দৈনিকবার্তা-সিলেট, ১অক্টোবর ২০১৫ : সিলেটের কুমারগাঁওয়ে শিশু সামিউল আলম রাজন হত্যা মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়েছে।বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা ৫ মিনিটে সিলেট মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধার আদালতে মামলার বাদীসহ দুইজনের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয় বলে জানান আদালতের পিপি মফুর আলী।এরা হলেন বাদী জালালাবাদ থানার সাময়িক বরখাস্ত এসআই আমিনুল ইসলাম ও রাজনের বাবা আজিজুর রহমান।রাজনের মা লুবনা আক্তারের সাক্ষ্য দেওয়ার কথা থাকলেও অসুস্থ হয়ে পড়ায় তার সাক্ষ্য গ্রহণ পরে হবেবলে জানান মফুর আলী।গত ২২ সেপ্টেম্বর ১৩ আসামির বিচার শুরুর আদেশ দিয়ে বৃহস্পতিবার সাক্ষ্য গ্রহণের দিন রেখেছিল এই আদালত।আগামী ৪, ৭, ৮, ১১, ১২, ১৩, ১৪ ও ১৫ অক্টোবরও সাক্ষ্য নেওয়া হবে বলে জানান পিপি।মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৩৮ জনের জাবানবন্দি শুনবে আদালত।গ্রেপ্তার ১০ আসামি সাক্ষ্য গ্রহণের সময় আদালতে হাজির ছিলেন বলে পিপি মফুর আলী জানান।আসামিরা হলেন- সদর উপজেলার শেখপাড়ার বাসিন্দা কামরুল ইসলাম, তার ভাই মুহিত আলম, আলী হায়দার ও শামীম আহমদ; পাভেল আহমদ, ময়না চৌকিদার, রুহুল আমিন, তাজউদ্দিন আহমদ বাদল, দুলাল আহমদ, নুর মিয়া, ফিরোজ মিয়া, আছমত উল্লাহ ও আয়াজ আলী।
এদের মধ্যে পলাতক কামরুল, শামীম ও পাভেলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশিত হয়েছে।গত ৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁওয়ে চুরির অভিযোগ তুলে খুঁটিতে বেঁধে ১৩ বছরের রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকারীরাই নির্যাতনের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিলে সারাদেশে ক্ষোভের সঞ্চার হয়।ঘটনার দেড় মাসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে গত ১৬ অগাস্ট ১৩ জনকে আসামি করে মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক সুরঞ্জিত তালুকদার।গত ২২ সেপ্টেম্বর ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এছাড়া মুহিত আলম, ময়না চৌকিদার, শামীম আহমেদ ও তাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় লাশ গুম চেষ্টায় পৃথক অভিযোগ গঠন করা হয়।রাজন হত্যার পরদিনই কামরুল সৌদি আরবে পালিয়ে যান। পরে সেখানে তিনি ধরা পড়েন। বর্তমানে সেখানে তিনি পুলিশ হেফাজতে আছেন।হত্যাকাণ্ডের পর মুহিত আলমের স্ত্রী লিপি বেগম ও শ্যালক ইসমাইল হোসেন আবলুছকে গ্রেপ্তার করা হলেও অপরাধে জড়িত থাকার প্রমাণ না পাওয়ায় তাদের অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।কামরুলের পালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে পুলিশের সহযোগিতার অভিযোগও ওঠে। অভিযোগ ওঠে রাজনের বাবাকে হয়রানিরও। অভিযোগের তদন্ত শেষে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। প্রত্যাহার করা হয় জালালাবাদ থানার ওসিকেও।