দৈনিকবার্তা-ঠাকুরগাঁও, ১০ নভেম্বর ২০১৫: প্রভাবশালী মহল কর্তৃক ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের বরুনাগাঁও বাসিয়া দেবী গ্রামের একটি সংখ্যালঘু পরিবারের পৈত্রিক সম্পত্তি জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ করেন বিপিন বর্মন।
অভিযোগে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালন্দর ইউনিয়নের বরুনাগাঁও বাসিয়া দেবী গ্রামে এসএ-৪০৮ ও এসএ-১৬৯ খতিয়ানভুক্ত ৩৩৬৬ ও ৩৩৬৭ নম্বর দাগের ১শ ২২ শতক জমি পৈত্রিক সূত্রে দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ ভোগদখল করে আসছেন বিপিন বর্মন। উক্ত জমিতে বিভিন্ন ধরনের শস্য চাষাবাদ করে আসছিলেন তিনি। এদিকে গত ১২ নভেম্বর স্থানীয় প্রভাবশালী আসাদুল ইসলাম ওই সংখ্যালঘু পরিবারকে জমি ছেড়ে দেয়ার জন্য বিভিন্ন প্রকার হুমকি দেয়। এতে ওই সংঘ্যালঘু পরিবার স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেন। পরে বিপিন বর্মন ঠাকুরগাঁও সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে একটি মামলা দায়ের করে। এছাড়াও ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পর থানা কর্তৃক ওই জমিতে ১৪৪ ধারা জারি করে উভয় পক্ষকে শতর্কীকরণ নোটিশ প্রদান করে।
অপরদিকে থানার জারি করা ১৪৪ ধারা অমান্য করে গত ১৪ নভেম্বর আসাদুল ইসলামের নেতৃত্বে এক-দেড়শ জন দুর্বৃত্ত ওই সংখ্যালঘু পরিবারের ১শ ২২ জমি জবর দখল করে। এছাড়া দুর্বৃত্তরা ওই জমিতে কয়েকটি ঘর নির্মাণ করে। ওই এলাকাবাসী কামিনী বর্মন বলেন, দখলদাররা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলার সাহস পায়না। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে কোন কথা বললে তারা বিভিন্ন ধরনের হয়রানি করছে। জয়ধন চক্রবর্তী নামে এলাকাবাসী বলেন, দুর্বত্তরা অবৈধভাবে ঘর নির্মান করেছে। এছাড়াও রাতে ওই ঘরের ভেতরে মাদকের আড্ডা বসানো হয়। তিনি আরো বলেন, জমি দখলের ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে কোন বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিপিন বর্মন বলেন, দখলদাররা তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন সময় হুমকি দিচ্ছে। এছাড়া থানায় কোন মামলা করলে দখলদাররা আমাদের ভারতে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এজন্য থানায় কোন অভিযোগ না করে জেলা প্রশাসক মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।
দখলদার আসাদুল ইসলাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, জোরপূর্বক কারও জমি দখল করা হয়নি। আমাদের পৈত্রিক সম্পত্তি দখল করে ঘর নির্মাণ করে সেখানে বসবাস করছি। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ভুমি অফিসকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য বলা হয়েছে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী ভুমি কমিশনার রাশেদুল হক প্রধান বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গত ১৮ অক্টোবর বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হয়। তদন্তে জানা যায়, ওই জমির প্রকৃত মালিক বিপিন বর্মনের পিতা ঘৃতনাথ বর্মন। দুর্বৃত্তরা অবৈধভাবে জমি দখল করে ঘর নির্মাণ করেছে।