দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৬ আগস্ট ২০১৫: বাংলাদেশের পোশাক খাতের উন্নয়নে সহায়তা দিতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্র“তিবদ্ধ বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেনদেশটির রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট।বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে রাষ্ট্রদূত তার দেশের এই অঙ্গীকারের কথা জানান।প্রধানমন্ত্রীরপ্রেস সচিব ইহসানুল করিম পরে সাংবাদিকদের বলেন, আমেরিকার রাষ্ট্রদূত বলেছেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের উন্নয়নে তার দেশ অঙ্গীকারাবদ্ধ। তিনি বলেছেন, শর্ত পূরণের জন্য বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। আর যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতারা এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চায়, বলেন প্রেস সচিব।
জিএসপির প্রসঙ্গ উল্লেখ না করে বার্নিকাট বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বিষয়টি রাজনৈতিক নয় বলে মন্তব্য করেন।এ বিষয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যেন শর্তাবলী পূরণ করতে পারে, সে জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।বাংলাদেশের তৈরিপোশাক শিল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের অবস্থা সম্পর্কে তাদের দেশের ক্রেতারা জানতে চায় বলেও জানান বার্নিকাট।সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের অবস্থানের প্রশংসা করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।এ সময় তিনি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন।বঙ্গবন্ধু হত্যার দায়ে অভিযুক্ত রাশেদ চৌধুরীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বার্নিকাট বলেন, বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। এটি আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল।বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে স্থলসীমা চুক্তি সম্পাদন ও ছিটমহল সমস্যা সমাধান হওয়ার প্রশংসা করেন বার্নিকাট।
বিভিন্ন দেশে দায়িত্ব পালনরত বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের দায়িত্ব পালনেও সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তিরক্ষার পাশাপাশি বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের বিভিন্ন দেশে সামাজিক কাজে সম্পৃক্ত করার বিষয়টি উল্লেখ করেন। বৈশ্বিক সংঘাত কমাতে বিশ্বব্যাপী অস্ত্র উৎপাদন কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বাংলাদেশে কারখানার কর্মপরিবেশ নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে ২০১৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র তাদের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের জন্য অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) স্থগিত করে। ওই সুবিধা ফেরত পাওয়ার জন্য পরে বাংলাদেশকে ১৬টি শর্ত দেওয়া হয়।
এর মধ্যে অধিকাংশ পূরণ করে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিবেদনও দেওয়া হয়। কিন্তু সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ১২২টি দেশের পণ্যে জিএসপি সুবিধা নবায়ন করলেও ওই তালিকায় বাংলাদেশ আসেনি।এর প্রতিক্রিয়ায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছিলেন, শর্ত পূরণের পরও রাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশি পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র। বৈঠকে প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ও বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি নিয়েও আলোচনা হয়। প্রেস সচিব বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন বার্নিকাট। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ জাহাজ নির্মাণ ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পেও উন্নতি করছে।যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত বাংলাদেশিদের এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর অবস্থানের প্রশংসা করেন।অন্যদিকে মানবজাতিকে সন্ত্রাসের হাত থেকে রক্ষা করার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী অস্ত্র উৎপাদন কমানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।সাক্ষাৎকালে আরো উপস্থিত ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ ও মার্কিন দূতাবাসের উপপ্রধান ডেভিড মিল ।