inu3_91801_11755

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২২ নভেম্বর ২০১৫: সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদের বিচার আন্তর্জাতিক মানদণ্ডেই হয়েছে। আইনের সর্বোচ্চ সুযোগ দেয়া হয়েছে। তারা প্রাণভিক্ষার আবেদনও করেছে। এটি নিয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। রোববার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এ কথা বলেন।বিরোধীদলের রাজনীতিক নয়, অপরাধীর শাস্তি হয়েছে বলে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা যে অপরাধ করেছে সেই অপরাধের অভিযোগে তাদের বিচার করা হয়েছে। তিনি বলেন, সর্বোচ্চ আদালত সাকা-মুজাহিদের ফাঁসির রায় দিয়েছে। আদালতের রায় বাস্তবায়ন করা হয়েছে মাত্র।

ইনু বলেন, যারা বলছেন- বিরোধীদলের নেতাদের রাজনৈতিকভাবে দমনে এ বিচার করা হচ্ছে, তা সঠিক নয়। মনে রাখতে হবে তারা অপরাধী। এখানে রাজনীতি বিবেচ্য নয়। প্রকাশ্যে আদালতে তাদের বিচার হয়েছে। এটি কোনো গোপন বিচার ছিল না। এটা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোর সুযোগ নেই বলে তিনি জানান মন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতি দুই অপরাধী প্রাণভিক্ষা চাইলে তাদের ক্ষমতা করে দিতে পারেন। তবে বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে কিছু করতে পারেন না। সংবিধানের ৪৯ ধারা মোতাবেক তারা দুজনেই আবেদন করেছে। বর্তমান সরকার বিদেশি কোনো রাষ্ট্রের চাপ আমলে নেয় না বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, শনিবার দুপুরেই বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সাকার পরিবার, যাতে এ বিচারকে ত্রুটিপূর্ণ আখ্যায়িত করা হয়।এর প্রতিবিধান’ চেয়ে সাকা চৌধুরীর ছেলে রাষ্ট্রপতির কাছে একটি আবেদন নিয়ে গেলেও তা গ্রহণ না করে যথাযথ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আসতে বলা হয়। রাতে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রাষ্ট্রপতি ক্ষমার আবেদন নাকচ করেছেন এবং দণ্ড কার্যকরে কোনো বাধা নেই।ফাঁসি কার্যকরের আগে রাতে কারাগারে সাকা চৌধুরীর সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে এসে হুম্মাম সাংবাদিকদের বলেন, বাবাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, তুমি কি মার্সি পিটিশন করেছ? তিনি বলেছেন, এরকম বাজে কথা কে বলেছে?’ রোববার সকালে সাকা চৌধুরীকে চট্টগ্রামের রাউজানে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করার পর আবারও এ বিষয়ে কথা বলেন হুম্মাম।

আমাদের বারবার বলা হয়েছে- সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী প্রাণ ভিক্ষা চেয়েছে। যাকে বাংলার মানুষ বাঘ হিসেবে চেনে তিনি মাথা নত করতে পারেন না। কাল যখন বাবার সাথে কথা হয়। তখন তিনি বলেন, তোমার ৬ ফুট ২ ইঞ্চি লম্বা বাবা বাঘ, তিনি মাথা নত করতে পারে না।এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন,ক্ষমা না চাইলে আমরা যাব কেন? কয়েক ঘণ্টা ধরে এ মন্ত্রণালয়, সে মন্ত্রণালয় গেলাম, না চাইলে যাব কেন?তিনি বলেন, আমরা ধরেই নিয়েছিলাম তারা ক্ষমা চাইবেন না। কিন্তু সকালের দিকে মুজাহিদ সাহেব যে আবেদন দিলেন তার শিরোনামেই আর্টিকেল ফর্টিনাইনের কথা ছিল। আর সালাউদ্দিন কাদের আবেদন করেছেন ইংরেজিতে। সেখানেও শেষ দিকে আর্টিকেল ফর্টিনাইনের কথা আছে।

বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের অধিকার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত যে কোনো দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করিবার এবং যে কোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করিবার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকিবে ।আবেদন দুটি প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হলে রাষ্ট্রপতি তা নাকচ করে দেন বলে জানান কামাল।তাহলে সাকার পরিবার কেন সন্দেহ প্রকাশ করছে- এমন প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের হয়তো নলেজের অভাব ছিল। আবেদন তো আমাদের কাছে এসেছে। তাদের জানার কথা নয়।দুই যুদ্ধাপরাধী যে আবেদন করেছেন, তার প্রমাণ সরকারের হাতে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারা (পরিবার) বললে তো হবে না। কারণ আমাদের কাছে চিঠিপত্র রয়েছে, প্রমাণ রয়েছে। তাদের লিখিত অ্যাপ্লিকেশন আমাদের হাতে রয়েছে। সেই অ্যাপ্লিকেশনের যৌক্তিকতা আছে কি না এবং অ্যাপ্লিকেশন যথার্থ হয়েছে কি না সে ব্যাপারে আইনমন্ত্রী মহোদয়ের ওপিনিয়ন নিয়েই আমরা বাকি কাজ করেছি। কাজেই এখানে আর কথা বলার অবকাশ নেই।