দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি বলেছেন, মাতৃভাষা বাংলার রূপরীতি ও প্রয়োগ সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের সঠিক ধারণা অর্জন করতে হবে।বৃহস্পতিবার জাতীয় ভাষা উৎসব এ ক্ষেত্রে সে ধারণা দেবে বলে তিনি আশা করেন।জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের প্রমিত বাংলা চর্চায় উৎসাহিত করার লক্ষ্যে দ্বিতীয় জাতীয় ভাষা উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।যৌথভাবে এ উৎসবের আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি, ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ ও মাই একাডেমি।
বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত এ উৎসবে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এমপি।অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা প্রদান করেন ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আসাদুজ্জামান সুবহানী। শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান এবং মাই একাডেমির চেয়ারম্যান মেজর (অবঃ) এ টি কে এম ইকবাল। অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলা ভাষা ও বানানরীতিতে সমতা বিধানের জন্য আমাদের সবাইকে ভাষা ও বানানশৃঙ্খলা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে।তিনি বলেন, বাংলা একাডেমি এক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। আসাদুজ্জামান নূর এমপি বলেন, আজকাল গণমাধ্যমে নানা অনুষ্ঠানে বাংলা ভাষার যে বিকৃতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে তা রোধ করতে হবে।
তিনি বলেন, ভাষার সৌন্দর্য আবিষ্কার করতে না পারলে শিক্ষা লাভের কোন তাৎপর্য নেই। সারা বিশ্বে মাতৃভাষার চর্চায় বিভিন্ন দেশে প্রভূত অগ্রগতি অর্জন করেছে। কিন্তু আমরা মাতৃভাষা বাংলার শুদ্ধ ব্যবহারে পিছিয়ে রয়েছি যা কোনোভাবে কাম্য নয়।সংস্কৃতিমন্ত্রী বলেন, প্রথাগত শিক্ষা-কাঠামোয় শিক্ষার্থীদের প্রকৃত জ্ঞানার্জনে কতটুকু সহায়তা করছে তা প্রশ্নসাপেক্ষ। এ ক্ষেত্রে আমাদের আরো ভাবতে রয়েছে।তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক বিকাশ আমাদের তথ্য দিচ্ছে কিন্তু জ্ঞানসাধনা এর চেয়েওগভীর স্তরের বিষয়। ভাষা ও শিক্ষার যথাযথ চর্চাতেই সম্ভব স্বপ্নশীল নতুন প্রজন্মের অজেয় উত্থান।
অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, বাংলা ভাষার চর্চাকে শুধু প্রয়োজনের সীমারেখায় আবদ্ধ রাখলে চলবে না। প্রিয় এই মাতৃভাষার সঠিক প্রয়োগে আমাদের সবাইকে সচেতন ও আগ্রহী হতে হবে।অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আসাদুজ্জামান সুবহানী বলেন, বাংলা একাডেমির সঙ্গে যুক্ত উদ্যোগে তারা জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ভাষাভিত্তিক রচনা প্রতিযোগিতা, অনলাইন প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতাসহ নানা ধরণের ভাষা-বিকাশ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।তিনি বলেন, জাতীয় ভাষা উৎসব নিবিড় পঠন কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভাষা-শিক্ষা ও অনুশীলনের প্রতি যতœবান হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করবে। শুভেচ্ছা বক্তব্যে অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান বলেন, মাতৃভাষার যথাযথ চর্চায় উত্তর প্রজন্মের জন্য আমাদের আরো সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে কারণ মাতৃভাষার ভিত্তি সঠিকভাবে নির্মিত না হলে কাক্সিক্ষত শিক্ষা-মান অর্জন করা সম্ভব নয়।তিনি বলেন, ভাষা নিয়মিত চর্চা ও অন্বেষণের বিষয়। এ বিষয়ে নতুন প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রশিক্ষিত হলে ভবিষ্যতে আমরা দেশের সার্বিক ভাষা ও শিক্ষা পরিস্থিতির ক্ষেত্রে লক্ষণীয় অগ্রগতি সাধন করতে পারব। এদিকে লক্ষ রেখেই বাংলা একাডেমি ভাষা উৎসবের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।