দৈনিকবার্তা-কুড়িগ্রাম, ০৪ অক্টোবর ২০১৫: আনন্দের যেন শেষ নেই।প্রতিটি পাড়া মহল্লায় চলছে খুলি বৈঠক। কিভাবে পরম কাঙ্খিত অতিথিকে বরণ করে নয়ো যায়। অনেকে জানালেন, আমাদের চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। শুধু এক নজর ছুঁয়ে দেখতে চাই আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে। ছিটমহলের মানুষের মাঝে ৬৮ বছরের অবরুদ্ধ জীবনে মুক্তির আলো ছড়িয়ে দিলেন তারই মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার স্বাদ এবং মানুষ হিসেবে পরিচয় দেয়ার অধিকার পেয়েছে সদ্য বিলুপ্ত বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ১১১টি ছিটমহলের মানুষ।
এ অবদান শেখ হাসিনার। আমরা তার কাছে চিরকৃতজ্ঞ। এ কথাগুলো বললেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর অভ্যন্তরে দাশিয়ারছড়ার অধিবাসী গোলাম মোস্তফা। একই রকম অনুভূতি দাশিয়ারছড়ার আবালবৃদ্ধবনিতার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১৫ অক্টোবর দাশিয়ারছড়ায় আসছেন। এজন্য ফুলবাড়ী উপজেলা শহর থেকে শুরু করে দাশিয়ারছড়ায় চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছে দ্রুত গতিতে। সর্বত্র চলছে সাজ সাজ রব। সরজমিনে দেখা যায় কালিরহাট বাজারে আনন্দের বন্যা। সবার মুখে মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা। ফসলের মাঠ, চায়ের দোকান, মুদি দোকানসহ গাছের নীচে বসে লোকজনের একই কথা, কোন দিন আসছেন তিনি।
শেখ হাসিনা এলেই ঘোষণা হবে দাশিয়ারছড়া মুজিব-ইন্দিরা ইউনিয়ন পরিষদ। তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একটি মাদ্রাসা, একটি উচ্চ বিদ্যালয়, স্বাস্থ্য কমিউনিটি ক্লিনিকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবে এবং দাশিয়ারছড়ার মানুষের ভাগ্য বদলের আশারবাণী শোনাবেন এমন আশায় বুক বেঁধে আছেন সবাই। রাস্তা-ঘাট নির্মাণ,নীল কোমল নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ করে যোগাযোগের বৈপ্লবিক পরিবর্তন হবে। জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন, পুলিশ সুপার তবারক উল্লাহ্ দাশিয়ারছড়ায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্ভাব্য আগমন উপলক্ষে জনসভার স্থান, কিভাবে তিনি দাশিয়ারছড়ার কালিরহাটে পৌঁছাবেন এসব বিষয়ের খোঁজ খবর নেন। ইতোমধ্যে দাশিয়ারছড়া পরিদর্শন করেন মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব শেলীনা আফরোজ, সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ফারুক জলিল। দাশিয়ারছড়ার অধিবাসী নুর আলম মাস্টার জানালেন, দআমরা কখনো ভাবিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দাশিয়ারছড়ায় আসবেন। তিনি জননী। তা না হলে এখানে আসবেন কেন? অবাক লাগছে। তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেই এ সাহসী পদক্ষেপ। তার বেলায় সম্ভব আমাদের মতো অবহেলিত মানুষের পাশে এসে সুখ-দুঃখের সাথী হওয়া। তাকে কি ভাবে শ্রদ্ধা জানাবো তা আমরা ভেবে পারছি না।
কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অনার্সের রসায়ণ বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র, মো. রবিউল ইসলাম রবি জানান, আমি আমার ঠিকানা গোপন করে কলেজে ভর্তি হয়েছি। আমার আনন্দের শেষ নেই। আমি গর্বিত। তার কাছে দাবি জানাই, তিনি দাশিয়ারছড়ায় আসলে আমরা যারা ছিটমহলের ছাত্র রয়েছি তাদের যেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা ভিত্তিক ভর্তি হওয়ার সুযোগ করে দেন। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হিসেবে চাকরি প্রাপ্তিতেও যেন কোটা সংরক্ষণ করা হয়। দাশিয়ারছড়ার অধিবাসী ঢাকার গার্মেন্ট কর্মী সাবিত্রি রানী জাগো নিউজকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দাশিয়ারছড়ায় আসছেন, আমাদের খোঁজ-খবর নিচ্ছেন এর চেয়ে আনন্দ আর কী হতে পারে। আমার অনুভূতি বুঝাতে পারব না। ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সভাপতি মইনুল হক জানান, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দাশিয়ারছড়ায় আসবেন জেনে খুবই খুশি হয়েছি। তিনি যেন আমাদের সুখে দুখে আমাদের পাশে থাকেন। ইতোমধ্যেই দাশিয়ারছড়ার পাড়া মহল্লায় তার আগমনের কথা ছড়িয়ে পড়ায় তাকে এক নজর দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষার প্রহর গুণছেন এখানকার মানুষ।