দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ অক্টোবর ২০১৫: বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল পথে আছে জানিয়ে বিশ্বব্যাংক বলেছে, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫শতাংশ হতে পারে। আন্তর্জাতিক অর্থনীতির ঝুঁকি চিত্র পাল্টানোর সংঙ্গে বাংলাদেশের সক্ষমতা বাড়ছে না। ফলে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নাও হতে পারে।মঙ্গলবার মঙ্গলবার সকালে শেরেবাংলা নগরে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলা হয়। বাংলাদেশের অর্থনীতির হালনাগাদ প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।সংবাদ সম্মেলনে বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বক্তব্য রাখেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিতি ছিলেন বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ইউহানেস জাট, কমিউনিকেশন অফিসার মেহরীন এ মাহবুব প্রমুখ।ড. জাহিদ বলেন, বাংলাদেশর জিডিপির গ্রোথ ভালো, মূল্যস্ফীতি কমেছে, রিজার্ভ বেড়েছে এবং মূল্যনীতি স্থিতিশীল আছে। তবে চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, রাজনৈতিক এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারনে কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে না। মধ্যম আয়ের দেশ হতে বাংলাদেশকে বেশ কিছু সংস্কারমূলক কাজ করতে হবে।তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল পথে আছে, তবে উদ্বেগ নেই তা নয়। ব্যক্তি বিনিয়োগখাতের স্থবিরতা এখনো কাটেনি। অথর্নীতি স্থিতিশীল অবস্থায় থাকলেও তার নিশ্চয়তা নেই। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে। তবে ভোগ বৃদ্ধি ও রপ্তানি বাড়ার ওপর তা নির্ভর করছে।বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের এই অর্থনীতিবিদ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির উৎদ্বেগের মূল বিষয় হলো, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় ঘাটতি আছে। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ভালো না।
গত বছর রেমিটেন্স ভালো থাকলেও চলতি বছরে তা কমার লক্ষণ দেখা দিয়েছে।তিনি বলেন, গত কয়েক বছর থেকে বিদেশে অবস্থান করা শ্রমিকদের প্রবৃদ্ধি কমছে। এছাড়া বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা স্থীতিশীলতা থাকলেও অশ্চিয়তা কাটেনি। অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ঝুঁকি আছে বলে মন্তব্য করেন জাহিদ।বাজেটে নির্ধারিত প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য অর্জনে বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতেও সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে আন্তর্জাতিক এই ঋণদাতা সংস্থাটি।সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরেও বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকবে।রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাই অর্থনীতির গতি কমিয়ে দেবে বলেও ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল।তবে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকায় এবং সরকারি-বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ, রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব বলে জানিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।গত মাসে এডিবির বার্ষিক প্রতিবেদন এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক ২০১৫’-এ এই পূর্বাভাস আসে।
জুনে ঘোষিত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে সাত শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়, তা অর্জন অসম্ভব কল্পনা বা অলীক স্বপ্ন নয় বলেও সংসদে মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী।সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, সরকার চলতি অর্থ বছরের বাজেটে সাত শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরেছে সেটা অর্জন করা সম্ভব। তবে এজন্য বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বর্তমানের চেয়ে অনেক বাড়াতে হবে।তিনি বলেন, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির অবস্থা ভালো।সামষ্টিক অর্থনীতি স্থিতিশীল পথে আছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আছে।বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ভালো। ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণও কম। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি বর্তমানে স্থিতিশীল অবস্থায় আছে।