দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৮ অক্টোবর ২০১৫: সপ্তাখানেক ধরে চলা ভয়াবহ দাবানলে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যতম বড় মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়াসহ পাশ্ববর্তী কয়েকটি দেশের কয়েকটি অঞ্চল ঘন ধোঁয়ায় আচ্ছ্ন্ন হয়ে গেছে। এ দাবানল পুরো দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্যও হুমকি বলে মনে করছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো ইউদোদো দাবানল নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রত্যাশা করছেন বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম। পাশ্ববর্তী দেশ সিঙ্গাপুর পূর্বে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসলেও প্রেসিডেন্ট জোকো ইউদোদো তা প্রত্যাখ্যান করেন। কিন্তু এখন তিনি তা গ্রহণ করতেও রাজি আছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট ইউদোদো আরও বলেন তিনি রাশিয়া, মালয়েশিয়া এবং জাপানের কাছেও সাহায্যের আবেদন করেছেন।
ইন্দোনেশিয়ায় পরিবেশ আইন বহির্ভূতভাবে তেল ও পাম কাঠের কোম্পানীগুলো ইন্দোনেশিয়ার বোর্নীয় এবং সুমাত্রা দ্বীপের কিছু অংশে তাদের বাৎসরিক উচ্ছিষ্ট পোড়ানোয় এই দাবানলের সূত্রপাত হয়েছে। ইতোমধ্যে এরকম দশটি কোম্পানীর নাম অভিযোগপত্রে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। বোর্নীয় এবং সুমাত্রার ওই অঞ্চলের মাটি পিট কয়লা সম্বৃদ্ধ। ইন্দোনেশিয়া ছাড়াও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ যেমন সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডেও এই চর্চা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। এছাড়াও কৃষিজমিতে অবৈধভাবে আগুন জ্বালানোকেও এর অন্যতম একটি প্রধান কারণ হিসেবে দেখছেন বিশ্ব পরিবেশ বিশেষজ্ঞরা। ১৯৯৭ সালেও দাবানল ছড়িয়ে পড়ায় দেশটির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় ৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বিশেষজ্ঞদের মতে এবারের দাবানল সেটাকে ছাড়িয়েও যেতে পারে যদি জরুরীভিত্তিতে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ না করা হয়।ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ায় ইতোমধ্যে প্রায় দশ হাজারের মতো মানুষ শ্বাসপ্রশ্বাস জনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ওই অঞ্চলগুলো থেকে লোকজনকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য কাজ করছেন সরকার। প্রেসিডেন্ট ইউদোদো জানিয়েছেন, প্রায় বিশ হাজারের মত নিরাপত্তাকর্মী রাতদিন কাজ করে যাচ্ছেন দাবানল নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু এই সংখ্যা আরও বাড়াতে হবে। প্রেসিডেন্ট আরও জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে এমন বিশেষ বিমান দরকার যা একসাথে ১০-১৫ টন পানি বহন করতে পারে। কিন্তু বর্তমানে যেগুলো কাজ করেছে তারা সর্বোচ্চ দুই থেকে তিন টনের বেশি পানি বহনে সক্ষম নয়।এদিকে, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক ইন্দোনেশিয়ার সরকারকে ওই দশটি কোম্পানীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।