site

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৮ অক্টোবর ২০১৫: বাংলাদেশে দুই বিদেশি হত্যা ও তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিতে বোমা হামলার ঘটনায় আইএস-এর দায় স্বীকারের তথ্য সঠিক দাবি করে সরকারকে’সত্যের মুখোমুখি’ হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে জঙ্গি তত্‍পরতা পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ৷মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বলা হয়, এসব হামলার ঘটনায় আইএস-এর সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি বাংলাদেশ সরকার তীব্রভাবে অস্বীকার করে আসছে৷আর আইএস-এর দাবির বিষয়টি আড়ালে রাখার চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে সরকার এখন সাইটের সুনাম ক্ষুণ্নের চেষ্টা করছে৷গত ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ইতালির নাগরিক চেজারে তাভেল্লা ও ৩ অক্টোবর রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশিকে গুলি করে হত্যা করা হয়৷ দুই ক্ষেত্রেই হত্যাকাণ্ডের কয়েক ঘন্টার মধ্যে আইএস এর ‘দায় স্বীকারের খবর দেয় সাইট৷এরপর গত ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার হোসাইনী দালানে আশুরার তাজিয়া মিছিলে প্রস্তুতির সময় বোমা হামলা হলে তার দায়ও আইএস স্বীকার করেছে বলে সাইট দাবি করে৷বাংলাদেশ সরকার বলে আসছে, এসব ঘটনার সঙ্গে আইএস-এর সংশ্লিষ্টতা বা দায় স্বীকারের দাবির কোনো ভিত্তি গোয়েন্দারা খুঁজে পাননি৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, আইএসের নামে যে টুইট করা হয়েছে তা এসেছে বাংলাদেশ থেকেই৷এসব ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে, সরকারকে চাপে ফেলতে পরিকল্পিতভাবে এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে৷ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মুনিরুল গত ২৬ অক্টোবর এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, তাভেল্লা হত্যার বিষয়ে কোনো তথ্য আইএসের ওয়েবসাইটে নেই৷ এসব বার্তা’ তারা কখনো গোপনেও দেয় না৷এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে সাইট ইন্টিলিজেন্সের পরিচালক রিটা কাতজের সঙ্গে মেইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কোনো উত্তর আমরা পাইনি৷তবে আইএস-এর দায় স্বীকারের বিষয়ে সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ’আগের অবস্থানেই’ রয়েছে জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পুঙ্খানুপুঙ্খনু বিভিন্নভাবে যাচাই করে নিশ্চিত হয়েই তারা ওই তথ্য প্রকাশ করেছে৷ আইএস-এর মিডিয়া চ্যানেলেও দায় স্বীকারের বিষয়টি এসেছে৷সাইট বলছে, যারা সতর্ক করছে তাদের বিরুদ্ধে না গিয়ে সত্যের মুখোমুখি হয়ে আসল শত্রুদের দিকে মনোযোগ দিলেই বাংলাদেশ সরকার বেশি সুফল পাবে৷

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারের অস্বীকার এবং সাইটের ‘সুনাম নষ্টের’ চেষ্টায় বাস্তবতা বদলানো যাবে না৷ আর অনলাইনে জিহাদি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে যে সুনাম সাইট অর্জন করেছে, তা নষ্টের চেষ্টাতেও কোনো ফল আসবে না৷এদিকে, দেশের ভেতরে মানুষ পুড়িয়ে সরকার উত্‍খাত না পেরে, বিএনপি পরিকল্পিতভাবে বিদেশিদের হত্যা করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ দেশে কোনো অস্থিরতা সৃষ্টি করে সরকারের নেয়া উন্নয়ন কার্যক্রমকে স্থবির করা যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের জন্য বিএনপি-জামায়াত চক্রকে দায়ী করে শেখ হাসিনা বলেন,জনগণের দুঃসহ ভোগান্তির কারণে যাত্রীদের স্বস্তির জন্য ক্রয়কৃত অধিকাংশ সরকারি ও বেসরকারি বাস তারা জ্বালিয়ে দিয়েছে৷ পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে তারা এখন পরিকল্পিতভাবে বিদেশি নাগরিক হত্যায় নেমেছে এবং স্থানীয় লোকজনকে খুন করে দেশকে পঙ্গু করার ব্যর্থ তত্‍পরতা চালাচ্ছে৷ কিন্তু সামপ্রতিক ঘটনাগুলোর হোতাদের সম্পর্কে মানুষ এখন সম্পূর্ণ অবগত রয়েছেন৷

তিনি বলেন, কয়েকটা বোমা মেরে ও ঢিল ছুঁড়ে উন্নয়নের গতি রোধ করা যাবে না৷ স্বার্থান্বেষী একটি মহল আমাদের উন্নয়ন কার্যক্রম ও দেশের অগ্রগতি পছন্দ করে না৷ জনগণ যখন সুখে-শান্তিতে বসবাস করছে তখন তারা উন্নয়নের প্রয়াস নস্যাতের অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে৷এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, দুই বিদেশি হত্যাকান্ডের সাথে বিএনপি নেতা ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার এম এ কাইয়ুম এর নাম সন্দেহের তালিকায় রয়েছে৷বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রলয়ের সম্মেলন কক্ষে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রানত্ম মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন মন্ত্রী৷স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, পত্রিকায় নাম এসেছে বিএনপি নেতা ও বাড্ডা এলাকার সাবেক ওর্য়াড কমিশনার কাইয়ুমের৷ তিনি সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন৷ শুধু কাইয়ুম নয়, সন্দেহের তালিকায় আরও অনেকে রয়েছেন৷

তিনি বলেন,জঙ্গি দমনের জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে৷স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা আনত্মর্জাতিকভাবে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে রয়েছি, এটা অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে কাজ করছি৷ জঙ্গি-সন্ত্রাসী কার্যক্রমে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না৷ আর বাংলাদেশে আইএসের কোন অস্তিত্ব নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি৷