দৈনিকবার্তা-আখাউড়া, ৩ নভেম্বর ২০১৫: বাংলাদেশ ও ভারতসহ সার্কের চারটি দেশের মধ্যে পরিক্ষামূলকভাবে যান চলাচল শুরু হয়েছে৷ এ ট্রানজিট বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় ভারতীয় ভোডা ফোনের ইলেক্ট্রনিকস সরঞ্জাম ভর্তি একটি (কাভার্ড ভ্যান) ট্রাকের প্রথম চালান মঙ্গলবার দুপুরে আখাউড়া স্থলবন্দর সীমান্ত পথে ত্রিপুরারাজ্যের আগরতলায় প্রবেশ করে৷ এ সময় ত্রিপুরা আগরতলা স্থলবন্দরের কাস্টমস্ কর্মকর্তা বাণিক বত্ত চক্রবর্তী াংলাদেশের আখাউড়া স্থলবন্দর কাস্টমস্’র সহকারি কমিশনার (এসি) মিহির কুমার চাকিমার কাছ থেকে ভোডা ফোনের ইলেক্ট্রনিকস সরঞ্জাম সংক্রান্ত কাগজপত্র বুঝে নেন৷ ট্রাজিট সুবিধার আওতায় পরিক্ষামূলক এই ভারতীয় পণ্য সামগ্রী নিয়ে ট্রাকটি রোববার বিকালে কলকাতা থেকে বেনাপোল স্থলবন্দরে আসে৷ ট্রাকটি সোমবার সকাল সাড়ে ৮টায় বেনাপোল থেকে আখাউড়া উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে৷ আখাউড়া স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, সার্ক জোটের চারটি দেশ- বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান এবং নেপালের মধ্যে পণ্যবাহী যান চলাচলের জন্য সমপ্রতি সম্পাদিত (বিবিআইএন)’র চুক্তির আওতায় পরীক্ষামূলক যান চলাচল শুরু হয়েছে৷ এই চুক্তির আওতায় রোববার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতা থেকে ভারতীয় ভোডা ফোনের ইলেক্ট্রনিকস্ সরঞ্জাম ভর্তি (কাভার্ড ভ্যান) ট্রাকের প্রথম একটি চালান বাংলাদেশের বেনাপোল স্থলবন্দরে আসে৷ কোলকাতা স্থলবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর হয়ে ত্রিপুরারাজ্যের আগরতলা পৌঁছানো এ ট্রাকটি পরিচালনা করছে আন্তর্জাতিক কুড়িয়ার সংস্থা ডি এইচ এল৷ এতে যে ইলেক্ট্রনিক পণ্য আছে তা যাবে পূর্বোত্তর ভারতের গৌহাটিতে৷
পরিক্ষমূলক প্রথম চালানের পণ্যবাহী ট্রাকটি কোলকাতা-বেনাপোল-ঢাকা- ভৈরব হয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১টায় আখাউড়া স্থলবন্দর সীমান্ত পথে ত্রিপুরারাজ্যের আগরতলায় প্রবেশ করে৷পণ্যবাহী ট্রাকের সঙ্গে থাকা ভারতীয় কাস্টমস্ অফিসার মলাই রঞ্জন পাইন জানান, চার দেশের মধ্যে চুক্তির আওতাতেই এই যান চলাচল শুরু হলো৷ তিনি বলেন, এটা কোন দ্বিপাক্ষিক চুক্তি নয়- সাকের্র আওতায় আঞ্চলিক যোগাযোগের এ উদ্যোগে বাংলাদেশ শামিল হয়েছে৷ বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে ভারত জোর সহযোগিতা পাচ্ছেন৷ সেজন্য তিনি বাংলাদেশে সরকারকে ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান৷
ডিএইচএল গ্লোবাল ফরওয়াডিং কোম্পানির সিনিয়র অফিসার মো. ফিরোজ জাহাঙ্গীর বলেন, প্রায় ত্রিশ লক্ষ টাকা মূল্যের ভোডা ফোনের ৭ প্যাকেজ ইলেক্ট্রনিকস সরঞ্জাম নিয়ে ভারতীয় ট্রাক (ডবি্লউবি -১১বি-৯৫১৯) আগরতলা হয়ে গৌহাটি যাবে৷ এর আগে বাটা সু-কোম্পানীর ১১৬ প্যাকেট পণ্য বেনাপোল স্থলবন্দরে আনলোড করা হয়েছে৷
এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভূখন্ড ব্যবহার করে এ পথে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে দূরত্ব কমে ৬৪০ কিলোমিটারে নেমে এলো, যার জন্য আগে পাড়ি দিতে হতো ১’হাজার ৫৫০ কিলোমিটার পথ৷ তিনি আরো বলেন, শুধু আগরতলা নয়, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলও এই যান চলাচলের ফলে উপকৃত হবে৷
জানা যায়, ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক নৌ-প্রটোকল চুক্তির আওতায় কোলকাতার ক্ষিদিরপুর নৌবন্দর থেকে আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর হয়ে ভারত ২০১১ সালে এ পথ ব্যবহার করে ত্রিপুরারাজ্যের পালাটানা বিদু্যত্ প্রকল্পের মালামাল পরিবহণে ১২০ চাকার ট্রেইলরে করে ভারী ভারী যন্ত্রাংশ নিয়ে গেছে৷ ২০১২ সালে গ্যালভানাইজড্ প্লেইন স্টিল সিআই শিটের একাধিক চালান উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নিয়েছে ভারত৷ বর্তমানেও ভারতীয় ২৫ হাজার টন খাদ্যপণ্যের (চাল) একাধিক চালান বিনা শুল্কে ত্রিপুরায় নিচ্ছে ভারত৷