দৈনিকবার্তা-পটুয়াখালী, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫: পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) আধিপত্য বিস্তার ও আঞ্চলিকতার দ্বন্ধের জের ধরে দুই গ্র“পের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কম করে হলেও ১০ জন আহত হয়েছে। রবিবার গভীর রাতে ক্যাম্পাসের এম কেরামত আলী হল ও শেরেবাংলা আবাসিক ছাত্র হলে মারামারি, হামলা-সংঘর্ষ ও রুম ভাংচুরের ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, রবিবার রাত ৯ টায় বরিশাল থেকে ছেড়ে আসা ক্যাম্পাসগামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসের ছিটে বসাকে কেন্দ্র করে বরিশাল-পটুয়াখালী এলাকার ছাত্রদের মধ্যে বিরোধের জের ধরে ঘটনার সূত্রপাত ঘটে। বাসটি ক্যাম্পাসে পৌছার পর এ খবর ক্যাম্পাসে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে আনুমানিক রাত ১২টার থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কয়েক দফায় বরিশাল ও পটুয়াখালী জোনের বিক্ষুব্দ ছাত্রদের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। দুই গ্র“পের মুখোমুখি সংঘর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ চতুর্থ সেমিস্টারের সাধারণ ছাত্র তানিম (২১) গুরুতর হয়। তানিমকে গুরুতর আহতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও ছাত্র মুনান, বায়েজিদ, বিজয়, ইমন, ফাহিম, সাজিন, তানজিলসহ অন্তত: ১০জন আহত হয়েছে। রাতেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইস-চ্যান্সেলর, প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার পরপরই দুমকি থানা অফিসার ইনচার্জ আযম খান ফারুকীর নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে উপস্থিত দুমকি থানা পুলিশের কয়েক ঘন্টার চেষ্টায়ও পরিস্থিতি সামাল দিতে না পারায় এএসপি সার্কেলের নেতৃত্বে পটুয়াখালী থেকে দাঙ্গা পুলিশ রাত সোয়া ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরবর্তীতে সংঘর্ষ এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিবাদমান শিক্ষার্থীদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। রবিবার গভীর রাত থেকে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে আজ সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফের দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার পর উভয় গ্র“প প্রধান ফটকের সামনে ভেতের ও বাইরে জড়ো হয়ে অবস্থান নেয়। গেট দুটি বন্ধ থাকায় পথচারী ও যান চলাচলে বিঘœ ঘটে।
পরে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ রবিউল হকের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি টিম সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় এএসপি (সার্কেল) সাহেব আলী পাঠান, ইউএনও মোঃ হাফিজুর রহমান, দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ আযম খান ফারুকীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান দুটি ফটক বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানায়, কয়েকটি ল্যাপটপ চুরি এবং ৪০টির মতো কক্ষ ভাংচুর করা হয়েছে। যার কোন হদিস মেলেনি। কয়েক লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোঃ আনিসুজ্জামান আনিস ও সাধারণ সম্পাদক রায়হান আহম্মেদ রিমন বলেন, আঞ্চলিক দ্বন্ধের জের ধরে দুই গ্র“পের সাধারণ ছাত্রদের মধ্যে সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় বর্তমানে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক রয়েছে।