দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২২ নভেম্বর ২০১৫: জয়ের জন্য করতে হবে ১৮৮ রান। টি২০ ক্রিকেট এমন টার্গেট বেশ দুরুহ। আর এমন লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বিপিএলের উদ্বোধনী ম্যাচে শুরুতেই বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছিল রংপুর রাইডার্স।রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে খেলা শুরু হয় দুপুর দুইটায়।দলীয় ২৩ রানের মধ্যেই চার উইকেট হারিয়ে কাঁপতে থাকে সাকিব শিবির। তবে শেষ পর্যন্ত রংপুরই জয়ী। মিসবাহ, চিগুম্বুরা, সামি ও সানিদের ব্যাটিং নৈপুণ্যে চিটাগং ভাইকিংসের বিরুদ্ধে দুই উইকেটের দারুণ এক নাটকীয় জয় পেয়েছে রংপুর রাইডার্স।আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৮৭ রানের বিশাল স্কোর সংগ্রহ করে চিটাগং ভাইকিংস।
জবাবে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৮৮ রান সংগ্রহ করে রংপুর রাইডার্স। সাকিব বাহিনী পায় দুই উইকেটের রুদ্ধশ্বাস জয়।অথচ জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে রংপুরের অবস্থা ছিল শোচনীয়। চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে বল হাতে শুরুতেই নিজের নামের সুবিচার করেন পাকিস্তানী ফাস্ট বোলার মোহাম্মদ আমির। প্রথম ওভারেই মেডেন। রান দেননি একটিও। তবে দ্বিতীয় ওভারে তাসকিনকে পিটিয়ে রানের চাকা সচল করেন রংপুর ওপেনার সৌম্য সরকার।তবে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে এসেই ঝড় তোলেন আমির। মাত্র পাঁচ রান দিয়ে তুলে নেন দুটি উইকেট। সাজঘরে ফেরেন দুই ওপেনার সিমন্স (১) ও সৌম্য (২০)। দলীয় রান তখন ২২।এরপর কোন রান যোগ না হতেই তাসকিনের আঘাত। তার বলে এলবিডব্লিউর শিকার শূণ্য রান করা মোহাম্মদ মিথুন। অন্যতম ভরসাস্থল সাকিবও ব্যাট হাতে পারেননি কিছু করে দেখাতে। মাত্র ১ রান করে শফিউলের বলে এনামুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন রংপুর অধিনায়ক।তবে এরপর শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করেন রংপুরের দুই বিদেশী। পাকিস্তানের মিসবাহ ও জিম্বাবুয়ের চিগুম্বুরার ব্যাটে আশার সলতে জ্বলে উঠে রংপুরের। পঞ্চম উইকেট জুটিতে তারা সংগ্রহ করে ৬৪ রান। শেষ পর্যন্ত এই উইকেটে ভাঙ্গন ধরান আল আমিন। সরাসরি বোল্ড করেন ৩৭ রান করা চিগুম্বুরাকে।
চিগুম্বুরা বিদায় নিলেও হতাশ হননি মিসবাহ। লংকান ব্যাটসম্যান থিসারা পেরেইরাকে নিয়ে আবারো দারুণ এক জুটি গড়েন মিসবাহ। ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ৮০ রান। দলীয় রান তখন ১৬৭। জয়ের খুব কাছাকাছি রংপুর। তবে এরপরই দৃশ্যপটে আবির্ভাব আবারো আমিরের। নিজের শেষ ওভারে তুলে নেন মিসবাহ ও পেরেইরাকে। ৬১ রান করা মিসবাহ হন বোল্ড। আর পেরেইরা ক্যাচ দেন মেন্ডিজের হাতে। ম্যাচ তখন চিটাগংয়ের হাতে। আমির ঝলকানিতে জয়ের আশায় তামিম শিবির। কিন্তু শেষটা মধুর হয়নি। শেষ ওভার করতে আসেন চিটাগংয়ের শফিউল। ৬ বলে দরকার ১৪ রান। প্রথম বলে রান হয়নি। তবে দ্বিতীয় বলেই ছক্কা হাকান ড্যারেন সামি। তৃতীয় বলে চার। চতুর্থ বলে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হন সামি (১৮ রান, সাত বলে)। তবে স্কোর তখন সমান ১৮৭।
শেষ বলে স্ট্রেইটে ঠেলে দিয়ে দলের জয় সুনিশ্চিত করেন আরাফাত সানি। সত্যিই কী দারুণ জয়। বিপিএলের শুরুটা হলো বেশ রোমাঞ্চকর। অনুমিতভাবেই ম্যাচ সেরা হয়েছে রংপুরের জয়ের কারিগর পাকিস্তানের মিসবাহ উল হক। ৬১ রান সঙ্গে দুটি দারুণ পার্টনারশিপই রংপুরকে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছে দিয়েছে। তবে কপাল খারাপ পাকিস্তানী পেসার মোহাম্মদ আমির। জিতলে চিটাগংয়ের হয়ে তিনিই হতে হিরো। চার ওভারে ৩০ রানে চার উইকেট নিলেও কিছুটা হতাশ আমির।