দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৪ অক্টোবর ২০১৫: বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ-এর নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সুন্দরবন ধ্বংস করে দেশি-বিদেশি লুটেরাদের স্বার্থ রক্ষা করতে সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। সরকারের ‘জেদি’ কর্মকা- দেশবাসী মেনে নেবে না। রামপাল, ওরিয়ন বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ সুন্দরবন বিধ্বংসী সকল প্রকল্প বাতিল এবং প্রাণবৈচিত্র-প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষার দাবিতে সিপিবি-বাসদ-এর ‘সুন্দরবন রক্ষা অভিযাত্রা’র দ্বিতীয় দিনে মানিকগঞ্জ ও গোয়ালন্দ মোড়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
বুধবার মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে সিপিবি’র মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি আজহারুল ইসলাম আরজুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খান, বাসদ-এর সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদ-এর কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জলি তালুকদার, বাসদ-এর কেন্দ্রীয় নেতা নিখিল দাস, জয়নাল আবেদীন, ছাত্রনেতা মৈত্রী ঘোষ। এছাড়া গোয়ালন্দ মোড়ে সিপিবি’র রাজবাড়ি জেলা কমিটির সভাপতি আবুল কালামের অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য সাজ্জাদ জহির চন্দন, সিপিবি’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কাফি রতন।
কমরেড মনজুর বলেন, ভারতের মধ্যপ্রদেশে নরসিংহপুর জেলায় ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কৃষি ও পরিবেশগত সমস্যা বিবেচনায় নিয়ে ভারত সরকার ঐ প্রকল্পটি বাতিল করে। অথচ এর থেকে অনেক বেশি ক্ষতিকর হওয়ার পরও বাংলাদেশে ঐ প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি করা হয়েছে। এই গণবিরোধী উদ্যোগ কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না।তিনি আরো বলেন, ভারতের পরিবেশ মন্ত্রণালয় এসব প্রকল্পের বিরোধিতার সময় দো-ফসলি জমি ও নর্দমা থেকে পানি নেওয়া বিবেচনায় নিয়েছে। ঐ দেশের কেন্দ্রীয় গ্রিন প্যানেল বলেছে, জনবসতির কাছে ও কৃষিজমির ওপর কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প গ্রহণযোগ্য নয়। অথচ সুন্দরবনে কৃষি জমি ধ্বংস করে সুন্দরবনের কাছে রামপাল বাগেরহাট খুলনার কাছে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে।
সুন্দরবন বাঁচাতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। খালেকুজ্জামান বলেন, ১৯৭২ সালে ইরানের রামসার শহরে বৈশ্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক জলাভূমি সংরক্ষণের জন্য ১৬০টি দেশ স্বাক্ষর করে। প্রাকৃতিক জলাভূমি হিসেবে সুন্দরবন ‘রামসার এলাকা’ হিসেবে ঘোষিত। রামসার কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে এই প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সুন্দরবন নিয়ে সকলের উদ্বেগ আছে। কিন্তু উদ্বেগ নেই শুধু লুটেরাদের স্বার্থ রক্ষাকারী সরকারের। সকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যাত্রা করে, মানিকগঞ্জ ও গোয়ালন্দ মোড়ে সমাবেশ শেষ করে ‘সুন্দরবন রক্ষা অভিযাত্রা’ ফরিদপুরের দিকে যাত্রা করে।