দৈনিকবার্তা-ঢাকা,১৫সেপ্টেম্বর : ঈদুল আজহা উপলক্ষে ২৫ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি জাল নোট শনাক্ত করতে পশুর হাটের আশপাশে ৪৫০টি মেশিন বসানো হবে।মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানা সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।নাজনীন সুলতানা বলেন, আগামী ১৭ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে ব্যাংকের সব অফিস এবং কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকের শাখা অফিস থেকে নতুন টাকা পাওয়া যাবে।
ঈদ মানেই আনন্দ, ঈদ মানেই খুশি। ঈদের সেই আনন্দে নতুন মাত্রা যোগ করে চকচকে, নতুন টাকার সেলামি। আর এই সেলামি দিতেই মূলত প্রতিবছর দুই ঈদের আগে বেড়ে যায় নতুন টাকার চাহিদা। ঈদুল আজহা উপলক্ষে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে নতুন টাকা বাজারে ছাড়বে বাংলাদেশ ব্যাংক। রাজধানীতে ১৯টি ব্যাংকের ২০টি শাখায় নতুন নোট বিনিময় হবে। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে চাহিদা মোতাবেক পর্যাপ্ত পরিমাণে নতুন টাকা সরবরাহের উদ্যোগ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এবার কী পরিমাণ নতুন টাকা সরবরাহ করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হলেও প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার নতুন নোট বাজারে ছাড়া হতে পারে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে নতুন নোটের বিনিময়ের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। নতুন নোট বিনিময়ের এ কার্যক্রম চলবে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। রাজধানীতে ১৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ২০টি শাখায় নতুন নোট বিনিময় হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিলসহ সকল শাখায় নতুন নোট বিনিময়ের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। একজন ব্যাক্তি সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৭০০ টাকার বিভিন্ন মূল্যমানের নোট বদলে নিতে পারবেন। এবার টাকা প্রদানের পদ্ধতিতে একটু ভিন্ন মাত্রা যোগ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে। নতুন নোট বিনিময়ে স্থাপন করা হয়েছে ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড। এই পদ্ধতিতে নতুন টাকা বিনিময়ের আগে মানুষকে কুপন সরবরাহ করা হবে। পরে কূপনের সিরিয়াল ধরে নতুন নোটের বিনিময় হবে। পাশাপাশি নেয়া হবে আঙ্গুলের ছাপ। দালাল রুখতেই পরীক্ষামূলকভাবে এমন পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি ম্যানেজম্যান্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহা বলেন, ‘সাধারণ মানুষের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে নতুন নোট বিনিময়ের জন্য প্রথমবার এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি নোট নিতে আসা প্রত্যেকের আঙ্গুলের ছাপ রাখা হবে। এর ফলে একজন লোক সপ্তাহে ১ দিনের বেশি নতুন টাকা নিতে পারবে না। ফলে নোট নিতে আসা সাধারণের ভোগান্তি কমবে।জানা গেছে, এবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে নতুন নোট নিতে ৪টি কাউন্টার খোলা হচ্ছে। পাশাপাশি বিভাগীয় শহর খুলনা ও সিলেটে তিনটি ও অপর শাখাগুলোতে দুটি করে নতুন নোট বিনিময়ের কাউন্টার রাখা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি বিভাগীয় শহরগুলোর বাণিজ্যিক ব্যাংকেও নতুন নোট পাওয়া যাবে। প্রতিজনের ৩ হাজার ৭০০ টাকার মধ্যে ২০ টাকার ১ প্যাকেট, ১০ টাকার ১ প্যাকেট, ৫ টাকার ১ প্যাকেট ও ২ টাকার ১ প্যাকেট নেয়ার সুযোগ রাখা হচ্ছে।
এবার রাজধানীতে যেসব শাখায় নতুন নোট পাওয়া যাবে সেগুলো হলো- জনতা ব্যাংকের নিউমার্কেট শাখা ও আব্দুল গণি রোড করপোরেট শাখা, ন্যাশনাল ব্যাংকের যাত্রাবাড়ী শাখা, পূবালী ব্যাংকের সদরঘাট শাখা, অগ্রণী ব্যাংকের এলিফ্যান্ট রোড শাখা, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের বনানী শাখা, সাউথইস্ট ব্যাংকের কাওরান বাজার শাখা, স্যোশাল ইসলামী ব্যাংকের বসুন্ধরা সিটি মার্কেট শাখা, উত্তরা ব্যাংকের চকবাজার শাখা, ওয়ান ব্যাংকের বাসাবো শাখা, আইএফআইসি ব্যাংকের গুলশান শাখা, ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড এগ্রিকালচার ইউনিট দক্ষিণখান শাখা, ব্যাংক এশিয়ার পল্টন শাখা, ইসলামী ব্যাংকের শ্যামলী শাখা, ঢাকা ব্যাংকের উত্তরা শাখা, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের মোহাম্মাদপুর শাখা, রূপালী ব্যাংকের মহাখালী শাখা, বেসিক ব্যাংকের শান্তিনগর শাখা, যমুনা ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখা ও দ্যা সিটি ব্যাংকের মিরপুর শাখা।উল্লেখ্য, গত কোরবানির ঈদে বিভিন্ন মূল্যমানের ২৪ হাজার কোটি টাকা বাজারে ছেড়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সে সময় রাজধানীতে ২০টি এবং বিভাগীয় শহরে ২৭টি ব্যাংকের শাখায় বিশেষ ব্যবস্থায় নতুন নোট বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূ্ত্ের জানা যায়, রোজার ঈদে ছোট নোটের চাহিদা থাকে বেশি। আর কোনবানীর ঈদে বেশি চাহিদা থাকে বড় নোটগুলোর। সে অনুযায়ী বাজারে টাকা ছাড়া হয়।