ফিলিপাইনে বন্যা কমলেও টাইফুনে মৃত ৪৭

দৈনিকবার্তা-গাজীপুর, ২১ অক্টোবর ২০১৫:  ফিলিপাইনে শক্তিশালী টাইফুনের প্রভাবে সৃষ্ট ব্যাপক বন্যা বুধবার কমে আসলেও ঝড়ের আঘাতে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৪৭ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগটির কারণে হাজার হাজার মানুষ অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরগুলোতে অবস্থান করছে।টাইফুন কোপ্পুর প্রচন্ড আঘাত হানার পর তিন দিন অতিবাহিত হয়েছে। এখন আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি ঘটেছে। কর্মকর্তারাও ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্ট বন্যায় নষ্ট হওয়া ফসল ও বন্যার পানিতে প্রাণ হারনো গবাদি পশুর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করছেন। ম্যানিলার উত্তরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ ফসলি জমি বন্যার পানিতে তলিয়ে যায়।

ফিলিপাইনের জাতীয় প্রাকৃতিক দুুর্যোগ প্রশমন বিষয়ক সরকারি প্রকল্পের পরিচালক মাহার লাগমেই বলেন, বন্যার পানি ভাটির দিকে প্রবাহিত হচ্ছে। কোন কোন এলাকার পানি হ্রাস পেতে শুরু করেছে। তিনি এএফপিকে এ কথা জানান। ভারী বর্ষণের ফলে বন্যার পানিতে তলিয়ে যায় ফিলিপাইনের উত্তরাঞ্চলীয় পার্বত্য এলাকার অধিকাংশ আবাদী জমি। এখন এসব এলাকার পানি নেমে যাচ্ছে। লাগমেই ও স্থানীয় অপর একজন বেসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা একথা জানিয়েছেন।

ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় আবাদী অঞ্চল লুজনে প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। জাতীয় ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দেয়া মৃতের নিশ্চিত পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে বার্তা সংস্থা এএফপি এ কথা জানিয়েছে।
সোম ও মঙ্গলবার মধ্য লুজোনের ৩০০টির বেশি গ্রামের আবাদি জমি বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়।

কোন কোন এলাকায় বন্যার পানিতে পুরো বাড়ি তলিয়ে যায়।ফিলিপাইনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানায়, বন্যার পানি এখনো পুরোপুরি নেমে যায়নি। এ কারণে ১ লাখ ৭ হাজারের বেশি মানুষ এখনও অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে অবস্থান করতে বাধ্য হচ্ছে।বন্যা উপদ্রুত এলাকায় পানিতে ডুবে বেশিরভাগ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ও দেয়াল চাপা পড়েও অনেকে মারা গেছে। এছাড়াও সাপের কামড়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।আঞ্চলিক বেসামরিক নারী প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা আইভি কারাসি জানান, পার্বত্য এলাকায় আরো ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। একটি ভূমিধসে বেশ কয়েকটি বাড়ি চাপা পড়ে এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এই ভূমিধসে বেশ কয়েকটি রাস্তাও ধ্বংস হয়।দেশের অন্যান্য স্থানে খারাপ আবহাওয়ার কারণে ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে মোট ৪৭ জনে দাঁড়িয়েছে।এর আগের দিন মৃতের সংখ্যা ছিল ২২। তবে প্রত্যন্ত এলাকাগুলো থেকে মৃত্যুর খবর আসতে থাকায় মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।রাষ্ট্রীয় আবহাওয়া সার্ভিস জানায়, কোপ্পু লুজোনের উত্তর উপকূলে বুধবার ভোরে ঘন্টায় ৫৫ কিলোমিটার বা ৩৪ মাইল বেগে বাতাস প্রবাহিত হয়।রোববার সকালে ঝড়টি প্রথম আঘাত হানার সময় এর গতিবেগ ছিল ঘন্টায় ২১০ কিলোমিটার, যা চলতি বছর ফিলিপাইনে আঘাত হানা দ্বিতীয় শক্তিশালী ঝড়।