দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫: রাষ্ট্রের বিরুদ্ধাচারণের মামলায় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া যুক্তিসঙ্গত হয়নি’ বলে মনে করছে তার দল বিএনপি।বুধবার দুপুরে নয়া পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মুখপাত্র আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা কোনোভাবে যুক্তিযুক্ত হয়নি। আমরা এই প্রক্রিয়ার বিরোধিতা করছি এবং নিন্দা জানাচ্ছি।বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি মশিউর মালেক গত বছরের ১৯ অক্টোবর দণ্ডবিধির ১২৩ এর (ক) ধারায় রাষ্ট্রের বিরুদ্ধাচারণের অভিযোগে মুখ্য মহানগর হামিক আদালতে তারেকের বিরুদ্ধে এই মামলা করেন।মামলার আর্জিতে বলা হয়, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর লন্ডনের ইয়র্ক হলের এক সভায় জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসেবে অভিহিত করে বক্তৃতা করেন তারেক, যা মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ।বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধুকে পাকবন্ধু বলেন জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার বড় ছেলে। এ ধরনের কটূক্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকে বিকৃত করার সামিল বলে আর্জিতে উল্লেখ করা হয়।বশকিছু মামলায় পরোয়ানা মাথায় নিয়ে তারেক বর্তমানে পরিবারের সঙ্গে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন।
রাষ্ট্রের বিরুদ্ধাচারণের ওই মামলায় গত রোববার আদালতে তদন্ত প্রতবেদন দেয় গোয়েন্দা পুলিশ।সংবাদ সম্মেলনে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, সরকার হয়রানির জন্যই তারেকের বিরুদ্ধে এই মামলার ব্যবস্থা করেছে বলে বিএনপি মনে করে। তারেক রহমান যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা তিনি নিজে থেকে কিছু বলেননি। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর পরিস্থিতির ওপর প্রকাশিত বিভিন্ন নিবন্ধ, পুস্তক ও রেফারেন্স দিয়ে বক্তব্য রেখেছিলেন।এর পরিপ্রেক্ষিতে যদি মামলা হয় ও সেডিশন চার্জ গঠন হয়, তাহলে ওইসব নিবন্ধ ও পুস্তকের লেখকের বিরুদ্ধেই হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল।রিপন অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার নয় বলেই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা না করে প্রশাসনিকভাবে হয়রানি ও আইনের বেআইনি প্রয়োগের অপচেষ্টা করছে।সরকারকে গভীরভাবে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার কথা’ ভাবার আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, তারেক রহমানের বক্তব্যের বিপরীতে সংশ্লিষ্টদের কাজ থেকে রাজনৈতিক যুক্তি, প্রতিবাদ ও সমালোচনা ও বিতর্কই প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু এটা না হয়ে বিষয়টি আইনের অঙ্গনে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্য তাকে হয়রানি করার শামিল।
তিনি বলেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বক্তৃতার কিছু অংশকে কেন্দ্র করে সরকারের চার্জ গঠন করেছেন। বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে আনা অভিযোগের মামলায় ডিটেক্টিভ ব্রাঞ্চের সেডিশন’ এর অভিযোগ গঠন করায় আমরা বিস্মিত ও উদ্বিগ্নও।বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, তারেক রহমান যে বক্তব্য দিয়েছেন- তা তিনি নিজে থেকে কিছু বলেননি। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর পরিস্থিতির উপর প্রকাশিত বিভিন্ন নিবন্ধ, পুস্তক এবং রেফারেন্স দিয়ে তার বক্তব্য রেখেছিলেন। এর প্রেক্ষিতে যদি মামলা হয় ও সেডিশন চার্জ গঠন হয় -তাহলে ওসব নিবন্ধ ও পুস্তকের লেখকদের বিরুদ্ধেই হওয়া বাঞ্ছনীয় ছিল। কিন্তু তা না করে বিএনপির তারেক রহমান এর বিরুদ্ধে সেডিশন এর চার্জ আনা কোনোভাবেই যুক্তিসংগত নয়।
তিনি বলেন, আমরা আশা করবো, সরকার রাজনীতিকে রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করবেন এবং বিভাজনের রাজনীতির অবসানকল্পে সকল বিতর্কর অবসানে হিংসাশ্রয়ী পথে নয়, দমন-নিপীড়ণের পথে নয়, মামলা-হামলার মাধ্যমে নয়, জাতীয় ঐক্যর প্রক্রিয়ার কথা গভীরভাবে ভাববেন।এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, চৌধুরী কামাল ইবেন ইউসুফ, বেগম সেলিমা রহমান, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, যুব বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-দপ্তর সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ।