দৈনিকবার্তা-হিলি, ০৩ অক্টোবর ২০১৫: হিলি কাষ্টমস সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের উদাসিনতার কারনে ৪ বছরেও সাধারন নিলাম সম্পুর্ন হলো না। আর এ কারনে সরকার হারাতে বসেছে রাজস্ব। অভিযোগ উঠেছে কোটি টাকার পন্যের রাজস্ব ফাঁকির।বিভিন্ন আইন শৃংখলা বাহিনীর আটককরা মালামাল হিলি কাষ্টমস‘এ জমা করা হয়। আর এই জমাকৃত মালামাল লট তৈরী করে নিলাম দেওয়ার প্রকৃয়া করেন হিলি কাষ্টমস কতৃপক্ষ। এক পর্যায়ে ২০১২ সালে প্রায় এক কোটি টাকার নানা পন্যসামগ্রী নিয়ে তৈরী করা হয় একটি নিলাম লট। দু-দু’বার বাতিল হয় নিলামটি। অজানা কারনে দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ায় বন্ধ থাকে নিলাম কার্যক্রম। আজ ৪ বছর পেরিয়ে যেতে বসেছে। কিন্তু কি অবস্থায় রয়েছে ওই সব নিলামের পন্য সামগ্রীগুলো ?
এব্যপারে সাবেক হিলি কাষ্টমস গুদাম কর্মকর্তা ইনসপেক্টর অনিল চন্দ্র রায় বলেন, সে সময়ে শাড়ী কাপড়গুলো প্রধান মন্ত্রীর ত্রান ভান্ডারে জমা করা হয়েছে। নিলামের জন্য যে লট তৈরী করা হয় তাতে ছিলো, ষ্টিল সামগ্রী, কসমেটিকসহ প্রসাধনী সামগ্রী, ইমিটেশন জ্রুয়লারী সামগ্রী, মটরসাইকেলের খুচরা যন্ত্রাংশ, মোটর গাড়ীর খুচরা যন্ত্রাংশ, বাইসাইকেলের খুচরা যন্ত্রাংশ, ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, ৫র্৫ এলসিডি টিভি, র্যাপিং পেপার, তামা, পিতল, কাঁশা, লোহার ভাংরি, লৌহজাত সামগ্রী, শার্ট ও প্যান্ট পিচ, কাপড়জাত পন্যসহ ও নানা প্রকারের পন্য। ধ্বংশজাত কোনই পন্য ছিলোনা ওই লটটিতে।
নিলাম ডাকে অংশগ্রহনকারীগন অভিযোগ করে জানিয়েছেন, গত ০৮/০৪/১২ থেকে ৩১/০৮/১২ তারিখ পর্যন্ত ২৬৪/১২ থেকে ২২০৮/১২ পর্যন্ত ৯০৫ টি জিআর মামলার ৫৬ টি সিরিয়ালের পন্য নিয়ে লট নং-০৮/১২ তৈরী করা হয়। ক্যাটালগ-০১ (অপরিবর্তিত) ওই লটের পন্যের প্রথম বারে সর্বোচ্চ ডাক ছিলো ৬০ লাখ টাকা। সেই সময় ওই টেন্ডার ফেলেছিলেন মেসার্স রাসেল এন্ড ব্রাদার্স। কর্তপক্ষ নিলাম ডাক বাতিল করে ২য় বার নিলাম দেন। সেটিও বাতিল হয়ে যায়। তারা বলছেন, বর্তমানে মালামালের প্রায় শতকরা ৭৫ ভাগ পন্যের গুনগতমান নষ্ট হয়ে গেছে। বিশেষ করে কসমেটিকস্ ও অন্যান্য প্রসাধনী সামগ্রীর মেয়াদকাল উর্ত্তির্ন হয়েছে অনেক আগেই। আর যে গুলো রয়েছে সে সব ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এর পর অনেক পন্য দরপত্র গ্রহনের মাধ্যমে নিলাম হয়েছে। কিন্তু চার বছরেও নিলামডাক হয়নি ০৮/১২ লর্টটির। এত সরকার হারিয়েছে কোটি টাকার পন্যের রাজস্ব।
এদিকে গুদাম কর্মকর্তা ইনসপেক্টর অনিল চন্দ্র রায় অন্যত্র বদলি হলে দায়িত্ব নেন ইনসপেক্টর নুর ইসলাম এর পর ইনসপেক্টর মরহুম আমিনুল ইসলাম, কিছুদিন গুদাম কর্মকর্তা‘র দায়িত্বে থাকেন ইনসপেক্টর সিদ্দিকুর রহমান। দায়িত্ব পালন কালে তার সময়ের নিস্পত্তিকৃত মামলার পন্য নিলাম দেন। এর পরে দায়িত্ব গ্রহন করেন ইনসপেক্টর নীল রতন বিশ্বাশ। এখন তিনি সাধারন নিলাম নিয়ে বেশ ব্যাস্ত সময় পার করছেন। ২০১২ সালের ০৮ নং লট ও মরহুম আমিনুল ইসলাম এর সময়ের মালামালের হিসাব ইনসপেক্টর নীল রতন বিশ্বাশের হাতেই রয়েছে। বর্তমান দায়িত্বরত ইনসপেক্টর নীল রতন বিশ্বাশকে ওই ০৮/১২ লটের পন্য গুলো কি অবস্থায় রয়েছে ও আদৌকি পুনরায় নিলাম হবে কি না এ ব্যাপারে জিঞ্জাসা করলে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হন নি। বরং তিনি উত্তেজিত হয়ে উল্টো প্রশ্ন রাখেন রাজস্ব ক্ষতি হবে, কি না হবে – এ নিয়ে ভাবনা ভাববে কাষ্টমস কতৃপক্ষ, আপনাদের এতো মাথা ব্যথা কেন ?
এব্যপারে হিলি কাষ্টমস সহকারি কমিশনার মতিয়ুর রহমান বলেন, তিনি সবেমাত্র জোগদান করেছেন। মরহুম আমিনুল ইসলাম এর সময়ের মালামালের হিসেব সঠিক করতে প্রিভেনটিভ টিম কাজ করেছেন। আর ২০১২ সালের ০৮ নং লট বিষয়ে তিনি খোঁজ খবর নেবেন বলে তিনি জানান। এব্যপারে তিনি উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে অবহিত করবেন।