khaleda-zia-Court_02

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩০ আগস্ট, ২০১৫: বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আবেদনের শুনানি শেষ হয়েছে। রায় দেওয়া হবে যেকোনো দিন।বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি আবদুর রবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ আবেদনের ওপর শুনানি শেষে রায় অপেক্ষমাণ রাখেন।আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও ব্যারিস্টার রগীব রউফ চৌধুরী। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন ভূইয়া।অন্যদিকে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।রাগীব রউফ চৌধুরী জানান,শুনানি শেষে যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করা হবে বলে আদেশ দিয়েছেন আদালত।বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ঠিকাদার নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্র“য়ারি খালেদা জিয়াসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় দুদক এ মামলাটি করে। পরে এ মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। শুনানির পর ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না জানতে চেয়ে রুল দেন এবং মামলার কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। পরে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ওই রুলের শুনানি করেন।

রুল শুনানিকালে এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন ও নিম্ন আদালতে মামলার নথি তলবের নির্দেশনা চেয়ে খালেদার করা দুটি আবেদন গত ২৩ অগাস্ট খারিজ করে দেয় আদালত।ওইদিন আদালত মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ৩০ অগাস্ট দিন ঠিক করে দেন। এর আগে দশ কার্যদিবস রুলের ওপর শুনানি হয়। খুরশীদ আলম পরে বলেন, রুলের ওপর শুনানি শেষে হয়েছে। আদালত রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রেখেছেন।রাগীব রউফ চৌধুরী বলেন, এখন যে কোনো দিন রায় ঘোষণা হতে পারে।বিগত সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্র“য়ারি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া এবং তার মন্ত্রিসভার ১০ সদস্যসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে খনি দুর্নীতির মামলা হয়। ওই বছর ৫ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দেয় দুদক।চীনা প্রতিষ্ঠান কনসোর্টিয়াম অফ চায়না ন্যাশনাল মেশিনারিজ ইম্পোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট কর্পোরেশনের (সিএমসি) সঙ্গে বড় পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি করার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয়েছে এ মামলায়।

খালেদা মামলাটি বাতিলের আবেদন করলে ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর হাই কোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে। মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও দেওয়া হয়। হাই কোর্টের ওই আদেশ আপিল বিভাগেও বহাল থাকায় আটকে যায় বিচার।সাত বছর পর চলতি বছরের শুরুতে দুদক মামলাটি সচল করার উদ্যোগ নিলে হাই কোর্টের দেওয়া রুলের চূড়ান্ত শুনানি শুরু হয়।এর আগে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার বৈধতা নিয়ে খালেদা জিয়ার করা দুটি রিট আবেদনের রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ৫ অগাস্ট হাই কোর্ট (রুল খারিজ) তা খারিজ করে রায় দেয়। সেইসঙ্গে মামলার কার্যক্রমের ওপর থেকে স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়া হয়।এই রায়ের অনুলিপি পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।এছাড়া নাইকো দুর্নীতি মামলা বাতিল চেয়ে করা খালেদা জিয়ার আবেদনেও একই রায় এসেছে। গত ১৮ জুন ওই রায়েও তাকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।