দৈনিকবার্তা- সাতক্ষীরা, ১৩ অক্টোবর ২০১৫: প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিন্হা বলেছেন, বিচার সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত৷ আইনের শাসন বলে আমি বুঝি প্রত্যেকের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করা৷ বিচার কাজে কোন পৰ পাতিত্ব করা হবে না৷ তাই সে আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় পার্টি যে রাজনৈতিক দলের হোক না কেন আইন সবার জন্য সমান৷ তিনি আরো বলেন, বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের জনসংখ্যার তুলনায় মামলা বেশি কিন্তু বিচারক কম৷ বিচারকরা মামলার জট কমিয়ে আনছেন৷ তিনি আরো বলেন, বিচার ব্যবস্থার সাথে তথ্য-প্রযুক্তি যুক্ত হচ্ছে৷ বিচার ব্যবস্থাও ডিজিটালাইজেশন হচ্ছে৷ দেশে প্রথম সিলেট থেকে শুরু হয়েছে৷ ভালো ফল দিলে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনার আদালতসহ সারা দেশে চালু করা হবে৷ তিনি আরো বলেন, সাতক্ষীরার আদালতে বিচারক সংকট আছে৷ কিন্তু বিচারক পদায়ন দিলেও লাভ হবে না৷ এখানে কোর্টের স্বল্পতা আছে৷ মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা আইনজীবী সমিতি’র সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন৷জেলা আইনজীবী সমিতি’র সভাপতি এড. আবুল হোসেনের(২) সভাপতিত্বে ও সাধারন সম্পাদক এড. তোজাম্মেল হোসেন তোজামের পরিচালনায় বক্তব্য দেন জেলা ও দায়রা জজ জোয়ার্দ্দার মো. আমিরম্নল ইসলাম, সাতক্ষীরা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)এড. ওসমান গণি, আইনজীবীদের পৰে এড. এস এম হায়দার৷
প্রধান অতিথি সুরেন্দ্র কুমার সিন্হা আরো বলেন, প্রত্যেক ব্যক্তি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তার মামলা শেষ করবে বলে প্রত্যাশা করে৷ কিন্তু তার প্রত্যাশিত সময়ে মামলা শেষ না হলে বিচার বিলম্বিত হয়৷ বিচারকদের সময়নিষ্টতা, পুলিশি তদনত্ম, সাক্ষীর উপস্থিতি ও আইনজীবীদের সহযোগিতা থাকলে মামলার জট দ্রুত নিষ্পত্তি করা যাবে বলে তিনি মনত্মব্য করেন৷তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে ৩০/৩১ লক্ষ মামলা আছে৷ মামলা যানজটের মতে আটকে আছে৷ মামলাগুলো দ্রম্নত নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে৷ বিচারকরা বেশি কাজ করছে৷ তবে এটা সম্ভব হয়েছে আইনজীবীদের কারণে৷ তাদের সহযোগিতায় মামলাগুলো দ্রম্নত নিষ্পত্তি হচ্ছে৷ প্রধান অতিথি আরো বলেন, সিআরপিসির বিধানগুলোর ৪০ ভাগ অকার্যকর৷ এ বিধানগুলোতে মরিচা পড়েছে৷ এ বিষয়ে আমি আইন কমিশনের চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছি৷ অকার্যকর বিধানগুলো দ্রম্নত সংস্কার করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে৷ তিনি সাতক্ষীরা কোর্টে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি সম্পর্কে বলেন, বর্তমানে এখানে বিচারক সংকট আছে৷ কিন্তু আমি বিচারক দিলেও কোন লাভ হবে না৷ এখানে কোর্টের সংকট আছে৷ তিনি গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্মিতব্য কোর্টের ২টি ফ্লোর প্রস্তুত করে দেওয়ার নির্দেশ দেন৷ এছাড়া তিনি মামলার সাৰীদের সুরৰার জন্য রেষ্ট রুম করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন৷ যা বাংলাদেশের মধ্যে ৫টি জেলায় করা হয়েছে৷ আসত্মে আসত্মে প্রতিটি জেলায় মামলার সাক্ষীদের জন্য রেষ্ট রুম করার উদ্যোগ নেয়া হবে৷
প্রধান অতিথি প্রধান বিচারক সুরেন্দ্র কুমার সিন্হা দুই দিনের সাতক্ষীরা সফরে আসেন৷ সোমবার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা সার্কিট হাউজে জেলা জজশীপের আয়োজনে বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে তিনি যোগদান করেন৷ আজ সকালে তিনি সাতক্ষীরা কোর্ট পরিদর্শন করে দুপুরে আইনজীবীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পর খুলনার উদ্দেশ্যে সাতক্ষীরা ত্যাগ করেন৷