news_1387305025monirul db_44328_65234

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৫ নভেম্বর ২০১৫: পূর্ব বিরোধের জের ধরে আইএস ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নামে লেখক-শিক্ষক-বুদ্ধিজীবী-রাজনীতিকদের হুমকি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম। বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।মঙ্গলবার রাতে আব্দুল হক (২৬) নামে এক ব্যক্তিকে রাজধানীর তেজগাঁও থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বিষয়টি জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম)মুনতাসিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ড. আনিসুজ্জামান, মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও মুনতাসীর মামুন এবং কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।পরে বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম আটককৃতের সম্পর্কে বিস্তারিত জানান। পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, আব্দুল হকের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলায়। তিনি জকিগঞ্জের শাহবাগ এলাকার জমিয়াতুল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক ছিলেন। তিনি দুশ্চরিত্রের মানুষ হিসেবে এলাকায় পরিচিত। চরিত্রহীন কার্মকাণ্ডের কারণে তাকে মাদ্রাসার চাকরি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

তিনি ফাইজুর রহমান, সালেহ আহমেদ ফুয়াদ ও মাওলানা সাদ উল্লাহ- এই তিন নাম ব্যবহার করে ফেসবুকে সক্রিয় ছিলেন। স্পুফিং (এক ঠিকানার বদলে গোপনে অন্য ঠিকানায় নিয়ে যাওয়া) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তিনি হুমকি দিয়ে আসছিলেন।ফাইজুর রহমান আইনের শিক্ষার্থী। সালেহ আহমেদ ফুয়াদ কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং মাওলানা সাদ উল্লাহ মাদাসারার ভাইস প্রিন্সিপ্যল। এদের সাথে আব্দুল হকের ব্যক্তিগত বিরোধ ছিল। তাদের ফাঁসানোর জন্য তিনি স্কুফিং করে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের হত্যার হুমকি দিতেন। বলেন মনিরুল ইসলাম।ডিএমপির এ গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, গত ২৯ সেপ্টেম্বর আব্দুল হক প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমানের মোবাইলে তাকে হত্যার হুমকি দেন।

তিনি জানান, এ ছাড়া আব্দুল হক হুমকি দিয়েছেন প্রফেসর এমিরেটাস ড. আনিসুজ্জামান, সাহিত্যিক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, মুনতাসীর মামুন, ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, রাজনীতিবিদ ও পেশাজীবীদের। তেজগাঁও থানায় আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারায় আটক আব্দুল হককে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। আইএস ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের নামে লেখক-শিক্ষক-বুদ্ধিজীবীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ঢাকায় এক ‘জামায়াত সমর্থককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) মুনতাসিরুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার রাতে তেজগাঁও এলাকা থেকে আব্দুল হক নামে ২৬ বছর বয়সী ওই তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি বলেন, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও মুনতাসির মামুন এবং কয়েকজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদদকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।পরে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মুনিরুল ইসলাম বলেন, ১৫৩ জনকে হুমকি দেওয়ার তথ্য নিয়ে পুলিশ অনুসন্ধানে নেমেছিল। সেই অনুসন্ধানেই সাবেক মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ১০ নভেম্বর মোবাইল এসএমএসে হত্যার হুমকি পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সেখানে বলা হয়, ব্লগারদের পক্ষে দাঁড়ালে তাকে চাপাতির আঘাতে মরতে হবে।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনিসুজ্জামান অসাম্প্রদায়িক চেতনায় লেখালেখিতে সব সময় সক্রিয়। হুমকি পাওয়ার পর ওইদিনই গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি।

এরপর গত ১৬ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেন, অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে যে নম্বর থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল, তার মালিককে আটক করেছিল পুলিশ। পরে তদন্তে দেখা যায়, ওই ব্যক্তি নির্দোষ। তার নম্বর ‘ক্লোন করে’ আরেকজন ওই হুমকি দিয়েছে।যে ব্যক্তি হুমকি দিয়েছিল তাকে শনাক্ত করা হলেও গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে সেদিন জানিয়েছিলেন তিনি।চলতি বছরের ফেব্র“য়ারি থেকে চারজন লেখক ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট খুন হওয়ার পর সম্প্রতি এক প্রকাশককেও হামলা চালিয়ে হত্যা করা হয়। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডই ঘটানো হয় চাপাতির আঘাতে। এসব হত্যাকাণ্ডে জঙ্গিদের সংশ্লিষ্টতার কথা পুলিশের তদন্তেও এসেছে।