দৈনিকবার্তা-সাতক্ষীরা, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের তারালী গ্রামে মা- মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। নিহতরা হলেন, তারালী গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে সাবিনা খাতুন (২৪) ও তার আড়াই বছর বয়েসের শিশু কন্যা আয়েশা সিদ্দিকা। মঙ্গলবার ভোর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ ডবল মার্ডারের এই ঘটনায় সাবিনা খাতুনের পাষান্ড স্বামী আব্দুর রউফকে গ্রেফতার করেছে।কালিগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মীর মনির হোসেন ও কালিগঞ্জ থানার ওসি সুভাষ বিশ্বাস মা-মেয়ে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।জানাগেছে, প্রায় সাড়ে ৪ বছর আগে কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী গ্রামের আনোয়ার হোসেনের মেয়ে সাবিনার সাথে একই উপজেলার নলতা ইউনিয়নের ঘোনা কাশেমপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ মাস্টারের ছেলে আব্দুর রউফের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে যৌতুক হিসেবে আব্দুর রউফ শ্বশুরের কাছে মটরসাইকেল দাবী করে আসছিল। এ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে তাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে।
গত ৪ দিন আগে স্বামীর উপর রাগ করে সাবিনা খাতুন তার আড়াই বছরের কন্যা আয়েশাকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসেন। সোমবার রাতে সাবিনার স্বামী আব্দুর রউফ শ্বশুর বাড়িতে আসে এবং তারা একই ঘরে রাতে ঘুমাতে যায়। রাতের কোন এক সময় পাষান্ড স্বামী আব্দুর রউফ তার স্ত্রী সাবিনা ও শিশু কন্যা আয়েশাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর সেখান থেকে পালিয়ে যায়।সাবিনার মা জাহানারা বেগম জানায়, মঙ্গলবার ভোর রাত সাড়ে ৩ টার দিকে তিনি উঠে দেখেন ঘরের দরজা খোলা। এ সময় মেয়ে-জামাই কে ডাকা-ডাকি করতে থাকে। কিন্তু কোন সাড়া-শব্দ না পেয়ে ঘরের ভিতর প্রবেশ করেই সাবিনা ও তার কন্যার লাশ দেখতে পায়। পাষান্ড স্বামী আব্দুর রউফ আগেই সেখান থেকে সটকে পড়ে। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন জানার পর পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনার পর পুলিশ ভোরে ঘোনা কাশেমপুর গ্রাম থেকে আব্দুর রউফকে গ্রেফতার করেছে।
কালিগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মীর মনির হোসেন জানান, নিহত মা-মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তাদের উভয়ের গলায় একাধিক দাগ রয়েছে। পুলিশ সাবিনার স্বামীকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তবে নিহত সাবিনার স্বামী আব্দুর রউফ এখনও এই হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করেনি বলে তিনি জানান।
কালিগঞ্জ থানার ওসি সুভাষ বিশ্বাস জানান, তাদেরকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।। লাশের ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
অপর দিকে, সাতক্ষীরার শ্যামনগরে পুলিশের সাথে সংঘর্ষে মনসুর আলি নামের একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হয়েছে । তাকে পুলিশ পাহারায় সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । এ ঘটনায় আহত হয়েছেন দুই পুলিশ সদস্য। তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে । মঙ্গলবার ভোর রাতে শ্যামনগরের ইছাকুড় ইটভাটার কাছে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে । গুলিবিদ্ধ মনসুর আলি ( ৪৫) শ্যামনগর উপজেলার চন্ডিপুর বাদোঘাটা গ্রামের হামিদ শেখের ছেলে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) এনামুল হক জানান, গোপন সূত্রে তিনি জানতে পারেন যে একদল মাদক ব্যবসায়ী ইয়াবা পাচার করছে। এ সময় উপরিদর্শক ( এসআই) আবদুল কাদেরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল দ্রুত সেখানে পৌঁছে যায় ।এসআই কাদের জানান, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের ওপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশ এ সময় আত্মরক্ষার জন্য চার পাঁচ রাউন্ড গুলি করে । তিনি জানান এতে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয় । অন্যরা দ্রুত পালিয়ে যায় । এ সময় তার কাছ থেকে ২৮ পিস ইয়াবা ও গাঁজা আটক করা হয় ।
পুলিশ জানায়, মনসুর আলির বিরুদ্ধে শ্যামনগর থানায় মাদক সংক্রান্ত ১৮ টি মামলা রয়েছে । আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, এসআই আবদুল কাদের ও কনস্টেবল হাসানুজ্জামান । তারা শ্যামনগর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন ।ওসি জানান মনসুরের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে ।