দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫: ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে সব মোবাইল গ্রাহকের সিমকার্ড নতুন করে নিবন্ধন করতে হবে।মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ে তারানা হালিম সাংবাদিকদের এ কথা জানান।তিনি বলেন,এ বিষয়ে সোমবার নির্দেশনা দিয়ে বিটিআরসিকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এতে তিন মাসের মধ্যে সকল গ্রাহকের সঙ্গে ডিলার এবং সিমকার্ড বিক্রেতার নিবন্ধন করতে বলা হয়েছে।এর আগে রোববার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রতিমন্ত্রীর এক বৈঠকে সিম নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।সব সিমকার্ড নতুন করে নিবন্ধনের বিষয়ে তারানা হালিম বলেন, অনেক গ্রাহক আগে নিবন্ধন করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো সেসব নিবন্ধনের তথ্য যাচাই করা হয়নি। তাই সবাইকে নতুন করে নিবন্ধন করতে হবে।
তার মতে, নতুন করে নিবন্ধন ও যাচাইয়ের মাধ্যমে তথ্য যদি সংরক্ষণ না করা হয়, তাহলে কোনটি সঠিক নিবন্ধন আর কোনটি ভুল তা নিয়ে পুরোনো জটিলতা থেকেই যাবে।প্রতিমন্ত্রী জানান, সব সিমকার্ড নতুন করে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য বিটিআরসিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।এছাড়া নিবন্ধন কার্যক্রম পরিচালনার সময় মুঠোফোন অপারেটরদের বিজ্ঞাপনেও সিমকার্ড নিবন্ধন-সংক্রান্ত বার্তা প্রচার বাধ্যতামূলক করা হবে বলে জানান তিনি।
নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত সব সিমকার্ড পুনরায় নিবন্ধন করতে হবে বলে জানিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। মঙ্গলবার সকালে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।এর আগে গতকাল বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেছিলেন নিবন্ধিত গ্রাহকদের পুনরায় নিবন্ধন করতে হবে না। তার বক্তব্যের পরদিনই ভিন্ন নির্দেশনা দিল মন্ত্রণালয়।
সিম নিবন্ধন নিয়ে বিভ্রান্তির শুরু রোববার মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠকের পর। ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে সিম নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। তবে সব সিম নিবন্ধন করতে হবে, না শুধু অনিবন্ধিত গ্রাহকরা নিবন্ধন করবেন তা নিয়ে অস্পষ্টতা শুরু হয়।এর পরদিনই সোমবার বিটিআরসি চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘সিম নিবন্ধন একটি চলমান প্রক্রিয়া। সঠিকভাবে নিবন্ধিত গ্রাহকদের পুনঃনিবন্ধনের প্রয়োজন নেই। গ্রাহকের নিবন্ধন নেই বা নিবন্ধনের ক্ষেত্রে সমস্যা রয়েছে, তাদের আবার নিবন্ধন করতে হবে।অথচ মন্ত্রণালয় েেথকে চিঠি দিয়ে বিটিআরসিকে সব সিমের নিবন্ধনের উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। তারানা হালিম নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের বলেন, হয়রানি, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং জঙ্গিবাদ এড়াতে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।বিটিআরসির চেয়ারম্যানের মন্তব্যের বিষয়ে তারানা হালিম বলেন, ‘তারা নির্দেশনার অপেক্ষায় ছিল। তা পাঠানো হয়েছে।সবার নিবন্ধনের বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনেকেই আগে নিবন্ধন করেছেন। কিন্তু বাস্তবতা হলো সেসব নিবন্ধনের তথ্য যাচাই করা হয়নি। তাই সবাইকে নতুন করে নিবন্ধন করতে হবে।
এ মাসের মধ্যেই বিটিআরসি’র নির্ধারিত ফরমে যথাযথভাবে নিবন্ধন ও পুনঃনিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানান তিনি। তবে প্রক্রিয়া শুরুর আগে টেলিকম অপারেটরদের সাথে বৈঠক করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
এদিকে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সার্ভারে অপারেটরদের প্রবেশের সুযোগ না থাকায় তারা সঠিকভাবে নিবন্ধন করতে পারছে না জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অপারেটরদের এ সুযোগ দিতে বিটিআরসিকে উদ্যোগে নিতে বলা হয়েছে। এ সুযোগ পাওয়ার পর অনিবন্ধিত সিম বন্ধ করতে পারবে। এরপরও যদি অনিবন্ধিত সিম পাওয়া যায় তবে সিম প্রতি ৫০ ডলার করে জরিমানা গুণতে গবে সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে।বিটিআরসিকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, সিম পুনঃনিবন্ধনের বিষয়টি ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে গ্রাহককে জানাতে হবে। ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে তা নিবন্ধন করতে হবে। নতুবা তা বন্ধ করে দেয়া হবে।পত্রিকাতেও এধরনের বিজ্ঞাপন ছাপাতে বলা হয়েছে চিঠিতে।ডিস্ট্রিবিউটর ও রিটেলারদের প্রকৃত সংখ্যা ও বৈধ কাগজপত্র সনাক্ত করে নিশ্চিত করতে হবে। তা সংরক্ষণ করতে হবে।এছাড়া তামাকজাত পণ্যের সংবিধিবন্ধ সতর্কীকরণের মতো মোবাইল ফোন অপারেটরদের নির্ধারিত বিজ্ঞাপন ও বিলবোর্ডের নিচে সর্তকীকরণ বার্তা প্রচার করতে হবে। বার্তায় উল্লেখ করতে হবে, ‘অবৈধ ও অনিবন্ধিত সিম ব্যবহার দেশের ও আপনার জন্য বিপদজনক, এখনই সিম বৈধভাবে নিবন্ধন করুন।