Jhenidah Jhapan khala Photo 05-10-15 (7)
দৈনিকবার্তা-ঝিনাইদহ, ০৫ অক্টোবর ২০১৫:
বিষধর সাপকে বশে আনার এই খেলা মানুষের জন্যে সবসময়ই আকর্ষণীয়। তার ওপর যদি একের পর এক সাপ এসে প্রদর্শন করে তাদের নানা কলাকৌশল, তবে তো কথাই নেই। ঠিক এমনই এক ব্যতিক্রমী আয়োজন হয়ে গেলো ঝিনাইদহের শৈলকুপায়। প্রতি বছরের ন্যায় কাঁচেরকোল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ্যাড. সালাহ উদ্দিন জোয়ার্দ্দার মামুন এর আয়োজনে এবারও বেণীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে দিনব্যাপী আয়োজিত এই ঝাপান খেলা দেখতে জড়ো হয়েছিলো শত শত মানুষ। বাদ্যের তালে, দুলে দুলে ঝুড়ি থেকে বের হয়ে আসে ভয়ংকর গোখরা। উপস্থিত শত শত দর্শকের করতালি একটুও বিচলিত করতে পারে না ফণা তুলে এই নাচিয়েকে।

মনিবের ইশারা ইঙ্গিত তাকে ঠিক বুঝিয়ে দিয়েছে, শুধু মানুষকে আনন্দ দেয়ার খেলা নয় বরং আজ মর্যাদার লড়াই। ১১ সাপুড়ে দলের অর্ধ শতাধিক সাপের মধ্যে নিজেকে সেরা প্রমাণ করতে প্রতিটি সাপ প্রদর্শন করে নিজেদের আকর্ষণীয় কসরত। আর এই দুর্লভ দৃশ্য দেখতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন দর্শনার্থীরা। ঈদের আনন্দ ভাগা-ভাগি করে নিতে শৈলকুপা উপজেলার বেণীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় এই মনোমুগ্ধকর সাপ খেলার আয়োজন করা হয়। আর প্রতিযোগিতামূলক এই খেলায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসেন নামকরা সব সাপুড়ে। অনেকে জীবনে প্রথম আবার অনেকে অনেক দিন পর দেখছেন এ খেলা। এই ঝাপান খেলা দেখে খুবই আনন্দিত দর্শক।

Jhenidah Jhapan khala Photo 05-10-15 (5)

কাঁচেরকোল ইউনিয়নের উত্তর মির্জাপুর গ্রামের কলেজ ছাত্র পিন্টু হোসেন জানান, প্রতিবছর এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এই ঝাপান খেলার আয়োজন করে। ঈদের এই আনন্দ সকলে ভাগা-ভাগি করে নিতে এই আয়োজন। আর সাপ খেলা দেখে তিনি খুবই আনন্দিত। একই ইউনিয়নের বৃত্তিপাড়া গ্রামের তুলিন জানান, শুধু সাপ খেলাই নয়। হাজার হাজার মানুষ এখানে জড়ো হয়েছে। অনেকের সাথে দেখা হচ্ছে, কথা হচ্ছে। এক কথায় এই সাপ খেলাকে কেন্দ্র করে একটি মিলন মেলা পরিণত হয়েছে।খেলায় অংশ নেওয়া ঝিনাইদহের সাপুড়ে লিটন জানান, ছোট বেলা থেকে এই ঝাপান খেলা করে আসছি। মানুষকে আনন্দ দেওয়ায় মুল উদ্দেশ্যে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝাপান খেলায় অংশ নেন তিনি। এছাড়াও এই খেলা করে করেছেন বাড়ী ও জমি।

কচুয়া পুলিশ ক্যাম্পের এ এস আই নাসির উদ্দিন জানান, মানুষকে আনন্দঘন পরিবেশে রাখতে পারলে সমাজ থেকে অপরাধ কমে আসবে, সমাজের উত্তরোত্তর উন্নতি হবে। তাই বাংলাদেশের প্রতিটি ইউনিয়নের এ ধরনের উৎসবের আয়োজন করা উচিত।এ ব্যাপারে আয়োজক কাঁচেরকোল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ্যাড. সালাহ উদ্দিন জোয়ার্দ্দার মামুন বলেন, গ্রাম বাংলার হারানো এই ঐতিহ্য বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে এই খেলার আয়োজন করেছেন তিনি। এছাড়াও সমাজ থেকে সকল প্রকার অন্যায় অপরাধ মুছে ফেলে একটি মডেল ইউনিয়ন গড়ার জন্য এই ঝাপান খেলার আয়োজন। বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রামে এই ঝাপান খেলার আয়োজন করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।