1441194940

দৈনিকবার্তা-গোপালগঞ্জ, ০৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫: গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে উপজেলার জলিরপাড় বাজারের একটি অটো রাইচ মিলের ছাই ও বজর্্য বাজার, জন বসতি এলাকা ও নদীতে ছড়িয়ে পড়ছে৷ এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে জলিরপাড় বাজারের ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী৷ এমনকি ওই মিলের বজর্্য নদীতে পড়ায় হুমকীতে রয়েছে জলজ প্রাণী৷ এদিকে এ আটো রাইচ মিলের মালিকের বিরুদ্ধে সরকারী জমি দখলের অভিযোগ থাকায় তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের হয়েছে৷ দ্রুত জনবসতি এলাকা থেকে রাইচ মিলটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা৷জানাগেছে, মুকসুদপুর উপজেলার জলিরপাড় বাজারে একই উপজেলার পূর্ব লখন্ডা গ্রামের মোঃ আসাদুজ্জামান এবং তার দুই ভাই মিলে ৯২ শতাংশ জায়গার ওপর ২০১৫ সালের ১৬ মার্চ মেসার্স জামান নামে একটি অটো রাইচ মিল প্রতিষ্ঠা করেন৷ এরপর থেকে এ মিলের ছাই ও কালো ধোয়া বাতাসে মিশে প্রতিনিয়তই দূষিত করে চলছে পরিবেশ৷ এমনকি ওই বাজারে ব্যবসা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ি-ঘরে ধানের তুস ও ছাই ছড়িয়ে পড়ায় বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে৷ এমনকি তুস ও ছাইয়ের কারনে চোখের রোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে তারা৷এছাড়া মিলের পোড়া তেল ও তুস ফেলা হচ্ছে কুমার নদ ও মধুমতি নদীতে৷ এতে নদীর পানি দুষিত হয়ে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ছে৷ ফলে হুমকীর মুখে রয়েছে জলজ প্রাণী৷ বার বার মিল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের কাছে মৌখিকভাবে জানানোর পরও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি৷ দ্রুত মিলটি জন বসতি ও বাজার এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া দাবী জানিয়েছে স্থানীয়রা৷এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে সরকারী নীতিমালা উপেক্ষা করে অটো রাইচ মিলটি নির্মাণ করায় দুর্ভোগ কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ এমনকি মিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সরকারী জমি দখলেরও অভিযোগ রয়েছে৷

জলিরপাড় বাজারের পল্লী চিকিত্‍সক অশোক কুমার মন্ডল বলেছেন, এ মিল থেকে বাতাসের সাথে ধানের তুস ও ছাই ছড়িয়ে পড়ায় মানুষ চোখের রোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে৷ তাই মিলটি জন বসতি ও বাজার এলাকা থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া উচিত৷জলিরপাড় বাজারের ঘর মালিক রাজা চোকদার জানান, বাজারে আমার তিনটি দোকান ঘর রয়েছে৷ অটো রাইচ মিলের ছাইয়ের কারণে আমি একটি দোকান ঘর ভাড়া দিতে পারছি না৷ অন্য ভাড়াটিয়ারা ঘর ছেড়ে দিতে চাচ্ছে৷জলিরপাড় বাজার বণিক সমিতির সাধারন সম্পাদক বাচ্চু শেখ জানান, জলিরপাড় বাজার মুকসুদপুর উপজেলার একটি প্রসিদ্ধ বাজার৷ এ বাজারে তিন শতাধিক ব্যবসায়ী রয়েছেন৷ অটো রাইচ মিলের ছাই বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যবসা-বাণিজ্য হুমকির মুখে পড়েছে৷ জামান অটো রাইচ মিলের ম্যানেজার বিল্লাল হোসেন জনগনের সমস্যার কথা স্বীকার কর বলেন, এজন্য সময়ের প্রয়োজন৷ আমরা আগামী ৩/৪ মাসের মধ্যে এটি ঠিক করে দেবো৷

জামান অটো রাইচ মিল মালিক মোঃ আসাদুজ্জামান জনগনের অসুবিধার কথা স্বীকার করে বলেন, এখানে মিলটি স্থাপনের ফলে এলাকার কৃষক উপকৃত হচ্ছেন৷ তারা সরাসরি মিলে ধান দিয়ে চাল বা টাকা নিতে পারছেন৷ এছাড়া তিন শতাধিক লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে৷ তিনি বলেন, ছাই ও তুষে এলাকার মানুষ যে সমস্যায় ভুগছেন তা নিরসন করা হবে৷ননীক্ষির ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মুজিবুর রহমান বললেন, একজনের লাভের জন্যতো আর সবার ক্ষতি করা যায় না৷ অটো রাইস মিলটি নিমর্াণ করার শুরু থেকেই স্থানীয়দের দুভের্াগের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ মালিক বিষয়টি সুরাহা করবেন এমনটি বার বার বললেও তা তিনি করছেন না৷গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ খলিলুর রহমান বাজার বা জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এ ধরনের প্রতিষ্ঠান করা ঠিক নয় বলে মন্তব্য করে বলেন, অটো রাইচ মিলের মালিকপক্ষ কিছু জমি ক্রয় করে এবং বাকী সরকারি জমি দখল করে এ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন৷ এ কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে৷