দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩ নভেম্বর ২০১৫: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় ৪ নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন৷ নেতৃবৃন্দের স্মরণে তিনি মঙ্গলবার সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পসত্মবক অর্পণ করেন৷ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীরা ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ভোর রাতে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জোরপূর্বক প্রবেশ করে জাতীয় ৪ নেতা তাজউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ নজরম্নল ইসলাম, ক্যাপটেন মনসুর আলী ও এএইচএম কামরম্নজ্জামানকে হত্যা করেছিল৷ ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে এই ৪ নেতা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়ে দেশের জন্য বিজয় অর্জন করেন৷ক্যাপটেন মনসুর আলীর পুত্র স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, সৈয়দ নজরম্নল ইসলামের পুত্র জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, মন্ত্রি পরিষদ সদস্যবৃন্দ, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ এ সময় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরেউপস্থিত ছিলেন৷
শেখ হাসিনা প্রথমে সকাল প্রায় ৭টায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুস্পসত্মবক অর্পন করেন এবং নেতৃবৃন্দের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন হিসেবে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন৷পরে, দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে আরেকটি পুস্পসত্মবক অর্পন করেন৷কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, রেলমন্ত্রী মুবিজুল হক, ত্রাণ ও দুযের্াগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন৷ এদিকে, জেলহত্যা দিবস উপলৰে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি ও জাতীয় চারনেতার কবরে ফুলদিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন৷মঙ্গলবার সকাল ৭টায় রাজধানীর ৩২ নম্বর সড়কের বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে এবং বনানীর কবরস’ানে জাতীয় তিন নেতার কবরে পুষ্পসত্মবক অর্পণের মাধ্যমে এ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়৷ অপর নেতা এএইচএম কামারম্নজ্জামানের কবর রাজশাহীতে এবং সেখানেও দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়৷১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের গুরম্নত্বপূর্ণ চারনেতাকে ১৯৭৫ সালের এ দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়৷ সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর সদ্য স্বাধীন দেশকে নেতৃত্বশূন্য করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র তাদের হত্যা করে৷
জাতীয় এ চারনেতা হলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধকালের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ, অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন এম মুনসুর আলী এবং স্বরাষ্ট্র, বেসামরিক সরবরাহ, ত্রাণ, পুনর্বাসন ও কৃষিমন্ত্রী এএইচএম কামারম্নজ্জামান৷সকাল ৭টা ১ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পসত্মবক অর্পণ করে তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন৷ শেখ হাসিনা এসময় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে কিছু সময় নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন৷পরে দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে দলীয় প্রধান হিসাবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা৷পরে ৭ টা ৪৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদ ও জাতীয় নেতাদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন৷ বনানী কবরস্থানে পবিত্র ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়৷
জাতীয় চারনেতার মধ্যে এ এইচ এম কামারুজ্জানকে রাজশাহীর কাদিরগঞ্জে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়৷ দিবসটি উপলক্ষে সেখানেও অনুরূপ কর্মসূচি পালিত হয়৷এছাড়াও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, যুবলীগ উত্তর ও দক্ষিণ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, ছাত্রলীগ উত্তর ও দক্ষিণ, স্বাধীনতা চিকিত্সক পরিষদ,বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, জয়বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট, বাস’হারা লীগ, আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা লীগ, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ, বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ, বিভিন্ন দল ও সংগঠন জাতীয় তিন নেতাসহ ১৫ আগষ্টের নিহত শহীদদের কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে৷