দৈনিকবার্তা- নারায়ণগঞ্জ, ১৩ নভেম্বর, ২০১৫ : এক সময়ে দাপটশালী ছিলেন নূর হোসেন। ধরাকে সরা জ্ঞান করতেন তিনি। শুক্রবার তাকে যখন নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয় তখন জুতা নিক্ষেপ করে নিহতের স্বজনরা। তবে গাড়িতে থাকায় ওই জুতা তার গায়ে গিয়ে পড়েনি। ওই সময়ও নূর হোসেনকে হাসিমুখেই দেখা গেছে।এর আগে দুপুর আড়াইটায় নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সহিদুল ইসলামের আদালতে নূর হোসেনকে হাজির করানো হয়। এর মধ্যে বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের মামলায় দণ্ডডপ্রাপ্ত নূর হোসেনকে ১১টি মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়।শুনানী শেষে বিচারক নূর হোসেনকে জেলহাজাতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে কঠোর প্রহরায় তাকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে তাকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে থেকে জানিয়েছেন, বিকেল ৪টা ১২মিনিটে কড়া নিরাপত্তায় নূর হোসেনকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।এর আগে বিকেল ৪টার কিছু আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশে রওয়ানা দেয় পুলিশ।আদালতে নূর হোসেনকে হাজির করানোর সময় নূর হোসেনের পরনে ছিল খাকি রঙয়ের প্যান্ট ও সাদা-কালো স্ট্রাইপের গেঞ্জি। বাম হাতে ছিল নীল রঙয়ের একটি ঘড়ি। এদিকে নূর হোসেনকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি। তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি ছিল নূর হোসেনকে আবারও নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদ করে চার্জশিট দেয়া হউক। তাহলে অনেক কিছু পরিস্কার হয়ে যাবে। কিন্তু নূরের চেহারা দেখে আমাদের কিছু ভয় কাজ করছে। কারণ নূরকে আদালতে নেয়া-আনার সময়ও হাসতে দেখা গেছে।
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়েছে।শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে তাকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে থেকে জানিয়েছেন, বিকেল ৪টা ১২মিনিটে কড়া নিরাপত্তায় নূর হোসেনকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।এর আগে বিকেল ৪টার কিছু আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশে রওয়ানা দেয় পুলিশ।দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজির করা হলে নূর হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম শহিদুল ইসলাম। শুক্রবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে নূর হোসেনকে আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।এর আগে বেলা আড়াইটার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নূর হোসেনকে জেলা পুলিশ লাইনস থেকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসব মামলার সবগুলোতেই অভিযোগপত্র হওয়ায় তাকে রিমান্ডে নেওয়ার সুযোগ ছিল না। নূর হোসেনের জামিনের জন্যও কোনো আবেদন করেননি কোনো আইনজীবী।সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি নূর হোসেনকে শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে যখন মাসদাইর পুলিশ লাইনস থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে নিয়ে আসা হয়, সে সময় তার ফাঁসির দাবিতে বাইরে বিক্ষোভ করছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। গত বছর মে মাসে সাত খুনের ঘটনায় নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ অন্যদের স্বজনরাও সকাল থেকে অপেক্ষায় ছিলেন আদালত চত্বরে। তাদের প্রত্যাশা ছিল, রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে নূর হোসেনের মুখ থেকেই সাত খুনের পেছনে ‘আসল ঘটনা’ উদঘাটন করা হোক। নূর হোসেনকে আদালতে আনার আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন কয়েকশ সংবাদকর্মী। আদালতে তোলার নয় মিনিটের মধ্যে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন এবং এরপর সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাসে করে নূর হোসেনকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।রাজধানী ঢাকার র্যাব-১-এর সদর দপ্তর থেকে শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে তাঁকে নারায়ণগঞ্জে নেওয়া হয়।এর আগে র্যাব-১-এর কার্যালয় েেথকে নূর হোসেনকে নিয়ে র্যাব-পুলিশের একটি গাড়িবহর নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়। পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সাইনবোর্ড এলাকায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন নূর হোসেনকে গ্রহণ করে ওই গাড়িবহরসহ জেলা পুলিশ লাইনসে যান।
ওই গাড়িবহরের মধ্যে একটি সাদা রঙের প্রাইভেট কারে করে নূর হোসেনকে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সাত খুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ তাঁর সঙ্গে ছিলেন।এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে নূর হোসেনকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। পরে র্যাব-পুলিশ তাঁকে ঢাকায় নিয়ে আসে। গত বুধবার বাংলাদেশের কারাগারে আটক উলফা নেতা অনুপ চেটিয়াকে দুই সঙ্গীসহ ভারতে ফেরত পাঠানো হয়।জানতে চাইলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, রাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) নূর হোসেনকে বিজিবির হাতে তুলে দেয়।গত বছরের ২৭ এপ্রিল সাত খুনের পরে ভারতে পালিয়ে যান নূর হোসেন। ওই বছরের ১৪ জুন কলকাতার বাগুইআটিতে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে অবস্থানের কারণে মামলা হয়। গত মাসে ভারত সরকার সেই মামলা প্রত্যাহার করে নিলে নূর হোসেনের দেশে ফেরার পথ সুগম হয়।বৃহস্পতিবার ভারতের স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কলকাতার দমদম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে নূর হোসেনকে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কর্মকর্তারা তাঁর নামে একটি পারমিট ইস্যু করে সেখানকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাহায্যে কঠোর নিরাপত্তায় নূর হোসেনকে যশোরের বেনাপোলে নিয়ে যান।এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) খন্দকার মহিদ উদ্দিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বলেন, নূর হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতের জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে পুলিশের একটি দল যশোরের বেনাপোলে গেছে।নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় প্রধান আসামি নূর হোসেনকে শুক্রবার জুমার নামাজের পরে আদালতে হাজির করা বলা হলেও সকাল থেকেই অপেক্ষা করছেন ওই ঘটনায় নিহতের পরিবারের স্বজনেরা। সকাল ৮টায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নূর হোসেনকে নারায়ণগঞ্জে এনে তাকে পুলিশ লাইনে রাখা হয়। সেই থেকে ওই ঘটনায় নিহত পরিবারের স্বজনরা একে একে ভিড় করতে থাকেন আদালতপাড়ায়। কখন নূর হোসেনকে নিয়ে আসা হবে, কখন নূর হোসেনের মুখ থেকে বের হবে হত্যাকাহিনী সেজন্য অপেক্ষায় তারা।সকাল ৮টায় সোনারগাঁ বারদী এলাকা থেকে ছুটে আসেন ওই ঘটনায় নিহত অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের গাড়িচালক ইব্রাহিমের বাবা ও মা। ওইসময় ইব্রাহিমের বাবা ওহাব মিয়া জানান, ইব্রাহিমের সঙ্গে সোনারগাঁ এলাকার আনু ও শিমড়াইল এলাকার মজিবুর নামের দুইজনের বিরোধ ছিল। তারা চেষ্টা করেছিল তাদের জমি দখলে নিতে। এর বিরোধিতা করার কারণেই ছেলে ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা করে। পরে অ্যাডভোকেট চন্দন সরকার ওইসব মামলায় ইব্রাহিমকে জামিন করায়।
ওহাব মিয়ার দাবি করেন, যে কোনো মূল্যে নূর হোসেনের কণ্ঠে যাতে প্রকৃত ঘটনা উঠে আসে সেজন্য প্রশাসন ও সরকার যেন কাজ করে।তার ঠিক ৩ ঘণ্টা পর সকাল ১১টায় আদালতে উপস্থিত হন নিহত কাউন্সিলর নজর“ল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও শ্বশুর শহীদুল ইসলাম। ওইসময় তারা নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুনের ঘটনার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে নতুন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে নতুন করে অভিযোগপত্র দেওয়ার দাবি জানান। শহীদুল ইসলাম বলেন, আমাদের দাবি নূর হোসেনকে আবারও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। কারণ নূর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ না করেই চার্জশিট দিয়েছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দিয়েছি। নিম্ন আদালতে আমরা সুবিচার পাইনি। তাই উচ্চ আদালতে যাব। কারণ যাদেরকে এজাহার করেছিলাম তাদেরকে অভিযোগপত্রে নাম দেওয়া হয়নি।অন্যদিকে সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, ‘আমাদের দাবি নূরকে রিমান্ডে নিয়ে আরো তথ্য বের করা হোক।তার কিছুক্ষণ পর উপস্থিত হন সাত খুনের ঘটনায় নিহত স্বপনের গাড়িচালক তাজুল ইসলামের বাবা আবুল খায়ের। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনিও নূর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি জানান।এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে বেনাপোল সীমান্ত থেকে র্যাবের কাছে নূর হোসেনকে হস্তান্তর করে ভারতের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। রাতেই তাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে র্যাবের একটি দল। শুক্রবার সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে তাকে নিয়ে র্যাব-১ কার্যালয়ে পৌঁছে দলটি।
নারায়ণগঞ্জ,১৩নভেম্বর,ফোকাস বাংলা নিউজ:এক সময়ে দাপটশালী ছিলেন নূর হোসেন। ধরাকে সরা জ্ঞান করতেন তিনি। শুক্রবার তাকে যখন নারায়ণগঞ্জ আদালতে আনা হয় তখন জুতা নিক্ষেপ করে নিহতের স্বজনরা। তবে গাড়িতে থাকায় ওই জুতা তার গায়ে গিয়ে পড়েনি। ওই সময়ও নূর হোসেনকে হাসিমুখেই দেখা গেছে।এর আগে দুপুর আড়াইটায় নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সহিদুল ইসলামের আদালতে নূর হোসেনকে হাজির করানো হয়। এর মধ্যে বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের মামলায় দণ্ডডপ্রাপ্ত নূর হোসেনকে ১১টি মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়।শুনানী শেষে বিচারক নূর হোসেনকে জেলহাজাতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে কঠোর প্রহরায় তাকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। পরে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে তাকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে থেকে জানিয়েছেন, বিকেল ৪টা ১২মিনিটে কড়া নিরাপত্তায় নূর হোসেনকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।এর আগে বিকেল ৪টার কিছু আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশে রওয়ানা দেয় পুলিশ।আদালতে নূর হোসেনকে হাজির করানোর সময় নূর হোসেনের পরনে ছিল খাকি রঙয়ের প্যান্ট ও সাদা-কালো স্ট্রাইপের গেঞ্জি। বাম হাতে ছিল নীল রঙয়ের একটি ঘড়ি। এদিকে নূর হোসেনকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি। তিনি বলেন, ‘আমাদের দাবি ছিল নূর হোসেনকে আবারও নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদ করে চার্জশিট দেয়া হউক। তাহলে অনেক কিছু পরিস্কার হয়ে যাবে। কিন্তু নূরের চেহারা দেখে আমাদের কিছু ভয় কাজ করছে। কারণ নূরকে আদালতে নেয়া-আনার সময়ও হাসতে দেখা গেছে।
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়েছে।শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে তাকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে থেকে জানিয়েছেন, বিকেল ৪টা ১২মিনিটে কড়া নিরাপত্তায় নূর হোসেনকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে আসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।এর আগে বিকেল ৪টার কিছু আগে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশে রওয়ানা দেয় পুলিশ।দুপুরে নারায়ণগঞ্জ আদালতে হাজির করা হলে নূর হোসেনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম শহিদুল ইসলাম। শুক্রবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে নূর হোসেনকে আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।এর আগে বেলা আড়াইটার দিকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নূর হোসেনকে জেলা পুলিশ লাইনস থেকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এসব মামলার সবগুলোতেই অভিযোগপত্র হওয়ায় তাকে রিমান্ডে নেওয়ার সুযোগ ছিল না। নূর হোসেনের জামিনের জন্যও কোনো আবেদন করেননি কোনো আইনজীবী।সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি নূর হোসেনকে শুক্রবার বেলা আড়াইটার দিকে যখন মাসদাইর পুলিশ লাইনস থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে নিয়ে আসা হয়, সে সময় তার ফাঁসির দাবিতে বাইরে বিক্ষোভ করছিলেন কয়েক হাজার মানুষ। গত বছর মে মাসে সাত খুনের ঘটনায় নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ অন্যদের স্বজনরাও সকাল থেকে অপেক্ষায় ছিলেন আদালত চত্বরে। তাদের প্রত্যাশা ছিল, রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে নূর হোসেনের মুখ থেকেই সাত খুনের পেছনে ‘আসল ঘটনা’ উদঘাটন করা হোক। নূর হোসেনকে আদালতে আনার আগে থেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন কয়েকশ সংবাদকর্মী। আদালতে তোলার নয় মিনিটের মধ্যে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন এবং এরপর সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাসে করে নূর হোসেনকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।রাজধানী ঢাকার র্যাব-১-এর সদর দপ্তর থেকে শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে তাঁকে নারায়ণগঞ্জে নেওয়া হয়।এর আগে র্যাব-১-এর কার্যালয় েেথকে নূর হোসেনকে নিয়ে র্যাব-পুলিশের একটি গাড়িবহর নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়। পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সাইনবোর্ড এলাকায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন নূর হোসেনকে গ্রহণ করে ওই গাড়িবহরসহ জেলা পুলিশ লাইনসে যান।
ওই গাড়িবহরের মধ্যে একটি সাদা রঙের প্রাইভেট কারে করে নূর হোসেনকে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সাত খুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ তাঁর সঙ্গে ছিলেন।এর আগে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে নূর হোসেনকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। পরে র্যাব-পুলিশ তাঁকে ঢাকায় নিয়ে আসে। গত বুধবার বাংলাদেশের কারাগারে আটক উলফা নেতা অনুপ চেটিয়াকে দুই সঙ্গীসহ ভারতে ফেরত পাঠানো হয়।জানতে চাইলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, রাতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) নূর হোসেনকে বিজিবির হাতে তুলে দেয়।গত বছরের ২৭ এপ্রিল সাত খুনের পরে ভারতে পালিয়ে যান নূর হোসেন। ওই বছরের ১৪ জুন কলকাতার বাগুইআটিতে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ভারতে অবস্থানের কারণে মামলা হয়। গত মাসে ভারত সরকার সেই মামলা প্রত্যাহার করে নিলে নূর হোসেনের দেশে ফেরার পথ সুগম হয়।বৃহস্পতিবার ভারতের স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কলকাতার দমদম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে নূর হোসেনকে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কর্মকর্তারা তাঁর নামে একটি পারমিট ইস্যু করে সেখানকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাহায্যে কঠোর নিরাপত্তায় নূর হোসেনকে যশোরের বেনাপোলে নিয়ে যান।এদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) খন্দকার মহিদ উদ্দিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বলেন, নূর হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতের জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা নিয়ে পুলিশের একটি দল যশোরের বেনাপোলে গেছে।নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় প্রধান আসামি নূর হোসেনকে শুক্রবার জুমার নামাজের পরে আদালতে হাজির করা বলা হলেও সকাল থেকেই অপেক্ষা করছেন ওই ঘটনায় নিহতের পরিবারের স্বজনেরা। সকাল ৮টায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নূর হোসেনকে নারায়ণগঞ্জে এনে তাকে পুলিশ লাইনে রাখা হয়। সেই থেকে ওই ঘটনায় নিহত পরিবারের স্বজনরা একে একে ভিড় করতে থাকেন আদালতপাড়ায়। কখন নূর হোসেনকে নিয়ে আসা হবে, কখন নূর হোসেনের মুখ থেকে বের হবে হত্যাকাহিনী সেজন্য অপেক্ষায় তারা।সকাল ৮টায় সোনারগাঁ বারদী এলাকা থেকে ছুটে আসেন ওই ঘটনায় নিহত অ্যাডভোকেট চন্দন সরকারের গাড়িচালক ইব্রাহিমের বাবা ও মা। ওইসময় ইব্রাহিমের বাবা ওহাব মিয়া জানান, ইব্রাহিমের সঙ্গে সোনারগাঁ এলাকার আনু ও শিমড়াইল এলাকার মজিবুর নামের দুইজনের বিরোধ ছিল। তারা চেষ্টা করেছিল তাদের জমি দখলে নিতে। এর বিরোধিতা করার কারণেই ছেলে ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা করে। পরে অ্যাডভোকেট চন্দন সরকার ওইসব মামলায় ইব্রাহিমকে জামিন করায়।
ওহাব মিয়ার দাবি করেন, যে কোনো মূল্যে নূর হোসেনের কণ্ঠে যাতে প্রকৃত ঘটনা উঠে আসে সেজন্য প্রশাসন ও সরকার যেন কাজ করে।তার ঠিক ৩ ঘণ্টা পর সকাল ১১টায় আদালতে উপস্থিত হন নিহত কাউন্সিলর নজর“ল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও শ্বশুর শহীদুল ইসলাম। ওইসময় তারা নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সাত খুনের ঘটনার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে নতুন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে নতুন করে অভিযোগপত্র দেওয়ার দাবি জানান। শহীদুল ইসলাম বলেন, আমাদের দাবি নূর হোসেনকে আবারও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। কারণ নূর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ না করেই চার্জশিট দিয়েছে। আমরা এর বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি দিয়েছি। নিম্ন আদালতে আমরা সুবিচার পাইনি। তাই উচ্চ আদালতে যাব। কারণ যাদেরকে এজাহার করেছিলাম তাদেরকে অভিযোগপত্রে নাম দেওয়া হয়নি।অন্যদিকে সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, ‘আমাদের দাবি নূরকে রিমান্ডে নিয়ে আরো তথ্য বের করা হোক।তার কিছুক্ষণ পর উপস্থিত হন সাত খুনের ঘটনায় নিহত স্বপনের গাড়িচালক তাজুল ইসলামের বাবা আবুল খায়ের। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনিও নূর হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার দাবি জানান।এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে বেনাপোল সীমান্ত থেকে র্যাবের কাছে নূর হোসেনকে হস্তান্তর করে ভারতের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। রাতেই তাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে র্যাবের একটি দল। শুক্রবার সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে তাকে নিয়ে র্যাব-১ কার্যালয়ে পৌঁছে দলটি।