দৈনিকবার্তা- ঢাকা, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫: বিএনপির নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় কারাগারে বন্দি করে ও দলকে নির্মূল করার পদক্ষেপ গ্রহণ করে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে না বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, মুখে মুখে জাতীয় ঐক্যের কথা বললেও প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগ জাতীয় ঐক্য চায় না।শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। শনিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের অষ্টম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে শুক্রবার এক সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন রিপন। এতে শনিবার বেলা ৩টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে খালেদা জিয়ার কারামুক্তি দিবসের আলোচনা সভা সফল করার বিষয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ করে বিএনপি।
গত বুধবার আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের বক্তব্যের সমালোচনা করে রিপন বলেন, তার বক্তব্য রাজনৈতিক বক্তব্য, এটি প্রকৃত জাতীয় ঐক্যের বক্তব্য নয়।বিভাজন নয়, জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন-সৈয়দ আশরাফের এমন বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে রিপন বলেন, তার দলও বিভাজন ভুলে জাতীয় ঐক্যের রাজনীতি চায়।রিপন বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠা হয়েছে বিভাজনের রাজনীতির অবসান ঘটানোর জন্য। বিএনপি যখন সরকারি বা বিরোধী দলে ছিল তখন এ চর্চায় করেছে। দুঃখের বিষয় আমাদের রাজনীতিতে বিভাজনের বিষবাষ্প শিকড় গেড়ে বসেছে। সৈয়দ আশরাফের বিভাজনের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বানকে আমরা স্বাগত জানাই।তিনি বলেন, বাংলাদেশ যে জিএসপি সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে, সরকার বলছে কিছু কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশকে জিএসপি সুবিধা থেকে বঞ্চিত করেছে।সরকারের এমন বক্তব্য ভিত্তিহীন ও মিথ্যা আখ্যায়িত করে প্রত্যাহারের দাবি জানান।ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, একদিকে জাতীয় ঐক্যের কথা বলে আরেক দিকে হিংসা, হানাহানি ও মামলা-হামলা, নির্যাতনে বিএনপিকে নির্মূল করার পদক্ষেপ গ্রহণ করে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে না। সেজন্য সরকারকে প্রতিহিংসা ও হানাহানির রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
রিপন বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট দেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান নির্মমভাবে নিহত হন। বিএনপি এ মর্মন্তুদ ঘটনায় শোকাহত। স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে যারা চিহ্নিত তাদের সুষ্ঠু তদন্তের আওতায় এনে বিচারের বিরোধী নই আমরা। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের শাস্তির বিষয়েও আমাদের কোনো দ্বিমত নেই। এছাড়া, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মর্মান্তিক ঘটনাও আমরা সুষ্ঠু তদন্ত চাই। চাই, তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি। এসবই আমাদের জাতীয় ঐক্যের প্যারামিটার। এসব নিয়ে আমাদের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই।তাহলে কেন আমরা দেশে জাতীয় ঐক্যের রাজনীতি চর্চা করতে পারব না?’ প্রশ্ন করেন রিপন।
তিনি বলেন, একদিকে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানাবেন। আবার অন্য দিকে তার দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে বিএনপির অনুপস্থিতিতে অভিযোগ করবেন। এখন আমাদের অনুপস্থিতিতে জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী নানান অভিযোগ তুলেছেন। আমরা প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনেই বিএনপি প্রতিষ্ঠা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের রাজনীতিতে বিভাজনের বিষবাষ্প শিকড় গেড়ে বসেছে। তবে সৈয়দ আশরাফের বিভাজনের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বানকে আমরা স্বাগত জানাই।এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খন্দকার, মহিলা দলের নেত্রী নুরী আরা সাফা, জাসাসের সভাপতি এমএ মালেক ও সাধারণ সম্পাদক কণ্ঠশিল্পী মনির খান, ওলামা দলের সভাপতি এমএ মালেক, তাঁতী দলের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাসিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি মুনির হোসেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।