দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫: ৮ম বেতন কাঠামোতে গ্রেড ও টাইম স্কেল পুনর্বহাল, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা বাস্তবায়ন, ১০ গ্রেডে প্রধান শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করাসহ বিভিন্ন দাবিতে লাগাতার কর্মবিরতির হুমকি দিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা।রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক রিয়াজ পারভেজ এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।তিনি বলেন, আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হলে দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগামী ৩ থেকে ৫ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করা হবে।এরপরও দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামী ৬ অক্টোবর থেকে লাগাতার কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দিয়ে রিয়াজ বলেন, নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার দায়িত্ব বর্জন করতে আমরা বাধ্য হব।
লাগাতার কর্মবিরতি চলাকালে ১ থেকে ১০ অক্টোবর শিক্ষকদের বসার চেয়ার কালো কাপড়ে ঢেকে চেয়ার বর্জন’ কর্মসূচিও ঘোষণা করেন শিক্ষক নেতা রিয়াজ।প্রধান শিক্ষকদের জাতীয় বেতন স্কেলের দশম গ্রেডে অন্তর্ভুক্ত করাসহ তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা ঘোষণা করে প্রত্যেক শিক্ষকের নামে আলাদা আদেশ জারির দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।এছাড়া নতুন নিয়োগ বিধি প্রণয়ন করে যোগ্যতা ও বিভাগীয় পদোন্নতির মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক থেকে মহাপরিচালক পর্যন্ত শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির বিধান চালুর দাবি রয়েছে প্রধান শিক্ষকদের।প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কিত বিভাগীয় নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকদের সাংগঠনিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা এবং অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনঃবহালেরও দাবি জানিয়েছেন তারা।
আগামী ৩০সেপ্টেম্বরের মধ্যে এসব দাবি বাস্তবায়নে শিক্ষক নেতারা বেতন বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। দেড় বছর আগে পদমর্যাদা বাড়লেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এখনও নতুন স্কেলে বেতন পাচ্ছেন না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা। দেশে ৬৩ হাজার ৮৬৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও প্রায় ২৫ হাজার বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ ফাঁকা রয়েছে।জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ছাড়পত্র না মেলায় দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হয়েও তৃতীয় শ্রেণির স্কেলেই বেতন পাচ্ছেন এসব শিক্ষক। তাদের অভিযোগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় উন্নীত স্কেলে শিক্ষকদের বেতন দিতে গড়িমসি করছে।
গত বছরের ৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তার পদমর্যাদায় উন্নীত করার ঘোষণা দেন।একই দিনে শিক্ষকদের পদমর্যাদা বাড়ানোর সঙ্গে বেতন স্কেল উন্নয়ন করে আদেশ জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।রিয়াজ পারভেজ অভিযোগ করেন, দ্বিতীয় শ্রেণির পদমর্যাদা দিয়ে প্রধান শিক্ষকদের ছয় হাজার ৪০০ টাকা স্কেল নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও কোনো শিক্ষক এখনও ওই স্কেলে বেতন পাচ্ছেন না। শিক্ষকদের প্রত্যেকের নামে আলাদা গেজেট না হওয়ায় নতুন স্কেলে বেতন পাওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে।সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির নেতাদের মধ্যে আলাউদ্দিন মোল্লা, নূরে আলম সিদ্দিকী, খায়রুল ইসলাম, মিজানুর রহমান মিজান, নাসরিন সুলতানা, ঝর্ণা রানী মণ্ডল সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।