ফেইথ বাইবেল চার্চের যাজক লুক সরকার

দৈনিকবার্তা-পাবনা, ৩১ অক্টোবর ২০১৫: নিরাপত্তাহীনতা ও বিব্রতকর পরিস্থিতির কারনে দেশের বহুল আলোচিত পাবনার ঈশ্বরদীর ফেইথ বাইবেল চার্চের যাজক লুক সরকার স্বপরিবারে নিরুদ্দেশ হয়েছেন। দূর্বৃত্তদের হামলার শিকার হয়ে প্রাণনাশের হাত থেকে বেঁচে গিয়ে তিনি নিরাপত্তাহীনতা এবং আইন শৃংখলা বাহিনীর নানা সংস্থার নজরদারী, জিজ্ঞাসাবাদে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে তিনি এলাকা ছেড়েছেন বলে স্থানীয়রা মনে করছেন। বাড়ীর মালিক মনিরুল ইসলাম চলে যাবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। পাবনার ঈশ্বরদী বিমান বন্দর সড়কের যে বাসায় তিনি ভাড়া থাকতেন, সেই বাড়ীর মালিক মনিরুল ইসলাম শনিবার সকালে জানিয়েছেন, লুক সরকার ২৭ অক্টোবর সকাল ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে আকস্মিক ভাবে ট্রাকে করে বাসার আসবাবপত্রসহ সকল মালামাল নিয়ে স্বপরিবারে বাসা ছেড়ে চলে গেছেন। কোথায় গেছেন সে বিষয় তাকে কিছুই তিনি জানাননি। মনিরুল ইসলাম জানান, শুধু বলে গেছেন মোবাইল ফোনে আপনার সাথে আমার যোগাযোগ হবে।

শনিবার সকালে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিমান কুমার দাশ লুক সরকারের চলে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তার বদলী হয়েছে। বদলী জনিত কারনেই তিনি ঈশ্বরদী থেকে চলে গেছেন, চলে যাবার পিছনে অন্য কোন কারন নেই। শনিবার সকালে ঈশ্বরদী ফেইথ বাইবেল চার্চের সুপারভাইজার ভানু বোস সেল ফোনে জানান, আপাততঃ লুক সরকার বদলী জনিত কারনে এই চার্চ ছেড়ে গেছেন। তিনি কোন চার্চের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছে সেটা আমি বলতে পারছি না। বর্তমানে ঈশ্বরদী চার্চে কোন পালক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আমিই দেখভাল করছি বলে তিনি জানিয়েছেন। অসমর্থিত সুত্রগুলো জানিয়েছেন, লুক সরকার খুলনাতে বদলী হয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন যশোরে বদলী হয়েছেন তিনি। মূলতঃ নিরাপত্তা জনিত কারনে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজন কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করে যাচ্ছেন লুক সরকারের বিষয়ে।

উল্লেখ্য, চলতি মাসের ৫ অক্টোবর সকালে তিনজন দূর্বৃত্ত মোটর সাইকেলযোগে ঈশ্বরদী বিমানবন্দর সড়কের স্কুল পাড়ার ভাড়া বাসায় ঢুকে ধর্মগ্রন্থ পাঠ শোনার কথা বলে ফেইথ বাইবেল চার্চের যাজক লুক সরকারকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় তার চিৎকারে বাসার অন্যান্য সদস্য ও স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসতে থাকলে মোটর সাইকেল ফেলে রেখে দূর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় লুক সরকার নিজেই বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে ৭ জেএমবি সদস্যকে আটক করে। আটকের পর লুক সরকার সাংবাদিকদের বলেছিলেন যাদেরকে ধরা হয়েছে তাদের অনেককেই আমি চিনি না। তবে মূল হামলাকারীদের আমি দেখলে চিনতে পারবো। তবে পুলিশসহ আইন শৃংখলা বাহিনী ঘটনার তদন্তে এবং দোষীদের গ্রেফতারের ব্যাপারে খুবই তৎপর ছিলো বলে জানা গেছে। লুক সরকারের আকস্মিক ভাবে চলে যাবার ঘটনায় আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এলাকায়।