দৈনিকবার্তা-পঞ্চগড়, ২৫ অক্টোবর ২০১৫: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের মানচিত্রে সদ্য অনত্মভর্ুক্ত হওয়া ছিটমহল বাসিন্দাদের জাতীয় অর্থনীতির মূলধারায় সংযুক্ত করা এবং তাদের সম্ভাবনাময় উদ্যোগসমূহ বিকশিত করার লক্ষ্যে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে৷
রোববার সকালে গভর্নর দহলা খাগড়াবাড়ীতে এন,বি,এল হাজী লূত্ফর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের উদ্ধোধন এবং দোহলাখাগড়াবাড়ী পৌঁছানোর পর স্থানীয় লোকদের ব্যাংকিং সেবা প্রদানে সরকারি ও বে-সরকারি খাতের ব্যাংকের স্থাপিত ৪০টি স্টল উদ্ধোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন৷ বাংলাদেশ ব্যাংক রংপুর শাখার জেনারেল ম্যানেজার খুরশিদ আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রখেন দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাসনাত্ জামান চৌধূরী জর্জ৷ অন্যদের মধ্যে দেবীগঞ্জের ইউএনও মোঃ শফিকুল ইসলাম ,উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আ.স.ম. নুরজ্জামান,এবং বিভিন্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকবৃন্দ , জেনারেল ম্যানেজারগণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন৷
প্রধানমন্ত্রীর ছিটমহল নিয়ে পরিকল্পনা প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন,’সুখে-দুঃখে আপনাদের পাশে থাকার প্রত্যয় নিয়ে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসীর অবস্থা দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রী কুড়িগ্রাম এসেছিলেন৷ তিনি বাংলাদেশের এই নতুন নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নে সম্ভাব্য সবকিছু করার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন৷ উন্নয়নমূলক বেশ কিছু প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন৷ আমিও আপনাদের কথা দিচ্ছি সমগ্র ব্যাংকিং পরিবার আপনাদের পাশে থাকবে৷ তিনি বলেন,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ টেকসই প্রবৃদ্ধি ও অনত্মভর্ুক্তিমূলক উন্নয়নের আদর্শ হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে উঠেছে৷ ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে৷ এখন আমরা দ্রম্নত এগুচ্ছি উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হবার পথে৷ সম্ভাব্য এ অর্জনের শক্ত পাটাতন তিনি এরই মধ্যে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা বিশেষ করে সর্বশেষ সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা দলিল অনুমোদনের মাধ্যমে সহাপন করেছেন৷
বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার অসমাপ্ত কাজগুলো বাসত্মবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এবং বাংলাদেশ এখন নিম্ন আয়ের দেশ অতিক্রম করে মধ্যম আয়ের দেশের দিকে অগ্রসর হচ্ছে উলেস্নখ করে গর্ভনর ড. আতিউর রহমান বলেন, আর্ত-সামাজিক অবস্থা এবং স্থানীয় লোকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ধুদ্ধ হয়ে গোটা জাতি একযোগে কাজ করতে পারলে অচিরেই দারিদ্রের ভয়কে জয় করার মাধ্যমে কাঙ্খিত সাফল্য অর্জন সম্ভব৷ বর্তমান সরকার রূপকল্প ২০২১এর আলোকে জাতির সামনে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের যে অভুতপূর্ব স্বপ্নের অবতারণা করেছে তা বাসত্মবায়নে ব্যাংকিং খাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে৷ অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য প্রবদ্ধি যেন দরিদ্র-বান্ধব ও টেকসই হয় এবংএর সুফল সমাজের বৃহত্তর জনগোষ্ঠির কাছে পৌছে দিতে পারে সে লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক তার বিধিবদ্ধ দায়িত্ব ও দারিদ্র নিরসনে ব্যাংকিং সুবিধার বাইরে থাকা দেশের বিশাল জনগোষ্ঠিকে আর্থিক সেবার আওতায় আনার কৌশল ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন কার্যক্রমকে বেগবান করার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে৷
গর্ভনর বলেন,’আমি এবং সহযোগি ব্যাংকগুলো আপনাদেরকে ভরসা দেয়ার জন্য এখানে এসেছি এবং ব্যাংকগুলো যৌথ্যভাবে সামাজিক দায়বদ্ধতা (সিএসআর)কর্মসূচীর আওতায় দহলা খাগড়াবাড়ী এলাকার জনগনের স্বাস্থ্য সমস্যা দুর করার জন্যে ৩৩৪ টি নলকুপ, ১৯২টি স্যানিট্রারী ল্যাট্রিন, ১০টি স্প্রে মেশিন,বিপুল পরিমান ওষূধ এবং শিক্ষা কার্যক্রমের আধুনিকায়নে ১৯টি কম্পিউটার, ১৩০০টি স্কুল ব্যাগ, ৪২ লাখ টাকা খরচে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় নির্মাণ, ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা শিক্ষা বৃত্তি প্রদান, ১০০টি স্কুল বেঞ্চ,স্ব-কর্মসংস্থানের জন্য ৯০টি সেলাই মেশিন, ১৮৩টি বাই-সাইকেল, ১১০টি ভ্যান গাড়ী, ১৪৬ বান্ডিল ঢেউটিন, ৩০টি গরু, দরিদ্র মানুষের শীত নিবারণের জন্য ৫১০০টি কম্বল বিতরণ,সৌর বিদ্যুত্ এর ব্যবস্থাকরন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে কালভার্ট নির্মাণ এসব বহুমূখী পদক্ষেপ গ্রহন ও বিতরণে ব্যাংকগুলো আপনাদের কাছে এগিয়ে এসেছে এবং এ খাতগুলোতে ব্যয়িত অর্থের পরিমান ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা৷