দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ : শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু দেশের স্বচ্ছল নাগরিকদের স্বপ্রণোদিত হয়ে কর প্রদানে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।শিল্পমন্ত্রী বুধবার ঢাকা বিভাগীয় আয়কর মেলা-২০১৫-এর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহবান জানান। তিনি বলেন, আর্থিকভাবে সক্ষম সকল নাগরিক নিয়মিত কর পরিশোধ করলে ২০২১ সালের আগেই বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের আগেই উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। তিনি জানান, প্রতিবেশি দেশগুলোর তুলনায় জনসংখ্যার অনুপাতে করদাতার সংখ্যা অনেক কম হবার পরও ইতোমধ্যে বাংলাদেশ নিন্ম-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড রাজধানীর বেইলী রোডের অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে সপ্তাহব্যাপী এ মেলার আয়োজন করে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) মো. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। আমির হোসেন আমু আয়কর প্রদানের গুরুত্ব উল্লেখ করে বলেন, নাগরিকরা নিজ নিজ আয়কর পরিশোধ করলে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। সরকারের রাজস্ব আয় বাড়লে দেশে অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে অধিক পরিমাণে উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। এতে রাষ্ট্রের নাগরিকরাই উন্নত ও সমৃদ্ধ জীবন যাপনের সুযোগ পাবে। বিদেশি ঋণের পরিবর্তে নিজস্ব অর্থায়নে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় হয় বলে তিনি উল্লেখ করেন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা-উত্তর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন। তিনি অর্থনৈতিকভাবে দেশকে স্বনির্ভর করতে ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির ৭৬ নম্বর আদেশ বলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গঠন করে অভ্যন্তরীণ সম্পদ প্রবাহ বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক উন্নয়ন দর্শনের আলোকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর পাশাপাশি পায়রা সমুদ্রবন্দর নির্মাণ কাজও এগিয়ে চলছে। এসব প্রকল্প সম্পন্ন হলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের আদলে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক দূর এগিয়ে যাবে। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মা শান্তি পাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
উল্লেখ্য, এ বছর ঢাকা বিভাগীয় আয়কর মেলায় সহজে আয়কর পরিশোধের লক্ষ্যে ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। কর পরিশোধের সুবিধার্থে করদাতাদের জন্য অঞ্চলভিত্তিক বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া মুক্তিযোদ্ধা, সিনিয়র সিটিজেন, মহিলা ও প্রতিবন্ধী করদাতাদের জন্য পৃথক বুথ রয়েছে। বিভিন্ন বুথে আয়কর বিভাগীয় কর্মকর্তারা করদাতাদের আয়কর রিটার্ন পূরণ ও দাখিলে সেবা দিচ্ছেন।মেলায় আয়কর বিষয়ক পরামর্শ ও সেবাদানের জন্য ৫৬টি হেল্প ডেক্স, আয়কর রিটার্ন গ্রহণের জন্য ৪১টি, ই-টিআইএন সংক্রান্ত ১০টি ও অন্যান্য সেবা সংক্রান্ত ১০টি বুথ স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া সোনালী ব্যাংকের ৪টি, জনতা ব্যাংকের ২টি, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা ১টি, তথ্য ও মিডিয়ার জন্য ১টি, ফটোকপির জন্য ৪টিসহ মেলায় সব মিলিয়ে ১২৩টি বুথ রয়েছে।