দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২ নভেম্বর ২০১৫: নাশকতার তিন মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।আত্মসমর্পণের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানিয়ে ফখরুলের করা আবেদন নামঞ্জুর করে আদালত এ নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মামলায় হাইকোর্টে দেওয়া রুল দুই সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বলেছেন আদালত। সোমবার প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে মির্জা ফখরুলের পক্ষে ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা।
সোমবার সকালে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মির্জা ফখরুলের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সগীর হোসেন লিওন।তিনি বলেন, নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ না করলে হাইকোর্টের জারি করা রুলের বিষয়ে শুনানি করা যাবে না। অর্থাৎ মির্জা ফখরুলকে আত্মসমর্পণ করতে হচ্ছেই।মঙ্গলবারের মধ্যে ফখরুলকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। তবে, এ তিন মামলার জামিন আবেদনে হাইকোর্টের জারি করা রুল দুই সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে আদেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।আদেশের পরে মুরাদ রেজা সাংবাদিকদের জানান, সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টের দেওয়া জামিন আদেশ বহাল রেখে প্রথমে ছয় সপ্তাহের মধ্যে মির্জা ফখরুলকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
পরে তার সময়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে আত্মসমর্পণের মেয়াদ বাড়ান আদালত, যার শেষদিন ধার্য রয়েছে ২নভেম্বর। আবারও সময়ের আবেদন জানিয়েছিলেন মির্জা ফখরুল। এ আবেদন খারিজ করেছেন আদালত। ফলে তাকে মঙ্গলবারের মধ্যেই নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে। গত ২১ জুন ওই তিন মামলায় ফখরুলকে জামিন দিয়ে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন বিচারপতি মো. রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। তার স্থায়ী জামিন প্রশ্নে রুলও জারি করেন আদালত। গত ২৯ জুন জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। পরে সেটি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত।
গত ১৩ জুলাই এ তিন মামলায় মির্জা ফখরুলকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন আদেশ বহাল রেখে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ। এর আগে গত ২৮ জুন পল্টন থানার দু’টি ও মতিঝিল থানার একটিসহ নাশকতার অপর তিন মামলায়ও হাইকোর্টের জামিন আপিল বিভাগ বহাল রাখেন। ফলে সে সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কারাবন্দি ফখরুলের জামিনে মুক্তি পেতে সব বাধা দূর হয়।এরপর জামিনে মুক্ত হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে চলে যান ফখরুল।দেশে ফিরে আবেদন জানিয়ে আত্মসমর্পণের মেয়াদ দু’দফা বাড়িয়ে নেন তিনি।নাশকতার কাজে উস্কানি, প্ররোচনা ও পরিকল্পনা অনুযায়ী পল্টন ও মতিঝিল এলাকায় হরতালের মধ্যে গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় গত ৪ ও ৬ জানুয়ারি এসব মামলা দায়ের করে ওই দুই থানা পুলিশ।