দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ : পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি, ওজোনস্তরের ক্ষয়রোধে উন্নত দেশগুলোকে অগ্রণী ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন। ‘শিল্পোন্নত দেশগুলোতে অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহার ও ওজোনস্তর ক্ষয়কারী উপাদানের প্রভাবে ওজোনস্তরের ক্ষয় হচ্ছে। গত তিন দশক ধরে ওজোনস্তরের ক্ষযরোধে বিশ্বব্যাপী কাজ হচ্ছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো ওজোনস্তরের ক্ষয়রোধে সোচ্চার। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ওজোনস্তরের ক্ষয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো। এ কারণে ওজোনস্তরের ক্ষয়রোধ করতে হলে উন্নত দেশগুলোকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
মন্ত্রী বুধবার আন্তর্জাতিক ওজোন দিবস উপলক্ষে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে একথা বলেন। পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে পরিবেশ অধিদপ্তর আয়োজিত এ সেমিনারে আরো বক্তব্য দেন পরিবেশ উপমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপি, ইউএনডিপি বাংলাদেশ-এর ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর নিক বেরেসফোর্ড এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. রাইসুল ইসলাম মন্ডল। আন্তর্জাতিক ওজোন দিবসের এবছরের প্রতিপাদ্য ওজানস্তরের ক্ষয়রোধে সমন্বিত প্রচেষ্টার ৩০ বছর শীর্ষক মূল প্রতিপাদ্য উপস্থাপন করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এবং ওজোন ডিপলেটিং সাবস্ট্যান্স (ওডিএস) প্রকল্পসমূহের প্রকল্প পরিচালক কাজী সারোয়ার ইমতিয়াজ হাশমি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘের পরিবেশ-বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ অর্জনে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে। পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মনে করে ওজোনস্তরের ক্ষয় সারা বিশ্বের জন্য হুমকি। তাই এই ক্ষতি মোকাবেলায় বাংলাদেশকেও কিছু করতে হবে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোই ওজোনসস্তরের ক্ষয়রোধে অনেক বেশি অবদান রাখছে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ওজোনস্তরের ক্ষয়রোধে গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছে। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোর পক্ষে একা ওজোনস্তরের ক্ষয়রোধ করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, যেসব দেশ ওজোনস্তরের ক্ষয়ে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে এবং আমাদের দেশকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে বিশেষতঃ শিল্পোন্নত দেশসমূহকে এ ব্যাপারে এগিয়ে আসতে হবে। মন্ত্রী বিশ্ব পরিবেশ রক্ষায় উন্নত দেশগুলোকে উন্নয়নশীল ও দরিদ্র দেশগুলোকে সাথে নিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। কাজী সারোয়ার ইমতিয়াজ হাশমি বলেন, মন্ট্রিল প্রটোকল সফল বাস্তবায়নে সরকারকে বিশেষজ্ঞ সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চেয়ারম্যান কওে ওজোনস্তর ক্ষয়কারী বস্তসামগ্রী সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরী কমিটি’ এবং প্রটোকলের পালনীয় শর্তগুলো মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চেয়ারম্যান করে ‘ওজোন সেল গঠন করা হয়। মন্ট্রিল প্রটোকলের মাল্টিলেটারেল ফান্ডের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশ প্রায় বেশকিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, মানুষের তৈরি সিএফসিসহ নানা ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য ও অন্যান্য কর্মকান্ডের ফলে বায়ু মূলর ওজোনস্তর ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে। ওজোনস্তরের ক্ষয়রোধে প্রথম ১৯৮৫ সালে ভিয়েনা কনভেনশনে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৮৭ সালের ১৬ই সেপ্টেম্বর বিশ্বের ওজোনস্তর রক্ষায় মন্ট্রিল প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়। এ দিবসটিকে স্মরণ করেই ১৬ই সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক ওজোন দিবস পালন করা হয়।