image_20370.nirbachon-comisonar

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১২ অক্টোবর ২০১৫: সরকার যদি আগামী সাতদিনের মধ্যেই দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন আয়োজনের অধ্যাদেশ দেয় তবে আগামী ডিসেম্বরের (২০১৫ সাল) পৌরসভা নির্বাচনও দলীয়ভাবে করা যাবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার বিকেলে ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান।তিনি বলেন, দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন হলে তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্রের বিকাশ হবে,চর্চাও বাড়বে।সরকার যদি দলীয়ভাবে এ নির্বাচন করতে চায় তাহলে আইন সংশোধন করতে হবে। মন্ত্রিসভায় আইনের সেই খসড়াটি অনুমোদন হয়েছে এখন সেটি ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে। সেখান থেকে আবার মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হবে। এরপর চূড়ান্ত অনুমোদন।

সিরাজুল ইসলাম বলেন, চূড়ান্তের পর সেটি বিল আকারে জাতীয় সংসদে তোলা হবে। আর তা যদি না হলে, অধ্যাদেশ করা হবে। সরকার যদি আগামী সাতদিনের মধ্যেই অধ্যাদেশ করে দেয় তবে আগামী ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য পৌরসভা নির্বাচনই দলীয়ভাবে করতে পারবো।সব নির্বাচনেই চ্যালেঞ্জ থাকে মন্তব্য করে তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জ আগেও ছিল, এখন আছে, দলীয়ভাবে হলেও থাকবে। তবে নতুনভাবে নির্বাচন করলে কোনো অসুবিধা হবে না। এর মধ্যে আমারা সংশোধিত আইন অনুযায়ী বিধিমালাও সংশোধন করবো।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এবার থেকে স্থানীয় সরকারের সবস্তরের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক ও ব্যানার ব্যবহার করবেন প্রার্থীরা। সোমবার স্থানীয় সরকারের ইউনিয়ন পরিষদ সংশোধন আইন-২০১৫, উপজেলা পরিষদ সংশোধন আইন-২০১৫, জেলা পরিষদ সংশোধন আইন-২০১৫ ও সিটি করপোরেশন সংশোধন আইন-২০১৫’র খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। পাশাপাশি স্থানীয় সরকারের পৌরসভা সংশোধন আইনের খসড়াটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করার প্রস্তাবও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এদিকে, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের জন্য মাঠ কর্মকর্তাদের কাছে মতামত চেয়েছিল নির্বাচন কমিশন, তাতে ফের ‘না’ ভোট চালু করাসহ বেশ কিছু প্রস্তাব এসেছে ইসির হাতে।

ফখরুদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সংশোধিত নির্বাচনী আইনে নবম সংসদ নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ‘না ভোট’ দেয়ার সুযোগ পান বাংলাদেশের ভোটাররা।ওই নিয়মে প্রার্থী পছন্দ না হলে একজন ভোটার ব্যালট পেপারে ‘উপরের কাহাকেও নহে’ লেখা একটা ঘরে সিল দিতে পারতেন। কোনো আসনে ‘না’ ভোটের সংখ্যা বাক্সে পড়া মোট ভোটের অর্ধেক বা তার বেশি হলে নতুন করে ভোট আয়োজনেরও বিধান ছিল।নবম সংসদের পর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করা হলে তাতে না ভোটের বিধান বাদ পড়ে।কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন গত ১০ জুন আরপিও সংশোধনের বিষয়ে ইসি সচিবালয়, বিভাগীয় আঞ্চলিক কর্যালয় এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তার কাছে মতামত চেয়ে চিঠি দেয়।সে অনুযায়ী নির্বাচন কর্মকর্তারা আরপিও’র বিভিন্ন ধারায় সংশোধনের প্রস্তাব পাঠিয়েছেন। প্রস্তাব পাঠাতে দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হলেও সেই সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও বেশ কিছু প্রস্তাব এসেছে।

ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, অনেকে পর্যালোচনা করে ভেবেচিন্তে প্রস্তাব পাঠাচ্ছেন। সবার প্রস্তাব একীভূত হওয়ার পর রাজনৈতিক দল সম্পৃক্ত কিছু পেলে ইসি দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করার কথা ভাবতে পারে।ইসি কর্মকর্তারা জানান, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংজ্ঞায় ‘সশস্ত্র বাহিনী’ ফিরিয়ে আনা, একাধিক প্রার্থী সমান ভোট পেলে লটারির নিয়ম বাদ দিয়ে নতুন করে ভোটাভুটির বিধান করা এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনের তালিকা দেওয়ার বিধান বাদ দেওয়ারও সুপারিশ এসেছে।ইসির উপ সচিব আবদুল অদুদ বলেন, যেহেতু ইসি এ সুযোগ দিয়েছে কর্মকর্তাদের, সেক্ষেত্রে আগামীতে প্রস্তাব পাঠালেও তা বিবেচনা করতে পারে। শিগগিরই আমরা সব প্রস্তাব সমন্বয় করে বিবেচনার জন্যে কমিশনে উপস্থাপন করব।