দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫: বাংলাদেশ রেলওয়ের খালাসি পদে ৩০ কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ খতিয়ে দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত মে মাসে রেলে এক হাজার ৪৪১ জন খালাসি নিয়োগে এ অনিয়ম-দুর্নীতি হয় বলে অভিযোগ উঠেেছ ।গত ২৭ মে পত্রিকায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনের সূত্র ধরে দুদক বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করছে।সূত্র জানায়, বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান চালাতে গত মাসে দুদক উপ-পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলমকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যেই দুদকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় নথি-পত্র তলব করে রেলের মহা-পরিচালকের কাছে চিঠি দেবে বলে দুদকের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে। ওই চিঠিতে লিখিত পরীক্ষার নম্বর-পত্র, মৌখিক পরীক্ষার নম্বর-পত্র, টেবুলেশন শীট, নিয়োগ কমিটির সুপারিশ, নিয়োগ নথি, নিয়োগ-পত্র এবং নিয়োগ সংক্রান্ত নীতি মালাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য চাওয়া হব।
জানা যায়,বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০১০ সালে খালাসি নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এর বিপরীতে ৪০ হাজার আবেদনপত্র জমা পড়ে। ২০১২ সালে পর্যায়ক্রমে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। অভিযোগের বরাত দিয়ে সূত্র জানায়, রেলওয়েতে খালাসি পদে নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর পক্ষ থেকে ৪০০ জনের একটি তালিকা দেয়া হয়। এ তালিকার শতভাগ নিয়োগ দেয়া হয়। রেলওয়ে শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ৭ সংগঠনের পক্ষ থেকে দেয়া হয় ১১৬ জনের তালিকা। নিয়োগপ্রাপ্ত ১ হাজার ৪৪১ জনের মধ্যে অন্তত ১ হাজার জনের চাকরি হয়েছে টাকার বিনিময়ে। প্রতি পদের বিপরীতে ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত দেয়া হয়। এর মধ্যে থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক লীগের সিন্ডিকেট অন্তত ১৫ কোটি টাকার বাণিজ্য করেছেন। রেলওয়ে শ্রমিক লীগের পক্ষ থেকে ৬০০ জনের তালিকা মন্ত্রীকে দেয়া হয়। এই তালিকা থেকে চাকরি হয়েছে ১৫০ জনের। এ তালিকা থেকে নিয়োগ দেয়া হয় ৩৮ জনকে।
অভিযোগের বরাত দিয়ে সূত্র আরও জানায়, নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলা কোটা মানা হয়নি। এক জেলার প্রার্থীকে অন্য জেলায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কোনো কোনো জেলা বৈষম্যের শিকার হয়েছে। কোটা অনুযায়ী, কুমিল্লা জেলায় ৫৩ জন নিয়োগ পাওয়ার কথা থাকলেও এর বাইরে কুমিল্লার অনেককে অন্য জেলার কোটায় নিয়োগ দেয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলার ক্ষেত্রেও একই ধরণের ঘটনা ঘটেছে। একইভাবে কক্সবাজারে ২০ জন কোটার মধ্যে ১০ জনই বাইরের জেলা থেকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।এব্যাপারে জানতে চাইলে দুদক উপ-পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম বলেন, অনুসন্ধানের বিষয়টি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। তাই এই মুহূর্তে বিষয়টি নিয়ে তেমন কোন মন্তব্য করা ঠিক হবে না।