দৈনিকবার্তা-নাটোর, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ : নাটোরে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণের দাবি পূরণ না হওয়ায় মো. তানভীর (১১) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে ক্ষুর দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেছে তার তিন সহপাঠী। মঙ্গলবার শহরের আলাইপুর এলাকার আশরাফুল উলুম কওমী মাদ্রাসার পেছনের একটি সেপটি ট্যাংকি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে র্যাব-৫ অভিযুক্ত তিন সহপাঠীকে আটক করে। র্যাব-৫ ও স্থানীয়রা জানায়, শহরের হাফরাস্তা বড়গাছা এলাকার ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম তুষারের একমাত্র ছেলে মো. তানভীর আলাইপুর এলাকার আশরাফুল উলুম কওমী মাদ্রাসায় পড়ালেখা করত। গত ২৫ আগস্ট বিকেলে মাদ্রাসা থেকে বের হয়ে সহপাঠীদের নিয়ে সে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। পরে মোবাইল ফোনে তার বাবা সাইফুল ইসলামের কাছে তুষারের মুক্তির জন্য ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়। এ ব্যাপারে নিখোঁজ ছাত্রের বাবা নাটোর থানায় জিডি করেন ও র্যাব-৫কে জানান। পরে মোবাইল ট্র্যাকিং এর মাধ্যমে র্যাব গতকাল সোমবার ওই মাদ্রাসার দুই ছাত্র বায়েজিদ হাসান (১৪) ও হুমাইদ হোসেন (১৫) এবং ওই মাদ্রাসার সাবেক ছাত্র নাঈমকে (১৫) আটক করে। পরে তাদের দেয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার আলাইপুর এলাকার আশরাফুল উলুম কওমী মাদ্রাসার পেছনের একটি সেপটি ট্যাংকি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠান হয়।
আটক বায়েজিদ হাসান (১৪) বাগাতিপাড়া উপজেলার নওপাড়া গ্রামের বাবুল হাসানের পুত্র, হুমাইদ হোসেন (১৫) সিংড়া উপজেলার জোর মল্লিকা গ্রামের মোক্তার হোসেনের পুত্র এবং ওই মাদ্রাসার সাবেক ছাত্র মো. নাঈম (১৫) নাটোর শহরের কালুরমোড় এলাকার আব্দুর রহিমের পুত্র। র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব আলম জানান, আটক তিন কিশোর বিদেশি টিভি চ্যানেলের সিরিয়ালে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের ঘটনা দেখে উৎসাহিত হয়ে তানভীরকে অপহরণের পরিকল্পনা করে।
আটকের পর তারা জানায়, মাদ্রাসার পেছনের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে তানভীরকে কাপড় দিয়ে গলা বেঁধে ক্ষুর দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে। হত্যার পর লাশ তাদেরই মাদ্রাসার পেছনের একটি সেপটি ট্যাংকিতে ফেলে গুম করা হয়। তারা মোবাইল ফোনের নতুন সিম কিনে একটি দিয়ে বিকাশ একাউন্ট খোলে এবং অপরটি দিয়ে তানভীরের বাবার কাছে ৫লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে টানা ২২ ঘন্টার অভিযান চালিয়ে র্যাব হত্যাকান্ডে জড়িত তিনজনকে আটক এবং লাশ উদ্ধার করে।