দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৬ অক্টোবর ২০১৫: মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররাজধানীর পল্টন থানায় নাশকতার তিন মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জামিনের মেয়াদ ২ নভেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত। ওই দিন মির্জা ফখরুলকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।মির্জা ফখরুলের করা আবেদনের শুনানি শেষে অবকাশকালীন চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন মঙ্গলবার এই জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আদেশ দেন। এ নিয়ে দ্বিতীয় দফায় মির্জা ফখরুলের জামিনের মেয়াদ বাড়ল।নাশকতার ওই তিন মামলায় মির্জা ফখরুলকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন গত ১৩ জুলাই ছয় সপ্তাহের জন্য বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি জামিনের মেয়াদ শেষে তাঁকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করারও নির্দেশ দেন আদালত।
ওই ছয় সপ্তাহ শেষ হওয়ার আগে মির্জা ফখরুল তাঁর জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ আগস্ট তাঁর জামিন আরও ছয় সপ্তাহ বাড়ান আপিল বিভাগ। এরপর দ্বিতীয় দফায় তাঁর জামিনের মেয়াদ বাড়ল।আদালতে মির্জা ফখরুলের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তাঁকে সহযোগিতা করেন আইনজীবী সগীর হোসেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোন্দকার দিলীরুজ্জামান।গত ৬ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে নাশকতার সাতটি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।পল্টন থানার তিন মামলায় মির্জা ফখরুলকে হাই কোর্টের দেওয়া ছয় সপ্তাহের জামিন স্বাস্থ্যগত অবস্থা বিবেচনায় ১৩ জুলাই আপিল বিভাগেও বহাল থাকে। জামিনের মেয়াদ শেষে তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।ওই মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ায় ফখরুলের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন আত্মসমর্পণের জন্য আরও আট সপ্তাহ সময় চেয়ে আবেদন করলে শুনানির জন্য চেম্বার আদালত ২৪ অগাস্ট তা আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেয়।
৩১ অগাস্ট আবেদনের শুনানি শেষে আদালতে আত্মসমর্পণের জন্য ফখরুলকে আরও ছয় সপ্তাহ সময় দেয় আপিল বিভাগ। ন। এর ফলে কার্যত তার জামিনের মেয়াদও আরও ছয় সপ্তাহ বাড়ে।এরপর তিন মামলায় আত্মসমর্পণের জন্য আরও আট সপ্তাহ সময় চেয়ে ফখরুলের আইনজীবীদের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার চেম্বার বিচারপতি এই আদেশ দিলেন।এই আবেদনে বলা হয়, ১৯ অক্টোবর সিঙ্গাপুরে চিকিৎসকের সঙ্গে নির্ধারিত সূচি রয়েছে। জামিনে মুক্তি পেয়ে গত ২৬ জুলাই চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যান মির্জা ফখরুল। সেখান থেকে ১১ অগাস্ট তিনি যুক্তরাষ্ট্র হয়ে ২১ সেপ্টেম্বর দেশে ফেরেন।মুক্তির আগে প্রায় ছয় মাস কারাতত্ত্বাবধানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে বিএনপির আন্দোলনের মধ্যে গত ৬ জানুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনের পর গ্রেপ্তার হন ফখরুল। এরপর নাশকতার সাতটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এর মধ্যে পল্টন থানায় গাড়ি পোড়ানো, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের মামলায় গত ১৬ এপ্রিল হাই কোর্ট থেকে ছয় মাসের জামিন পান মির্জা ফখরুল।এরপর পল্টন থানার দুটি এবং মতিঝিল থানার এক মামলায় ১৮ জুন পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল পর্যন্ত তাকে জামিন দেয় হাই কোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে গেলে সেখানেও ফখরুলের জামিন বহাল থাকে।আর পল্টন থানার ওই তিন মামলায় গত ২১ জুন হাই কোর্ট রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ফখরুলের জামিন মঞ্জুর করে।রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে গেলে আদালত পাঁচ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড করে ফখরুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দেয়। সে অনুযায়ী পরীক্ষা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদালতে প্রতিবেদন দেয়। ১৩ জুলাই তিন মামলায় জামিন লাভের পর মির্জা ফখরুল চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যান।