06-10-15-PM_ECNEC Meeting-3

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৬ অক্টোবর ২০১৫: ৭ শতাংশ মোট দেশজ উৎপাদনের(জিডিপি)প্রবৃদ্ধি অর্জন করা কঠিন, তবে আমরা এটা করে দেখাবো বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। সভায় অংশ নেওয়া একটি দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই সূত্রে জানা গেছে সভায় একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আশাবাদী বাঙালি পারবে, আমরা বিজয়ী জাতি। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আগে বলতো বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি হবে ৪ থেকে ৫ শতাংশ। তারা এখন সেই অবস্থান থেকে সরে এসে বলছে ৬ থেকে সাড়ে ৬ শতাংশ হবে। তবে আমি আশাবাদী, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির হার হবে ৭ শতাংশ। এটা আমরা করে দেখাবো শেখ হাসিনা আরও বলেন, এই কঠিনকে অর্জন করতে পারবে বাঙালি। কারণ, আমরা বিজয়ী জাতি। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীনতা পেয়েছি। বঙ্গবন্ধুকে বিজয়ের সাড়ে তিন বছরের মধ্যে হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন। পঁচাত্তরে তাকে হত্যা না করা হলে বাংলাদেশ অনেক আগেই আরও অনেক উন্নতি করতো।

বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার লক্ষ্য, বাংলাদেশকে মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত করা। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে ছোট করে দেখা, এটা আমাকে সব সময় কষ্ট দিতো। বাংলাদেশকে নিয়ে নেতিবাচক বললে আমি সহ্য করতে পারি না। ৫৫ হাজার বর্গমাইলে ১৬ কোটি মানুষ বাস করে। তাদের মুখে খাবার দিচ্ছি, এটা সহজ কথা নয়। গরিব মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার লক্ষ্যকে নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি। এজন্য সবার কাছে দোয়া চাচ্ছি। তিনি বলেন, আমরা লাকি। কারণ, প্রবৃদ্ধি বাড়ছে, কিন্তু মূল্যস্ফীতি বাড়েনি। মতিয়া আপাকে (কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী) নিয়ে ১৯৮১ সালে েেদশ ঘুরে বেড়াতাম, গ্রামেও ঘুরে বেড়াতাম। তখন মানুষকে পর্যবেক্ষণ করতাম। দেখতাম, গায়ে পোশাক আছে কি-না। তখন মানুষের গায়ে একটু কাপড় থাকতো, পায়ে স্যান্ডেলও থাকতো না। এখন গ্রামে অনেক উন্নয়ন কাযর্ক্রম পৌঁছে গেছে। এখন গ্রামেও আয় বৈষম্য নেই। প্রতিটি গ্রামই একেকটি ছোট ছোট শহর হবে। গ্রামে যাবে বিদ্যুৎ সেবা। ডিজিটালাইজড হবে গ্রামগুলো।

জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক চ্যাম্পিয়নস অব দি আর্থ’ এবং তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক আইসিটি সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার পাওয়ায় একনেক সভায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানানো হয়।সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী ে শেখ হাসিনা বলেন, এ অর্জন আমাদের সবার। এ অর্জন আপনাদেরও। এ অর্জন দেশবাসীকে উৎসর্গ করছি। আমরা দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞ। এমডিজি কার্ক্রম যখন শুরু হয়, তখনও আমি প্রধানমন্ত্রী ছিলাম, এসডিজি’র সময়ও আছি। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, সরকারের ধারাবাহিকতা না থাকলে কাঙ্খিত অর্জন করা সম্ভব নয়।এদিকে, ২ হাজার ৪৭৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেকের বৈঠকে প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ২ হাজার ৪৭৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩টি নতুন ও একটি সংশোধিত প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সরকারি অর্থায়ন ১ হাজার ৮৯ কোটি ৫৪ লাখ ও প্রকল্প সাহায্য ১ হাজার ৩৮৫ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।অন্য অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হল- বিশ্বখাদ্য কর্মসূচির সহায়তায় দুযোর্গ ও জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাবসহন প্রকল্প।প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সংশোধিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৭১৫ কোটি ৩৭ লাখ। আগে ব্যয় ধরা হয়েছিলো ১ হাজার ৩৮ কোটি টাকা।সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ১৫৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্গত তিতাস নদী (আপার) পুনর্খনন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।পদ্মা নদীর ভাঙন হতে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ ও সংলগ্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রক্ষা প্রকল্প। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৮৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।এছাড়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নে ফোর টায়ার জাতীয় ডাটা সেন্টার স্থাপন নামে একটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১হাজার ৫১৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা।