দৈনিকবার্তা-টাঙ্গাইল, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৫: জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড.মিজানুর রহমান বলেছেন, দায়ী পুলিশদের শুধু প্রত্যাহার করে নেয়া যথেষ্ট নয়৷ তাদেরকে মানুষ হত্যার জন্য ফৌজদারি অপরাধে দন্ডিত করে বিচার করতে হবে৷ রাষ্ট্র যে আইনের শাসনে বিশ্বাস করে আমরা সেটা দেখতে চাই৷টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে গত শুক্রবার পুলিশের গুলিতে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জানাতে ও হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়ে তিনি সোমবার সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ কথা বলেন৷তিনি আরো বলেন, পুলিশিং যে ব্যবস্থা তা অযৌক্তিক, অগ্রহণযোগ্য ও পুলিশ ঔদ্ধত্যের পরিচয় দিয়েছে৷ অস্ত্র হাতে থাকলেই যদি এভাবে ব্যবহার করা হয়, তাহলে একজন পুলিশ ও সন্ত্রাসীর সঙ্গে কোন তফাত্ থাকে না৷ আমরা কোন অবস্থাতেই পুলিশকে সন্ত্রসীর চেহারায় দেখতে চাই না৷ সুতরাং যারা নিরীহ জনগণের উপর গুলি বর্ষণ করেছে েেকান অবস্থাতেই তা মেনে নেয়া যায় না৷ ওইদিন আমি যদি ঘটনাস্থলে থকলে প্রতিবাদ করতাম৷ কোন বিবেক সম্পন্ন মানুষ এর প্রতিবাদ না করে পারে না৷ যারা বিবেক সম্পন্ন মানুষ তারা সেদিন প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলেন৷ এই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের উপর এহেন গুলি বর্ষণ কেন ? তিনি আরও বলেন, মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নেমেছে৷ মাতৃত্বের যে অবমাননা করা হয়েছে বাংলাদেশের মাটিতে কোন অবস্থাতেই যেন তাদের পক্ষ অবলম্বন করা না হয়৷ যে অপরাধ হয়েছে তার যথাযথ বিচার হতে হবে৷ তাহলেই জনগণের মাঝে আবার শান্তি ফিরে আসতে পারে৷উল্লেখ্য,গত ১৫ সেপ্টেম্বর কালিহাতীর ছাতুটিয়া গ্রামে রফিকুল ইসলাম রোমা ও তার ভগি্নপতিসহ কয়েকজনে মিলে বাড়িতে ডেকে এনে ঘাটাইল থানার আলামিন ও তার মাকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করে৷
এ ঘটনায় এলাকাবাসী দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে শুক্রবার ঘাটাইলের হামিদপুর বাজারে ও কালিহাতী সদরে বিক্ষোভ মিছিল বের করে৷ মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে চারজন নিহত হন৷ গুলিবিদ্ধ হন আরও ৭ জন৷নিহতরা হলেন- ঘাটাইল উপজেলার সাতুটিয়া গ্রামের ফারুক হোসেন (৩২), কালিয়া গ্রামের আজাহারের ছেলে শামীম (৩৫), কালিহাতী সদরের রবি দাশের ছেলে শ্যামল দাস (১৫) ও বেতডোমা গ্রামের ফারুক হোসেনের ছেলে রুবেল হোসেন (২০)৷এ ঘটনায় কালিহাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম ও ঘাটাইল থানার (ওসি) মোখলেছুর রহমান ছাড়া সাত পুলিশ সদস্যকে টাঙ্গাইল পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে৷এ ঘটনা নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যে পুলিশের ঊধর্্বতন কর্মকর্তারা শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে গুলিবর্ষণকারী পুলিশ সদস্যদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন৷এরপর পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখতে পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়৷ অন্যদিকে পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে প্রায় ৯০০ জনকে আসামি করে দুটি মামলা হয় থানায়৷নিহতদের পরিবারের সদস্যরা এ ঘটনার জন্য পুলিশকেই দায়ী করছেন৷ তবে পুলিশ বাহিনীর ভারপ্রাপ্ত প্রধান মোখলেছুর রহমান বলেছেন, সংঘর্ষের পেছনে তৃতীয় কোনো বিষয় থাকতে পারে বলে তিনি মনে করছেন৷