দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫: শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার ক্ষেত্রে গত কয়েক বছরে কারিগরি শিক্ষার ব্যাপক প্রসার বিরাট ভূমিকা রেখেছে।তিনি বলেন,বিশ্বে স্বীকৃতি অর্জন করতে শিক্ষার্থীদের প্রথাগত শিক্ষার সাথে সমন্বয় রেখে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে।নুরুল ইসলাম নাহিদ বুধবার সকাল ১১টায় ঢাকার শ্যামলীতে দাতব্যসংস্থা আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত আঞ্জুমান মোখলেছুর রহমান পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের সভাপতি মোঃ শামসুল হক চিশতীর সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, সংস্থার প্রশাসন ও সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রদূত এম.আর ওসমানী এবং সংস্থার নির্বাহী পরিচালক সাবেক সচিব কাজী আবুল কাশেম বক্তৃতা করেন।শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দায়িত্ব গ্রহণের সময় দেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থী ভর্তিও হার এক শতাংশেরও কম ছিল। গত কয়েক বছরে বেশ কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে এ হার বর্তমানে শতকরা ১০ভাগে উন্নীত হয়েছে।তিনি বলেন আগামী ২০২০ সাল নাগাদ কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থী ভর্তির হার ২০ শতাংশে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে এ বছর থেকে দেশে সরকারি ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে পর্যায়ক্রমে নতুন ১লাখ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে। সময়োপযোগী নতুন নতুন কোর্স চালু করাসহ আরো ২৩টি নতুন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের ফলে গত কয়েক বছরে দেশে একটি প্রযুক্তি নির্ভর দক্ষ জনশক্তি গড়ে উঠেছে, বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে, কলকারখানায় উৎপাদন বেড়েছে, সারাবিশ্ব আজ বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।তিনি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে উন্নত দেশ হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন করতে হলে মোট শিক্ষার্থীর অর্ধেক কে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরিসহ অবকাঠামো গড়ে তুলতে সরকারের পাশাপাশি এনজিও, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ধণাঢ্য ব্যক্তিবর্গকে এগিয়ে আসতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, গতানুগতিক সার্টিফিকেট সর্বস্ব শিক্ষার মাধ্যমের নিজের উন্নয়ন বা দেশের উন্নয়ন কোনটিই সম্ভব নয়, একথা আজ আমাদের যুবসমাজ বুঝতে পেরেছে। বিশ্বায়নের এ যুগে আমাদের মতো জনশক্তি রপ্তানিকারক দেশে কারিগরি শিক্ষা আজ যুব সমাজকে বেশি করে আকৃষ্ট করছে। তিনি বলেন, কম্পিউটার, তথ্যপ্রযুক্তি, মোবাইল ফোন ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্সের মতো বিভিন্ন কোর্স তরুণদের জন্য সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। এ সম্ভাবনা যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারলেই বাংলাদেশে ১৯৪১ সালের অনেক আগেই বর্তমানের মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত বিশ্বের তালিকায় নাম লেখাতে পারবে। আর সেই লক্ষ্যে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার।এলাকার এক দানশীল ব্যক্তি মোখলেছুর রহমানের দান করা ভবনে গড়ে উঠা আঞ্জুমান মোখলেছুর রহমান পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রতি বছর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স, অটোমোবাইল ও ইলেক্ট্রিক্যাল ডিপ্লোমা কোর্সে প্রতি বছর ২০০ ছাত্রছাত্রী ভর্তি করবে।