Gazipur-(4)- 13 November 2015-Skeleton Recover-2

দৈনিকবার্তা- গাজীপুর, ১৩ নভেম্বর, ২০১৫ :  পরকীয়ার জেরে গাজীপুরে হত্যাকান্ডের দেড় বছর পর পরিত্যক্ত ডোবা থেকে শুক্রবার এক ব্যক্তির মরদেহের কংকাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নান্নু শেখ (৪০) নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে মাদারীপুর জেলা সদর থানার পাচখোলা গ্রামের মৃত আইয়ুব আলী শেখ’র ছেলে।

জয়দেবপুর থানার এসআই সৈয়দ আবুল হাসেম জানান, মাদারীপুর জেলা সদর থানার পাচখোলা গ্রামের নান্নু শেখের স্ত্রী ৪ সন্তানের জননী রেবা বেগমের (৪০) সঙ্গে পার্শ্ববর্তী গ্রামের আঃ জব্বার খালাসির ছেলে বোরহান খালাসি পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে গত বছরের প্রথম দিকে বোরহান খালাসির সঙ্গে রেবা বেগম বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গাজীপুরে চলে আসে। তারা গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকায় ফজলুল হকের বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস করতে থাকে। গাজীপুরে তারা দুই জনেই দিন মুজুরের কাজ করতো। কিছু দিন পর তাদের মধ্যে কলহ বাধলে রেবা বেগম তার পূর্বের স্বামী নান্নু শেখকে খবর দেয় যে তারা গাজীপুরের সালনায় বসবাস করছে। তাকে গাজীপুর থেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য নান্নুকে গাজীপুরে আসতে বলে। এতে নান্নু শেখ তার সহযোগিদের নিয়ে গত বছর ২৮ এপ্রিল রাতে গাজীপুরের দক্ষিণ সালনা এলাকায় ফজলুল হকের ভাড়া বাসায় আসে। এ সময় কৌশলে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে বোরহান খালাসিকে হত্যা করে নান্নু শেখ। হত্যার পর বোরহান খালাসির বুকে-পিঠে ইট ও ইটের খোয়া ভর্তি বস্তা বেধে পার্শ্ববর্তী মুন্নি লালের পরিত্যাক্ত ডোবায় ডুবিয়ে রাখে মরদেহ। ঘটনার পর ঐ রাতেই নান্নু শেখ ও রেবা বেগম বাসা ছেড়ে পালিয়ে যায়।

ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, প্রায় দেড় বছর পর নান্নু শেখ তাদের গ্রামের বাড়িতে গেলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে তার স্ত্রী রেবা এবং বোরহান খালাসির সন্ধান চায়। স্থানীয়রা তাকে মারধর করলে সে বোরহান খালাসিকে হত্যা করার কথা জানায়। এ ঘটনায় স্থানীয়রা তাকে মাদারীপুর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। পুলিশ তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করেন। এর প্রেক্ষিতে নিহতের ভাগিনা আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে গত ১১ অক্টোবর গাজীপুর আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ১৫ অক্টোরব জয়দেবপুর থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়। পরে পুলিশ আদালতের মাধ্যমে নান্নু শেখকে মাদারীপুর থেকে গাজীপুরে নিয়ে আসে এবং এ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখায়। পুলিশ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে গাজীপুর আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে পুলিশের কাছে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে নান্নু শেখ। শুক্রবার পুলিশ তাকে নিয়ে গাজীপুর মহানগরীর দক্ষিণ সালনা এলাকার ফজলুল হকের বাড়ি সংলগ্ন মুন্নি লালের পরিত্যাক্ত পুকুরে অভিযান পরিচালনা করে। পুলিশ পুকুরটি সেচে কাঁদার মধ্য থেকে শুক্রবার বিকেলে বোরহান খালাসির কংকাল উদ্ধার করে। জয়দেবপুর থানার ওসি খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা জানান, এ হত্যাকান্ডের সঙ্গে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত নান্নু শেখের স্ত্রী রেবা বেগমকে গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে।