দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ২৩ আগস্ট: আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর সাজা পুনর্বিবেচনার আবেদন করবে রাষ্ট্রপক্ষ রোববার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এ তথ্য জানান।মাহবুবে আলম বলেন, সাঈদীর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ের জন্য আমরা (রাষ্ট্রপক্ষ) অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে রিভিউ আবেদন করবো।ট্রাইব্যুনালের দেয়া ফাঁসির আদেশের পরিবর্তে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
উল্লেখ্য,গত বছরের ১৭সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া ফাঁসির আদেশের পরিবর্তে তাকে আমৃত্যু কারাদণ্ডদেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ যুদ্ধাপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে সাঈদীর আপিলের রায় ঘোষণা করেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে আপিল বিভাগ এ রায় ঘোষণা করেন।
১০, ১৬ ও ১৯ নম্বর অভিযোগের ভিত্তিতে সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়। ৭ নম্বর অভিযোগের ভিত্তিতে ১০ বছর এবং ৮ নম্বর অভিযোগের ভিত্তিতে ১২ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। অধিকাংশ বিচারকদের মতামতের ভিত্তিতে ৬, ১১ এবং ১৪ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেয়া হয়। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে দায়ের করা এক মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুন গ্রেফতার হন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। ওই বছরের ২ আগস্ট মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক দেখানো হয় তাকে। ২০১০ সালের ২১ জুলাই থেকে ২০১১ সালের ৩০ মে পর্যন্ত সম্পন্ন হয় তদন্ত কার্যক্রম। ২০১১ সালের ১১ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। ১৪ জুলাই সাঈদীর বিরুদ্ধে সে অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল।
২০১১ সালের ৩ অক্টোবর প্রথম ব্যক্তি হিসেবে সাঈদীর বিচার শুরু হয় ট্রাইব্যুনালে। প্রসিকিউশনের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয় ওই বছরের ৭ ডিসেম্বর। সাঈদীর বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ২৮ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল। অপরদিকে আসামিপক্ষে সাক্ষ্য দেন ১৭ জন।২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয় মামলাটি। এরপর ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্র“য়ারি সাঈদীর মামলায় রায় ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল-১। সাঈদীর বিরুদ্ধে ২০টির মধ্যে আটটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে মর্মে ট্রাইব্যুনাল রায়ে উল্লেখ করেন। এর মধ্যে দুটি অভিযোগে ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়, আর ছয়টিতে কোনো দণ্ড দেয়া হয়নি। প্রমাণিত না হওয়ায় বাকি ১২টি অভিযোগে ট্রাইব্যুনাল থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।