দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ অক্টোবর ২০১৫: মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃতু্যদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর (সাকা) পক্ষে ডিফেন্স সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত হতে চেয়ে আবেদনকারী পাঁচ পাকিস্তানির বাংলাদেশে প্রবেশের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ সরকার৷ শুক্রবার দ্য এঙ্প্রেস ট্রিবিউন নামে একটি পাকিস্তানি দৈনিক এ খবর প্রকাশ করেছে৷ওই পাঁচ পাকিস্তানি হলেন- পাকিস্তানের স্থপতি মুনিব আরজুমান্দ খান, পাকিস্তানের ডন গ্রুপের চেয়ারম্যান আমবর হারুন সায়গল, পাকিস্তানের সাবেক মন্ত্রী ইসহাক খান খাকওয়ানি, ভিকারুননিসা নূনের নাতি রিয়াজ আহমেদ নূন এবং পাকিস্তানের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান মোহাম্মদ মিয়া সুমরো৷প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পুলিশের কাছে একটি চিঠি লিখেছেন৷ যেখানে এই পাঁচজনের ছবি এবং নাম পাঠিয়ে তাদেরকে কালোতালিকাভুক্ত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে৷
চিঠি পাওয়ার পর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পুলিশের পক্ষ থেকে পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ওই পাঁচজনকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়৷ এতে আরও বলা হয়, মানবাধিকার সংস্থাগুলো এবং বিএনপির অভিযোগ ট্রাইবু্যনালে আন্তর্জাতিক মানের ঘাটতি রয়েছে এবং মামলাগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত৷সাকার ৫ পাকিস্তানি সাক্ষীর বাংলাদেশে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাএ বিষয়ে খাকওয়ানি বলেন, বাংলাদেশ সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপে আমরা হতাশ৷ আমরা প্রত্যেকটি ফোরাম থেকে এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি৷ একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সাক্ষী হিসেবে তাদের আবেদন গ্রহণ না করায় ট্রাইবু্যনালের যুক্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি৷গত সোমবার সুপ্রিমকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মৃতু্যদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী তার ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) শুনানিতে পাঁচ পাকিস্তানিসহ আটজনের সাফাই সাক্ষ্য নেয়ার আবেদন করেন৷
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবু্যনাল-১ পৃথক চারটি (৩, ৫, ৬ ও ৮নং) অভিযোগে সাকা চৌধুরীকে ফাঁসির আদেশ দিয়ে রায় দেন৷ এছাড়া তিনটি (২, ৪ ও ৭নং) অভিযোগে তাকে দেয়া হয় ২০ বছর করে কারাদণ্ড৷ দুটি (১৭ ও ১৮নং) অভিযোগে দেয়া হয় পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড৷একই বছরের ২৯ অক্টোবর এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন সাকা চৌধুরী৷ আপিল বিভাগ এই আপিল নিষ্পত্তি করে গত ২৯ জুলাই তার মৃতু্যদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন৷ ৩০ সেপ্টেম্বর সাকা চৌধুরী ও আরেক যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি বহালের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ হয়৷ এরপর ১ অক্টোবর ট্রাইবু্যনাল থেকে তাদের মৃত্যুপরোয়ানা জারি করা হয়৷নিয়ম অনুযায়ী রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে আসামিরা রিভিউ আবেদন দায়ের করতে পারেন৷ সেই হিসাবে এরই মধ্যে দুই আসামির পক্ষে রিভিউ আবেদন দায়ের হয়েছে৷ তাদের রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানি আগামী ২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে৷