দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ : দেশে সাক্ষরতার হার ৬১ শতাংশ বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার, যা গতবছর তার দেওয়া হারের চেয়ে ৪ শতাংশ পয়েন্ট কম। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাজিুর রহমান বলেন, প্রাথমিকে উপবৃত্তি ভোগী শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরও ৫২ লাখ বাড়ানো হচ্ছে। তিনি রোববার সকালে সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সন্মেলনে এ কথা উল্লেখ করে বলেন, বর্তমানে ৭৮ লাখ শিক্ষার্থী উপবৃত্তি পায়। শিগগিরই এ সংখ্যা এক কোটি ৩০ লাখে উন্নীত করা হবে। সংবাদ সন্মেলনে মন্ত্রী বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য উদ্বৃত করে বলেন, দেশে এখন সাক্ষরতার হার ৬১ শতাংশ।
আর্ন্তজাতিক সাক্ষরতা দিবস উপলক্ষে এই সংবাদ সন্মেলনের আয়োজন করা হয়। মন্ত্রী বলেন, দিবসটি উপলক্ষে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে। এদিন ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিতব্য আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে একটি শোভাযাত্রা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এসে শেষ হবে।
সংবাদ সন্মেলনে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মেছবাহ উল আলম। সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী বলেন, ২০১৩ সালে পরিসংখ্যান ব্যুরোর করা জরিপ অনুযায়ী সাক্ষরতার এই হার নির্ধারণ করা হয়েছে।গতবছর সাক্ষরতা দিবসে মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশের ৬৫ শতাংশ মানুষ সাক্ষর; আর নিরক্ষর মানুষের সংখ্যা আড়াই কোটি। আর এবার পরিসংখ্যান ব্যুরোর বরাত দিয়ে মন্ত্রী বলেন, দেশে পাঁচ থেকে নয় বছর বয়সীদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ১৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ। ১০-১৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ৬৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ সাক্ষর। ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের সাক্ষরতার হার ৮২ দশমিক ১৭ শতাংশ, ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে ৭৫ দশমিক ০৯ শতাংশ এবং ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ৭৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ সাক্ষর।১৯৯৬ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘ সংস্থা ইউনেস্কো ৮ সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এবারের আন্তর্জাতিক এ দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- সাক্ষরতা আর দক্ষতা, টেকসই সমাজের মূল কথা’।
২০১০ সালের পর প্রতিবছরই সাক্ষরতার হার নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বিভ্রান্তিকর সব তথ্য দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন সময় মন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারাও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এবং গণমাধ্যমে বিভিন্ন রকম তথ্য দিয়েছেন।ওই বছর বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপ অনুযায়ী, দেশে সাক্ষরতার হার ছিল ৫৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। এর তিন বছরের মাথায় ২০১৩ সালে তৎকালীন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী আফছারুল আমীন সাক্ষরতার হার ৭১ শতাংশে পৌঁছেছে বলে দাবি করেন। কিন্তু তার পরের বছরই মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার দেশের ৬৫ শতাংশ সাক্ষর বলে তথ্য দেন। রোববার সংবাদ সম্মেলনে ফিজার বলেন, দেশে সাত বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৫৪ দশমিক ১৯ শতাংশ, ১৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে ৫৯ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং ২৫ বছরের বেশি বয়সীদের মধ্যে ৫২ দশমিক ৭৫ শতাংশ মানুষ সাক্ষর। নিরক্ষরতা দূরীকরণে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মাধ্যমে সারা দেশে ১৫ থেকে ৪৫ বছর বয়সী নিরক্ষর মানুষকে সাক্ষরতা দেওয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসকরা প্রতি জেলায় চারটি করে এনজিও নির্ধারণ করবেন।