দৈনিকবার্তা- নারায়ণগঞ্জ, ১৩ নভেম্বর, ২০১৫ : ৭ খুনের মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেনকে আজ শুক্রবার নারায়ণগঞ্জে নিয়ে আসা হয়েছে। বিপুল সংখ্যক র্যাব ও পুলিশের প্রহরায় সকাল আটটা দশ মিনিটে তাকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড দিয়ে জেলা পুলিশ লাইনে নেয়া হয়। নূর হোসেনকে আদালতে নিয়ে আসা উপলক্ষে শুক্রবার ভোর থেকে আদালতপাড়াসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পয়েন্টে বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান নেয়। বৃহস্পতিবার রাতে যশোরের বেনাপোলের পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে নূর হোসেনকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে ভারত। পরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তাকে র্যাব হেফাজতে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোডের ফতুল্লার শিবু মার্কেট এলাকা থেকে কাউন্সিলর নজরুল ইসলামসহ ৭ জনকে অপহরণের তিন দিন পর ৩০ এপ্রিল তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি বাদী হয়ে একটি ও আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
এই ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শাহাজান আলী মোল্লার নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে হাইকোর্টের নির্দেশে র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা লে. কর্ণেল তারেক সাঈদ, মেজর আরিফ হোসেন ও লে. কমান্ডার এম এম রানাকে চাকরিচ্যুত করে তাদেরকে এই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে এই সাবেক তিন কর্মকর্তা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। এই ঘটনায় পুলিশ র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২২ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। দীর্ঘ এক বছর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত শেষে সেলিনা ইসলামের মামলার এজাহারভুক্ত ৫ আসামী(সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রাজু, ঠিকাদার হাসমত আলী হাসু, বিএনপি নেতা ও জমি ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন, সদ্য আওয়ামী লীগে যোগদানকারী আনোয়ার হোসেন আশিক)কে বাদ দিয়ে র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তা ও নূর হোসেনসহ ৩৫ আসামীকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এই ঘটনায় একটি মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি আদালতে না রাজী পিটিশন দাখিল করলে তা খারিজ করে দিলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা দায়ের করা হলে গত ৯ নভেম্বর তা খারিজ করে দেয় আদালত। অপর একটি মামলা বিজয় কুমার পালের দায়ের করা মামলাটি বিচার কাজ শুরু করার জন্য জজ কোর্ট আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে র্যাবের সাবেক তিন কর্মকর্তাসহ ২২ জন কারাগারে আটক রয়েছে। র্যাবের ৮ সদস্যসহ মোট ১৩ জন পলাতক রয়েছে। পলাতক আসামীদের গ্রেপ্তারে আদালত পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গ্রেপ্তারী পরোয়ানা জারী করেছে।