দৈনিকবার্তা-সিলেট, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫: ভিসির পদত্যাগের দাবীতে উত্তাল হয়ে উঠেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।আর এ জন্য ভিসিকে ৪৮ ঘন্টার আলটিমেটাম দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষকরা। শিক্ষকদের পর এবার শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আমিনুল হক ভূইয়ার অপসারণ দাবি করছেন শিক্ষার্থীরাও।এদিকে, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আমিনুল হক ভূঁইয়ার পদত্যাগ ও বিচারের দাবিতে ৪ ঘণ্টার প্রতীকী অনশন পালন করছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। সকাল ৯টায় শুরু হওয়া ভিসি ভবনের সামনে এই অনশন দুপুর ১টা পর্যন্ত পালন করবেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
আন্দোলনরত শিক্ষক নেতা অধ্যাপক সৈয়দ সামসুল আলম বলেন, আমাদের একটাই দাবি ভাইস চ্যান্সেলরের অপসারণ।ভিসি অপসারিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলনথেকে কোনোভাবেই সরব না। পরবর্তীতে তার বিচার করতে হবে।তিনি আরো বলেন, ‘আমি মনে করি সরকার ভিসিকে আজকের মধ্যে সরিয়ে নিবে। তা না হলে আমরা আরো কঠোর কর্মসূচিতে যাব।গত ৩০ আগস্ট আন্দোলনকারী শিক্ষকদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা ওই দিনের হামলার মূল হোতার পাশাপাশি যারা জড়িত তাদের সবার বিচার দাবি করছি।’ একই সাথে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিও করেন তিনি।শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে এবং দোষীদের শাস্তির দাবিতে সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কর্মবিরিত পালন করেছে ফোরামটি। ফোরামের আহ্বায়ক আ ন ম জয়নাল আবেদীন এ তথ্য জানান। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের শাস্তি দাবি করেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে উপাচার্য ভবনের সামনে শিক্ষকদের প্রতীকী অনশনে গিয়ে তাদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন। এসময় শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দেন।সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত উপাচার্যের পদত্যাগ ও বিচারের দাবিতে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ শিক্ষক পরিষদের’ ব্যানারে শিক্ষকদের প্রতীকী অনশন চলে।বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী সায়েমা আফরিন বলেন, আমরা মনে করি শিক্ষকদের উপর হামলা একটি জঘন্য অপরাধ।এর দায় উপাচার্যকে নিতেই হবে।শনিবারের মধ্যে তাকে অপসারণ না করলে পরদিন থেকে আমরা কঠোর কর্মসূচি দেব।তবে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের এই মিছিল-সমাবেশের অনুমতি ছিল না বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক কামরুজ্জামান চৌধুরী।তিনি বলেন, এদের বিরুদ্ধে প্রক্টরিয়াল বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি দপ্তরের প্রধানরা।এদের মধ্যে রয়েছেন নিবন্ধক মুহাম্দ ইসফাকুল হোসেন, মহাবিদ্যালয় পরিদর্শক প্রদীপ কুমার বসাক, গ্রন্থাগারিক আব্দুল হাই ছামেনী, চিফ মেডিকেল অফিসার মাহবুবুর রহমান, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পরিচালক এম আকবর হোসেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. মুজিবুর রহমান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান, শারীরিক শিক্ষা দপ্তরের উপপরিচালক চৌধুরী সউজ বিন আম্বিয়া।শিক্ষকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে গত ১২এপ্রিল থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন সরকার সমর্থক শিক্ষকদের একটি অংশ।অন্যদিকে এ আন্দোলনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি ‘অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র’ আখ্যায়িত করে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুক্ত চিন্তার চর্চায় ঐক্যবদ্ধ শিক্ষকবৃন্দ ব্যানারে শিক্ষকদের আরেকটি অংশ উপাচার্যের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।