দা মূল হোতা সোহাগ ও রাজিবকে খুঁজছে পুলিশ। অগ্নিদগ্ধ সুমন জানান, সোহাগ ও রাজীব পরিকল্পিতভাবে তাদের রুমে আগুন লাগিয়ে বাইরে থেকে তালা মেরে চলে যায়। তবে তাদের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিহাদ হোসেন বলেন, অভিযুক্ত সোহাগ ও রাজিবকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এখনও গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।ওয়ারীর নারিন্দা মোড়ের হা মীম রেস্তোরাঁর দ্বিতীয় তলায় একটি মেস বাড়িতে ভাড়া থাকত অগ্নিদগ্ধ এই তিনজন। সেখানেই এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। অগ্নিদগ্ধ অপর দুজন হলেন শহিদ (১৮) ও শাকিব (৩৫)। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। ঢামেক সূত্রে জানা যায়, অগ্নিদগ্ধ সুমন ও শহিদের শরীরের ৮৫ শতাংশই পুড়ে যায়। শাকিবের শরীরের ৩২ শতাংশ পুড়ে গেছে। তিনজনেরই শ্বাসনালী পুড়ে যায়।প্রাথমিকভাবে জানা যায়, অগ্নিদগ্ধ তিনজনই গাড়ির গ্যারেজে যানবাহন মেরামতের কাজ করত। বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে তাদের রুমের ভেতর কে বা কারা আগুন লাগিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে দুটি তালা মেরে পালিয়ে যায়। পরে তাদের আর্তচিৎকারে প্রতিবেশিরা ছুটে আসে। খবর পেয়ে পুলিশও ঘটনাস্থলে আসে। এরপর তালা ভেঙে তাদের উদ্ধার করে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে আইসিইউতে নেবার আগে অগ্নিদগ্ধ সুমন জানান, তিনি ওই গ্যারেজের মালিক। সোহাগ ও রাজিব নামে দুজন রুমের ভেতর আগুন লাগিয়ে তালা মেরে পালিয়েছে। তিনি জানান, সোহাগ ও রাজিব তার কাছে কাজ শিখত। তারা মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছিল। পুলিশ একবার ধরেও নিয়েছিল। পরে তাদের ছাড়িয়ে আনেন সুমন। বিভিন্ন সময় তারা সুমনের কাছে টাকাপয়সা চাইত। সুমনও অতিষ্ঠ হয়ে দিতেন। এসব নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়েছে। গতরাতে এ দুজন পরিকল্পনা করে রুমের ভেতর আগুন লাগিয়ে দেয়।ওয়ারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অগ্নিদগ্ধ তিনজন গাড়ির মেরামতের কাজ করে। একটি মেসে ভাড়া থাকত। রুমের তালা ভেঙে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে। বাইরে থেকে দুটি তালা লাগানো ছিল।তিনি আরো বলেন, দুষ্কৃতকারীরা রুমের ভেতরে আগুন লাগিয়ে তালা মেরে পালিয়ে গেছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। যারাই করুক আমরা তাদের খুঁজে বের করব।