দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২১ অক্টোবর ২০১৫: টাঙ্গাইল-৪ আসনের উপ-নির্বাচনে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর প্রার্থিতা বাতিলের আদেশ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট৷ একই সঙ্গে তার মনোয়নপত্র গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চ বুধবার এই আদেশ দেয়৷কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত কেন আইনগত কতৃতর্্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুলও দিয়েছে আদালত৷রিটের বিবাদী নির্বাচন কমিশন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, টাঙ্গাইলের জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিবসহ পাঁচজনকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে৷মঙ্গলবার একই বেঞ্চে কাদের সিদ্দিকীর রিট আবেদনটি উপস্থাপন করা হয়৷রিটের পক্ষে শুনানি করেন এ জে মোহাম্মদ আলী, রুবায়েত হোসেন ও ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী৷ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোরশেদুল আলম৷নির্বাচন কমিশনের পক্ষে আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন৷আদালতের আদেশের পর আইনজীবী রাগীব বলেন, আদালতের নির্দেশের ফলে এখন তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন৷
হজ নিয়ে মন্তব্যের জন্য আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত লতিফ সিদ্দিকী পদত্যাগ করায় টাঙ্গাইল-৪ আসন শূন্য হয়৷ ওই আসনে উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হতে কাদের সিদ্দিকী ও তার দলের আরও তিনজনসহ মোট দশজন মনোনয়নপত্র জমা দেন৷ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আলীমুজ্জামান গত ১৩ অক্টোবর বাছাই শেষে কাদের ও তার স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকীসহ চারজনের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন৷ ঋণ খেলাপের কারণ দেখিয়ে কাদের ও নাসরিনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়৷এরপর প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন কাদের ও নাসরিন সিদ্দিকী৷ কিন্তু কমিশনের শুনানিতেও তাদের আবেদন টেকেনি৷ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে কাদের সিদ্দিকী অভিযোগ করেন, তাকে ‘ঋণ খলাপি বানাতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ছলনার আশ্রয় নিয়েছে৷ ওই সংবাদ সম্মেলনেই প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি৷এদিকে, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র গ্রহণ করতে নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে বলেন, আমি আইনের শাসনে বিশ্বাসী, উচ্চ আদালতে এসে আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি৷বুধবার উচ্চ আদালতে আদেশের পর আদালতের অ্যানেঙ্ ভবনের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন কাদের সিদ্দিকী৷কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি জনগণের কাছে যেতে চাই৷ জনগণের মাঝে গিয়ে আমি কাজ করতে চাই৷এদিকে এ আদেশের পর নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম বলেছেন, আমরা এ আদেশের বিরুদ্ধে সুটিওমকোর্টে অপিল করবো৷এদিকে আগামী ১০ নভেম্বর টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের উপ-নির্বাচন৷ এতে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রার্থী হিসেবে কাদের সিদ্দিকী ও তার স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন৷ কিন্তু ঋণখেলাপের অভিযোগে গত ১৩ অক্টোবর (মঙ্গলবার) রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলীমুজ্জামান তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন৷ এরপর গত ১৬ অক্টোবর এই দুই নেতা রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসিতে আপিল আবেদন করেন৷
গত রোববার বিকেলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন কাদের সিদ্দিকীর আপিল খারিজ করে রায় দেন৷ এ খারিজাদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মঙ্গলবার হাইকোর্টে রিট করেন কাদের সিদ্দিকী ৷