দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১২ অক্টোবর ২০১৫: বাংলাদেশের প্রায় ৫০ শতাংশ নারী জনপ্রতিনিধি মনে করেন স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয়ভাবে হওয়া উচিত নয়৷ ৪৮ শতাংশ মনে করেন, এ নির্বাচন দলীয়ভাবে হতে পারে৷ দুই শতাংশ এ নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি৷সোমবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এ সংক্রান্ত এক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়৷ এ গবেষণা পরিচালনা করে খান ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠন৷ এতে এক হাজার ১৮৬ জন নারী জনপ্রতিনিধির মতামত নেওয়া হয়৷অনুষ্ঠানে এই গবেষণা প্রতিবেদনের তথ্য উপস্থাপন করেন খান ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা মোরশেদ আলম৷ প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫১ দশমিক ৯ শতাংশ নারী জনপ্রতিনিধি তাঁদের পুরুষ সহকর্মীদের সহযোগিতা পাচ্ছেন না৷ ৩০ দশমিক ৩ শতাংশ নারী বলেছেন, পুরুষ সহকর্মীরা মুখে বললেও কাজের ক্ষেত্রে তাঁদের সহযোগিতা করেন না৷ মাত্র ৫ দশমিক ৭ শতাংশ বলেছেন তাঁরা কিছুটা সহযোগিতা পাচ্ছেন৷ শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ নারী জনপ্রতিনিধি বলেছেন তাঁরা পুরুষ সহকর্মীর কাছ থেকে পুরো সমর্থন পাচ্ছেন৷এ প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫৭ শতাংশ নারী জনপ্রতিনিধির পরিবারের কোনো না কোনো সদস্য রাজনীতির সঙ্গে জড়িত৷প্রতিবেদনে স্থানীয় বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে বা নীতি নির্ধারণী বিষয়ে নির্বাচিত নারী সদস্যদের সমান মূল্যায়ন করা, সাধারণ আসনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করাসহ ১৪টি সুপারিশ করা হয়েছে৷
খান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রোকসানা খন্দকারের সঞ্চালনায় আজকের এ অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েকজন নারী জনপ্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন৷ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হামিদা হোসেন, বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক জারিনা রহমান খান ও ডেমোক্রেসি ওয়াচের প্রধান নির্বাহী তালেয়া রেহমান৷ দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের পথ খুলতে আইন সংশোধনের পক্ষে সায় এলেও নারী জনপ্রতিনিধিদের অর্ধেক এ ব্যবস্থার বিপক্ষে মত দিয়েছেন বলে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান দাবি করেছে৷
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা খান ফাউন্ডেশনের গবষণা প্রতিষ্ঠান ‘অপরাজিতা’র এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধিদের অর্ধেকই দলীয় ব্যানারে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চান না৷দলীয় মনোনয়ন ও প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, সিটি করপোরেশন নির্বাচন আইন সংশোধনের খসড়ায় সোমবার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা৷প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয়৷বছরের শেষদিকে পৌরসভা এবং নতুন বছরের শুরুতে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আয়োজনের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে৷অবশ্য সরকারের এই চেষ্টা ‘নীল নকশা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্র’ হিসাবে দেখছে বিএনপি৷ সেমিনারে খান ফাউন্ডেশনের মনিটরিং অ্যান্ড রিপোর্টিং ম্যানেজার মোরশেদ আলম গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করে জানান, গত বছর অগাস্ট থেকে এ বছর জানুয়ারি পর্যন্ত পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধি ও সম্ভাব্য প্রায় ১২শ প্রতিনিধিদের ওপর এই জরিপ চালানো হয়৷
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, নারী জনপ্রতিনিধিদের ৫৭ শতাংশ সদস্য কোনো না কোনোভাবে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত৷জরিপে অংশগ্রহণকারী ৯০ শতাংশ মনে করেন, সাধারণ আসনে নির্বাচিত হলে তারা নিজেদের দায়িত্ব পালনের বেশি সুযোগ পেতেন৷৮০ শতাংশ মনে করেন স্থানীয় সরকারে নারীবান্ধব পরিবেশ রয়েছে৷